বিগ্রেডে নরেন্দ্র মোদীর ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ’ অনুষ্ঠান বানচাল করতে চক্রান্ত হিন্দু বিরোধী রাজ্য সরকারের !
৩ রাজ্যে বিপুল জয়ের পর এবার ব্রিগেডে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আগামী ২৪ ডিসেম্বর ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ’ কর্মসূচিতে তিনি যোগ দেবেন। । বিভিন্ন হিন্দু ধর্মীয় সংগঠনের যৌথ প্রয়াসে হলেও এই কর্মসূচির আয়োজক রাজ্য বিজেপি। কিন্তু ঘটনাচক্রে,এই গীতাপাঠ এর অনুষ্ঠান বানচাল করতে রাজ্য জুড়ে টেট (TET) পরীক্ষার তারিখ ১০ ডিসেম্বর পরিবর্তন করে ২৪ ডিসেম্বর করে দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ।রাজ্য সরকারের অদৃশ্য ইশারায় সোমবারই সেই ঘোষণা করা হয়েছে।
উলেখ্য প্রধানমন্ত্রী শহরে এলে মধ্য কলকাতা এলাকায় যান নিয়ন্ত্রণ হবে। কিন্তু তার চেয়েও উলেখযোগ্য বিষয় হলো ব্রিগেডে এক লক্ষ লোকের জমায়েত করতে গেলে কলকাতা শহর এবং লাগোয়া এলাকার রেল এবং যান চলাচলে তার প্রভাব পড়বে। ২৪ ডিসেম্বর রবিবার হওয়ায় নিত্যযাত্রীদের ভিড় থাকবে না ঠিকই। কিন্তু ওইদিন অর্থাৎ ২৪ ডিসেম্বর পরীক্ষার্থীরা বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে যাবেন। ব্রিগেডমুখী জনতার চাপ তাঁদের যাতায়াতে প্রভাব ফেলতে পারে। তবে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, টেট(TET) থাকলেও তাঁদের পক্ষে গীতাপাঠের অনুষ্ঠানের দিন বদল করা সম্ভব হবে না।ওই দিন পরীক্ষা থাকায় অনেকেই ইচ্ছা থাকলেও গীতাপাঠে যোগ দিতে পারবেন না।
সোমবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ জানিয়েছে, ১০ ডিসেম্বরের পরিবর্তে পরীক্ষা হবে ২৪ ডিসেম্বর। দিন পরিবর্তনের কোনও কারণ আনুষ্ঠানিক ভাবে জানানো হয়নি। বিজেপি শিবির মনে করছে, ‘রাজনীতি’ করার জন্যই পর্ষদ এ ভাবে পরীক্ষার দিন বদল করল। গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে ‘ব্যাঘাত’ ঘটাতেই পরীক্ষার দিন বদলের সিদ্ধান্ত বলেও দাবি করা হয়েছে।
গত ১৭ নভেম্বর বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বে সাধুসন্তেরা মোদীকে গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে আসেন। মোদী ওই অনুষ্ঠানে আসার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন বলেই উদ্যোক্তাদের তরফে দাবি করা হয়েছে। আয়োজকদের তরফে আরও জানানো হয়েছে, ওই অনুষ্ঠানে রাজ্যের সব সাংসদ, বিধায়ক এবং মুখ্যমন্ত্রীকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ।
কলকাতায় ব্রিগেডে গীতাপাঠের সমাবেশে আদৌ কোনও অসুবিধা হবে কি টেট(TET) পরীক্ষার্থীদের ? জবাবে বিজেপি নেতা তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ সোমবার বলেন, অসুবিধা তো হবেই! গীতাপাঠের কর্মসূচি তো শুধু বিজেপির নয়। রাজ্যের সনাতন ধর্মের মানুষের। পরীক্ষার দিন হওয়ায় অনেকেই গীতাপাঠে যোগ দিতে পারবেন না।
দিলীপ ঘোষের আরও বক্তব্য, এ রাজ্যের শাসকদল এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী যে সনাতন বিরোধী, তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। উনি নিজেই তাঁর নানা কাজকর্ম দিয়ে সেটা বুঝিয়ে দেন। পরীক্ষা পিছিয়ে একটি সনাতন কর্মসূচির দিনে ফেলা সেই মনোভাবেরই পরিচয়।
অন্যদিকে, তৃণমূল সূত্রের খবর, সোমবার মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, কলকাতায় গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। কিন্তু কারা ওই অনুষ্ঠান করছে, সে বিষয়ে তিনি খোঁজ নেবেন।
প্রসঙ্গত, গত বছর প্রায় সাড়ে ছ’লক্ষপরীক্ষার্থী টেট(TET) দিয়েছিলেন। কিন্তু এ বছর আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী শুধু মাত্র বিএলএড উত্তীর্ণেরাই পরীক্ষায় বসতে পারবেন। ফলে পরীক্ষার্থী অনেক কম। পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার পরীক্ষার্থীর সংখ্যাটা ৩ লাখ ১০ হাজারের কাছাকাছি। ওই দিন জেলার পরীক্ষার্থীরা জেলাতেই পরীক্ষা দেবেন।