জোর করে অথবা প্রতারণা করে ধর্মান্তরিত করলে এখন থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড! যোগী রাজ্যে বিল পাস হয়েছে।
জোর করে, ভুলিয়ে-ভালিয়ে, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে, বা ষড়যন্ত্র করে কোনও মহিলা, নাবালক, বা অন্য কাউকে ধর্মান্তরিত করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। উত্তর প্রদেশের লাভ জিহাদ বিরোধী আইন আরও কঠোর হয়েছে, যার আনুষ্ঠানিক নাম হল ‘উত্তর প্রদেশ বেআইনি ধর্মান্তকরণ প্রতিরোধ আইন’। সোমবার রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী সুরেশ খান্না বিধানসভায় এই আইনের সংশোধনী বিল পেশ করেন। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) উত্তর প্রদেশ বিধানসভায় উত্তর প্রদেশ বেআইনি ধর্মান্তকরণ প্রতিরোধ আইন (সংশোধনী) ২০২৪ পাশ হয়। এই সংশোধনী বিলে শাস্তির বিধান আরও কঠোর করা হয়েছে, এবং দোষী প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হতে পারে।
সংশোধিত আইন অনুসারে, যদি কেউ হুমকি, আক্রমণ, বিয়ে, বা বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে, অথবা ষড়যন্ত্র করে বা পাচার করে কোনও মহিলা, নাবালক, বা অন্য কাউকে ধর্মান্তরিত করে, তাকে এই আইনের আওতায় সর্বাধিক গুরুতর অপরাধী হিসেবে বিবেচিত হবে। সংশোধিত বিধি মোতাবেক, এই ধরনের অপরাধের জন্য ২০ বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড নির্ধারিত হয়েছে। পূর্বে, এই অপরাধে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ড এবং ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা নির্ধারিত ছিল।
সংশোধিত বিলে এফআইআর নথিভুক্তির নিয়ম পরিবর্তন করা হয়েছে। পূর্বে, এই ধরনের মামলায় অভিযোগ নথিভুক্তির জন্য নির্যাতিত বা তার পরিবারের কারো উপস্থিতি প্রয়োজন ছিল। এখন, সংশোধিত বিল অনুযায়ী, ধর্মান্তরের অভিযোগে যে কোনও ব্যক্তি এফআইআর দায়ের করতে পারবেন, তিনি যদি নির্যাতিতের আত্মীয় না-ও হন। এছাড়া, এই আইনের অধীনে সমস্ত অপরাধ জামিন অযোগ্য এবং দায়রা আদালতের নীচে কোনও আদালতে এই মামলার শুনানি হবে না। সরকার পক্ষের আইনজীবী তাঁর যুক্তি পেশ করার আগে অভিযুক্তের জামিনের আবেদন বিচার করা হবে না।
বিরোধীরা উত্তর প্রদেশ সরকারের এই সংশোধনী আনার প্রেক্ষিতে সমালোচনা করেছে। তাদের মতে, সাম্প্রদায়িক রাজনীতির মাধ্যমে যোগী সরকার মূল সমস্যাগুলো থেকে জনগণের মনোযোগ সরানোর চেষ্টা করছে। সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব সংসদের বাইরে বলেন, “তাদের কাছে আর কী আছে? তারা কিছু নতুন করছে না, তাই বলার মতো নতুন কিছু নেই।” উল্লেখ্য, ২০২০ সালের নভেম্বরে লাভ জিহাদ বিরোধী আইন প্রণয়নের জন্য একটি অধ্যাদেশ জারি করেছিল যোগী আদিত্যনাথের সরকার। পরবর্তীতে, উত্তর প্রদেশ বিধানসভার দুই কক্ষে বিলটি পাস হয় এবং ২০২১-এ বেআইনি ধর্মান্তর প্রতিরোধ আইন কার্যকর হয়।