সম্পর্কের ক্ষেত্রে যৌনতার অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে। সম্পর্কের উষ্ণতা বাড়ানো ছাড়াও শরীর ও মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে যৌনতা।প্রেমের সম্পর্কে মনের চাহিদার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে শারীরিক চাহিদাও (Sexual Needs)।
সহজ ভাবে বলতে গেলে, ভালবাসায় শরীর এবং মন- দুইই মেলা জরুরি। আবার অনেকেই এক সঙ্গীতে তুষ্ট থাকতে পারেন না। তাঁরা একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে যৌন সম্পর্ক উপভোগ করতে চান। তাই অনেক সময় তাঁরা জড়িয়ে পড়েন পরকীয়ায়। কেউ কেউ আবার সম্পর্কে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ না-হয়েও শুধুমাত্র শরীরী খেলাতেই মেতে উঠতে চান। ফলে তাঁরা বেছে নেন একাধিক সঙ্গী।
কিন্তু সবথেকে বড় যে প্রশ্নটা আসে, সেটা হল- একাধিক সঙ্গীর (Multiple Sexual Partner)সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করার বিষয়টা কি ঠিক কিংবা স্বাস্থ্যকর? তবে এই প্রশ্ন মনে জাগলেও খোলামেলা আলোচনা করতে পারেন না অনেকেই। তাই আজ আমরা আলোচনা করে নেব এই বিষয়ের উপরেই। প্রথমেই একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে যৌনতা বিষয়টা আদতে কী, সেই সম্পর্কে আলোচনা করা যাক। ২০১৮ সালের একটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে যে, একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোনও ব্যক্তি যদি একের বেশি সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেন, তাহলে সেই বিষয়টাকেই একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে যৌনতা হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। অর্থাৎ একই সময়ের পরিধিতে এক জনের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের একদম পরেই আবার অন্য সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন হলেই সেই বিষয়টা একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে যৌনতা হিসেবে গণ্য হবে। এই প্রতিবেদনে একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে যৌনতা সম্পর্কিত কিছু ঝুঁকি এবং কিছু উপকারিতার বিষয়েও আলোচনা করা হবে
গড়ে কত জন যৌনসঙ্গী?
গবেষকদের মতে, জীবনের একটা পর্যায়ে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে যৌনসঙ্গীর সংখ্যাও। তবে পুরুষরা ৬০ বছর বয়স পেরিয়ে গেলে যৌনসঙ্গীর সংখ্যাও কমেছে। আর মহিলারা ৪০ পার করার পরেই তাঁদের যৌনসঙ্গীর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে।
এতো গবেষণার পরেও সব থেকে বড় যে প্রশ্নটা মনে আসে, তা হল- একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করা কি ঠিক? এর উত্তর হবে, হ্যাঁ ব্যাপারটা ঠিক। এতে কোনও সমস্যাই নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-র বিশ্বস্ত সূত্র যৌন স্বাস্থ্য সম্পর্কে যে বিশ্লেষণ দিয়েছে, তা হল: যৌনক্রিয়া শারীরিক, মানসিক, আবেগের এবং সামাজিক ভাবে ভালো থাকাটাই গুরুত্বপূর্ণ ৷ নিরাপদ যৌন সম্পর্ক এবং আনন্দদায়ক যৌন অভিজ্ঞতার সম্ভাবনা ৷যৌনতার প্রতি একটা ইতিবাচক ও সম্মানজনক দৃষ্টিভঙ্গী ৷
২০২১ সালের গবেষণার রিপোর্ট অনুযায়ী যৌনক্রিয়ার উপকারিতা:
যৌনতার ফলে অক্সিটোসিন নিঃসরণ ঘটে। স্ট্রেস বা মানসিক চাপ, উত্তেজনার মতো সমস্যা দূরীকরণে দারুণ প্রভাব রয়েছে এই হরমোনের। কর্টিসল নামের এক হরমোনের সঙ্গে মানসিক চাপের যোগ রয়েছে। উচ্চ মাত্রায় কর্টিসল নিঃসরণ হলে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, যৌন উদ্দীপনা বা যৌন উত্তেজনার কারণে এই কর্টিসল হরমোনের মাত্রা হ্রাস হয়েছে। যৌনক্রিয়াকে শারীরিক কসরত হিসেবেও অনেক সময় গণ্য করা হয়ে থাকে। যার ফলে কার্ডিওভাসক্যুলার এবং সেরিব্রোভাসক্যুলার স্বাস্থ্যেও উন্নতি ঘটে।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যৌনক্রিয়ার ফলে পুরুষদের আয়ু বেড়েছে। কারণ এর কারণে মারণ রোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। এছাড়াও জীবনের সন্তুষ্টি এবং আনন্দের উপরও দারুণ ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে যৌনক্রিয়ার। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যৌনক্রিয়া কম হলে মৃত্যু এবং অসুস্থতার হার বেড়ে যায়। আর এক্ষেত্রে সঙ্গী একাধিক হলে যৌনতার ক্ষেত্রে পরিপূর্ণতা, সন্তুষ্টি এবং আনন্দ তো আসেই, সেই সঙ্গে একঘেয়েমিও কাটানো যায়। এছাড়াও এনডরফিন হরমোনের নিঃসরণের পরিমাণ বেড়ে যায়, যা ক্যানসার সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
যৌনক্রিয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা: