পুরুষত্ব কমে যাওয়ার কারণ কী ও তার প্রতিকার,জেনে নিন
পুরুষত্ব কমে যাওয়ার ফলে হারাচ্ছেন নিজেদের পৌরুষত্ব। শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক মর্যাদার দিক দিয়ে নিজেদের পূর্ব অবস্থান হারিয়ে ফেলছেন পুরুষেরা। কিন্তু কেন ঘটছে এমনটা?
পুরুষদের প্রাণই হচ্ছে টেস্টোস্টেরন হরমোন। যাইহোক ৩৫ বছর পরে থেকে টেস্টোস্টেরন হরমোন কমতে শুরু করে।এছাড়াও অল্প বয়স থেকে হস্তমৈথুন, অতিরিক্ত সেক্স এর কারণে টেস্টোস্টেরন হরমোনের কিছুটা ঘাটতি হয়।
টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমে যাওয়ার বিশেষ কিছু কারণ থাকে। চলুন জেনে নেই কী কী কারণে এ হরমোন কমে যেতে পারে।
- অণ্ডকোষের সংক্রমণ
- ক্যান্সারের জন্য কেমোথেরাপি
- বিপাকীয় ব্যাধি যেমন, শরীরে আয়রনের পরিমাণ বেড়ে গেলে
- পিটুইটারি গ্রন্থির কর্মহীনতা বা টিউমার
- তীব্র বা দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা
- অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান
- যকৃতের পচন রোগ
- এইচআইভি/এইডস
- প্রোল্যাক্টিন হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি
- হঠাৎ স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজন হ্রাস
- অনিয়ন্ত্রিত মাত্রায় টাইপ ২ ডায়াবেটিস
- আদর্শ খাবার গ্রহণ না করা
- অতিরিক্ত পড়পড়াশুনা বা অনলাইন আসক্তির জন্য অলস সময় পার করা
- জন্মগত ত্রুটি
টেস্টোস্টেরন হরমোনের সল্পতার কারণে আরও যে অসুবিধাগুলো হয়,সেগুলো হলো
- দ্রুত পতন।
- পুরুষাঙ্গ সহজেই দাঁড়াতে চায় না।
- একবার বীর্যপাত ঘটলেই লিঙ্গ নিস্তেজ হয়ে যাওয়া।
- সেক্স করতে অনীহা আসে।
- লিঙ্গ বৃদ্ধি হয় না।
টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি করা যায় ৩ ভাবে। আসুন জেনে নেয়া যাক :
১। সঠিক খাদ্যাভাস:
আমরা নিয়মিত খাদ্য গ্রহণ করি। সেখানে থেকে যেই পরিমাণে টেস্টোস্টেরন হরমোনের উপাদান পাই, তার চেয়ে বেশি নষ্ট করি বিভিন্ন ভাবে। ফলে এর ঘাটতি পূরণ হতে অনেক সময় নেয়। যদিও কিছু ভেজস পাওয়া যায় যেগুলো কিছুটা ভালো কাজ করে। কিন্তু সময় সাপেক্ষ।
মধু
মধুতে আছে প্রাকৃতিক নিরাময়কারী উপাদান বোরোন। এই খনিজ উপাদান টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ বাড়াতে এবং নাইট্রিক অক্সাইডের মাত্রা ঠিক রাখে। যা ধমনী সম্প্রসারণ করে লিঙ্গোত্থানে শক্তি সঞ্চার করে।
বাঁধাকপি
এই সবজিতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। আরও আছে ইনডোল থ্রি-কার্বিনল। এই উপাদান স্ত্রী হরমোন ওয়েস্ট্রজেনের পরিমাণ কমিয়ে টেস্টোস্টেরন বেশি কার্যকর করে তোলে।
রসুন
রসুনের আলিসিন যৌগ মানসিক চাপের হরমোন করটিসলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ফলে টেস্টোস্টেরন ভালোমতো কাজ করে। ভালো ফল পেতে রসুন কাঁচা খাওয়ার অভ্যেস করুন।
ডিম
ডিমে আছে স্যাচারেইটেড ফ্যাট, ওমেগা থ্রিএস, ভিটামিন ডি, কলেস্টেরল এবং প্রোটিন। টেস্টোস্টেরন হরমোন তৈরির জন্য এই উপাদানগুলো জরুরি।
কলা
এই ফলের ব্রোমেলেইন এনজাইম টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। আর দীর্ঘ সময় ধরে শক্তি সরবরাহের উৎস হিসেবে কাজ করে।
কাঠবাদাম
নারী এবং পুরুষ উভয়ের ‘সেক্স ড্রাইভ’য়ের জন্য প্রতিদিন এক মুঠ কাঠবাদাম যথেষ্ট। এই বাদামে রয়েছে জিঙ্ক যা টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়ায় আর কামবাসনা বৃদ্ধি করে।
কালোজিরা:
মাংস
বিশ্বাস করা হয় যারা একেবারেই মাংস খান না তাদের শরীরে টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ কম থাকে। রেড মিট (Red meat) যেমন, গরুর মাংস, খাসির মাংস, মাছ এগুলো টেস্টোস্টেরন তৈরীতে সহায়তা করে৷ তবে অতিরিক্ত মাংস খাওয়ার আগে সাবধান।
পালংশাক
এটা প্রমাণিত যে, ওয়েস্ট্রজেনের মাত্রা কমাতে পারে এই শাক। তাছাড়া আছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন সি এবং ই। আর এসবই টেস্টোস্টেরন তৈরির উপাদান।
আঙুর
হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন একথোক লাল আঙুর খাওয়া গেলে টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, শুক্রাণুর তৎপতরতা উন্নত করে আর শক্তিশালী করে।
ডালিম
ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ইম্পোটেন্স রিসার্চ থেকে জানা যায় যৌন কর্মে অক্ষম পুরুষদের মধ্যে ৪৭ শতাংশ যারা প্রতিদিন ডালিমের রস খেয়ে থাকেন তাদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে।
২.লাইফস্টাইল (Lifestyle) পরিবর্তন :
দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ পরিহার করা:
বদ অভ্যাস যেমন সিগারেট, মদ, অথবা অন্য যেকোনো ধরণের নেশা পরিহার করা:
যৌনমিলন:
হস্তমৈথুন ও অত্যাধিক যৌনমিলন পরিহার:
পর্ণোগ্রাফি, যৌন-উত্তেজনাকর দৃশ্য দেখা হতে বিরত থাকা:
৩। চিকিৎসা গ্রহণ করা:
টেস্টোস্টেরন থেরাপী (Testosterone therapy): যদি কারো শরীরে এই হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিকএর তুলনায় কম থাকে, তবে ওষুধের মাধ্যমে শরীরে হরমোন সরবারহ করে টেস্টোস্টেরন এর পরিমাণ বাড়ানো যায়৷ তবে এর বেশকিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে ৷