মৃত ২৯ জনের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিয়ে ডাক্তারদের ভিলেন বানানোর চেষ্টা মমতা ব্যানার্জীর !
জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির ফলে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত বিনা চিকিৎসায় ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এমনটাই দাবি করেছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করলেন, ওই ২৯ জনের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
শুক্রবার মমতা বলেছেন, ‘‘জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির ফলে স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। তার ফলে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক। মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে রাজ্য সরকার দু’লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করছে। ২৯ জন মৃতের পরিবারকে ওই টাকা দেওয়া হবে।’’
প্রসঙ্গত, এক মহিলা চিকিৎসকের খুন ও ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে জুনিয়র ডাক্তাররা গত এক মাস ধরে আন্দোলন করছেন। তারা রাজ্য জুড়ে কর্মবিরতি পালন করে চলেছেন। বর্তমানে তারা সল্টলেকের স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্না দিয়েছেন। আজ শুক্রবার সেই ধর্নার চতুর্থ দিন। রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ ও সরকারি হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা এই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন।
রাজ্যের অভিযোগ অনুযায়ী, ডাক্তারদের কর্মবিরতির কারণে অনেক মানুষ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পাচ্ছেন না, এবং অনেকে বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন। রাজ্যের হিসাব অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা ২৯। অন্যদিকে, আন্দোলনরত ডাক্তারেরা এই দাবি নাকচ করে দিয়েছেন, তাঁদের মতে কোনও হাসপাতালেই চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হয়নি এবং সিনিয়র চিকিৎসকেরা পরিষেবা দিচ্ছেন, বাড়তি পরিশ্রম করে। তাঁরা দাবি করেন, কোথাও রোগীকে বিনা চিকিৎসায় ফিরে যেতে হয়নি। জুনিয়র ডাক্তারদের পাল্টা যুক্তি হল, রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার দুর্বল অবস্থার কারণে প্রতিদিন অনেক মানুষ উপযুক্ত চিকিৎসা না পেয়ে মারা যান, এবং সেই ব্যর্থতা ঢাকতে রাজ্য সরকার ডাক্তারদের কর্মবিরতিকে দোষারোপ করছে।
ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে উদ্ভূত অচলাবস্থা নিরসনে বৃহস্পতিবার তাঁদের প্রতিনিধিদের নবান্নে আহ্বান করা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর সাথে তাঁদের বৈঠক প্রস্তাবিত ছিল। মমতা দু’ঘণ্টারও অধিক সময় নবান্নের সভাঘরে অপেক্ষা করেন, কিন্তু বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়নি। রাজ্য জানিয়েছিল যে ডাক্তারদের ১৫ জন প্রতিনিধি বৈঠকে অংশ নিতে পারবেন। জুনিয়র ডাক্তারেরা ৩২ জন উপস্থিত হন। তাঁদের দাবি ছিল বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার করা হোক, যা নবান্ন মেনে নেয়নি। বৈঠক বাতিল হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠক করেন এবং জানান যে সুপ্রিম কোর্টে মামলা বিচারাধীন থাকায় সরাসরি সম্প্রচার অসম্ভব। তবে তিনি বৈঠক হওয়ার আশা করেছিলেন এবং ডাক্তারদের ক্ষমা করে দেওয়ার কথা জানান। তিন দিন ধরে সমস্যা সমাধান না হওয়ায় বাংলার মানুষের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।