গরুপাচার ও আর্থিক তছরুপের মামলায় বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল-সহ তাঁর পরিবারের ৩৬টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করল এনফোমেন্ট ডিরেক্টরেট। ওই অ্যাকাউন্টগুলি থেকে মোট ২৫ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বিবৃতি দিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত এই মামলায় মোট ৫১ কোটি ১৩ লক্ষ টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভারত থেকে বাংলাদেশে গরুপাচার মাম তদন্তে নেমেছিল সিবিআই। বিএসএফের প্রাক্তন কর্তা সতীশ শর্মা, গরুপারে অভিযুক্ত এনামুল হক, অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষ সায়গল হোসেনকে ওই মামলায় গ্রেফতার করেছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। ধৃতদের জেরা করে ২০২২ সালের১১ অগস্ট বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়ি থেকে বীরভূমে তণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই|
তদন্তে নেমে ব্যাপক আর্থিক তছরুপের হদিশ পান তদন্তকারীারেরা ৷ এরপরেই ২০০২ সালের পিএমএলএ অ্যাক্টে গরুপাচার মামলায় আর্থিক তছরুপ অভিযোগ তদন্ত শুরু করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তদন্তের স্বার্থে অনুব্রত মন্ডলকে হেফাজতে নিয়েছিল ইডি।
২০২৩ সালে তদন্তকারী অফিসাররা তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলকেও গ্রেফতার করেন। যদিও একে একে ধৃতরা জামিন পান। শেষমেশ দিল্লি রাউস অ্যাভিনিউ আদালতের নির্দেশে গত বছরের ২০ জুলাই অনুব্রত মণ্ডলও জামিনে মুক্তি পান। তবে এই মামলায় ইতিমধ্যে ইডি অনুব্রত মণ্ডলের বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে।

ইডি সূত্রে খবর, তদন্তে অনুব্রত মণ্ডলের মোট ৪৮ কোটি ৬ লক্ষ টাকার তছরুপের নথি পেয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। শুধু অনুব্রত মণ্ডল নয়, তাঁর পরিবারের লোকজনের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলেরও সম্পত্তি রয়েছে। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত এই মামলায় মোট ৫১ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। জানা গিয়েছে, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের টাকা ছাড়াও, অনুব্রতর চাল কল এবং জমিও এই বাজেয়াপ্তর তালিকায় রয়েছে।
উল্লেখযোগ্য যে, ২ বছর পর জামিন পেয়ে বীরভূমে ফিরে আবার সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। বর্তমানে কেষ্ট-কাজল ঠান্ডা লড়াইয়ে সরগরম বীরভূমের দলীয় রাজনীতি। এই সময় অনুব্রতর বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি বাজেয়াপ্তর খবরে ব্যাপক চর্চা শুরু। বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ঘটনার প্রভাব রাজনীতির ময়দানে পড়বে কি না, তা এখন দেখার বিষয়।