সরস্বতী পুজো (Saraswati Puja) হওয়া নিয়ে একেবারে দিকে দিকে নজিরবিহীন পরিস্থিতি! বিভিন্ন জায়গা থেকে অশান্তির খবর পাওয়া যাচ্ছে। মমতা ব্যানার্জীর শাসন ব্যবস্থায় পশ্চিমবঙ্গ যেন হয়ে উঠেছে দ্বিতীয় বাংলাদেশ।অসহায় হিন্দুদের পুজো চলছে পুলিশি পাহাড়ায়। এমনকি আজ সোমবার সকাল থেকেও কলকাতার যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজের সামনে কড়া পুলিশের পাহাড়া। এর মধ্য চলছে সরস্বতী পুজো।
অশান্তি এড়াতে বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বাংলার বুকে এমন ছবি আসতেই শাসক দলকে আক্রমণ করছে বিরোধীরা। এমনকি, বাংলাদেশের পরিস্থিতির সঙ্গেও তুলনা করা হচ্ছে।
নন্দীগ্রামের সীতানন্দ কলেজে পুজো হচ্ছে পুলিশের পাহাড়ায়। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং এবিভিপির মধ্যে সংঘাতের কারণে পরিস্থিত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, ফলে মণ্ডপ ছেড়ে চলে যান পুরোহিত। পুজোর সংকল্প কে করবে তা নিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং এবিভিপির মধ্যে তীব্র সংঘাত তৈরি হয়। এরপর বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। জানা যায়, আগেই কলেজ অধ্যক্ষের মধ্যস্থতায় একটি বৈঠক হয় যেখানে ঠিক হয় যে কলেজ একজন ছাত্র পুজোর সংকল্প করবে। কিন্তু তাকে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করে এবিভিপি। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে পুজোর সামগ্ৰী তালাবদ্ধ করার অভিযোগ তোলে এবিভিপি। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবিভিপির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনে। এই পরিস্থিতিতে পুজোর সময় পেরিয়ে যায় এবং পুরোহিত চলে যান।
- আরও পড়ুন – খোদ কোলকাতায় পুলিশ পাহারায় সরস্বতী পুজোর নির্দেশ হাইকোর্টের! !মমতার আশীর্বাদে কোলকাতা হয়েছে কাবুল !
যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে হরিণঘাটাতেও। সেখানেও পুজোকে কেন্দ্র করে তীব্র ঝামেলা দেখা যায়। জানা যায়, হরিণঘাটা দাসপোলডাঙা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবার সরস্বতী পুজো করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কোনো বছর ওই স্কুলে পুজো হয় না, কিন্তু এবার পুজো করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই খবর পাওয়া মাত্র স্থানীয় তৃণমূল নেতারা চড়াও হন বলে অভিযোগ। পুজো করা যাবে না বলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে হুমকি দেওয়া হয়। এমনকি বদলি করে দেওয়া হবে বলেও অভিযোগ ওঠে।
এরেই আজ সোমবার সেই স্কুল বাইরে বিশ পুলিশ বাহিনীকে দেখা।কি র্যাফও নামানো হয়। শুধু তাই নয়, হরিণঘাটার বিডিও মহর্ষিতা বিশ্বাসও ছুটে যান। কার্যত কড়া নিরাপত্তার মোড়কে পুজো হয়। তবে সমস্যা একটা ছিল, তা মেনে নিয়েছেন স্থানীয় বিডিও।
তুলকালাম বোলপুর শহরের নিচুবাঁধগোড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। স্কুলের সদর দরজার বাইরে মূর্তি এনে পুজো করলেন পড়ুয়া থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বোলপুরের ১৬ নং ওয়ার্ডের নিচুবাঁধগোড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বয়স ৪৯ বছর। গত ৪৮ বছর ধরে রীতিনীতি মেনে ওই স্কুলে পুজো হয়ে আসছে এবার সেই পুজো স্কুলের উদ্যোগে হয়নি। কারণ হিসেবে জানা গিয়েছে, প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম অসুস্থ থাকায় ছুটিতে ছিলেন। স্কুলে আরও পাঁচজন শিক্ষক ছিলেন। তাঁরাও এবার ওই পুজো করার জন্য উদ্যোগী হননি। সেক্ষেত্রে এবার স্কুলের তরফে কোনও পুজোর আয়োজন হয়নি। নিরাপত্তার খাতিরে বোলপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনার চেষ্টা করে।
এদিকে নদীয়া জেলার চাপড়ার কলিঙ্গ এলাকায় মা সরস্বতীর মূর্তি ভাঙা হয়েছে।আবার হুগলী জেলার বলাই বেড়িয়া স্কুলে সরস্বতী পুজো বন্ধ স্থানীয় মুসলিম শ্রেণীর জনগোষ্ঠীর আপত্তির কারণে।
মুসলিম তোষণকারী মমতা ব্যানার্জীর শাসন ব্যবস্থায় এটা সরাসরি হিন্দু আস্থার ওপর আঘাত। মায়ের আরাধনা আমাদের সংস্কৃতির অঙ্গ ও ছাত্র জীবনে বেড়ে ওঠার সঙ্গে অষ্টেপৃষ্ঠে জড়িত। পশ্চিমবঙ্গ যে বাংলাদেশে পরিণত হয়ে গিয়েছে এটা কি বুঝবে না এখানকার হিন্দুরা। এবার অন্তত হিন্দুরা কি জেগে উঠবে?