দুবাইয়ের মাঠে ভারত তাদের দাপট দেখিয়েছে। বোলিং, ব্যাটিং, ফিল্ডিং, এই তিনটি বিভাগেই পাকিস্তানকে টেক্কা দিয়েছে তারা। ম্যাচের নায়ক হয়েছেন বিরাট কোহলি। সেই কোহলি, যিনি কয়েক দিন আগেও সমালোচিত হচ্ছিলেন। ব্যাটে রান ছিল না। কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলতে নামলেই যেন জ্বলে ওঠেন কোহলি। ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মেলবোর্নে একার ব্যাটে ভারতকে জয়ী করেছিলেন। তিন বছর পর দুবাইয়ের মাঠেও সেটাই দেখা গেল। দলকে জয় করে মাঠ ছেড়েছেন। কোহলির শতরানের অপেক্ষায় ছিল গোটা দেশ। তবে সাজঘর ছিল নিশ্চিন্ত। পাকিস্তানকে হারিয়ে সেই কথাই বললেন রোহিত শর্মা।
২০১২ এশিয়া কাপে ১৮৩ রান। ২০১৫ এক দিনের বিশ্বকাপে ১০৭ রান। ২০২৩ এশিয়া কাপে ১২২ রান। ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অপরাজিত ১০০ রান। এর সাথে টি-টোয়েন্টিতে অসংখ্য স্মরণীয় ইনিংস।
তিনি সত্যিই আছেন। তিনি নিশ্চিতভাবেই আছেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত খেলতে নামবে আর তাঁর ব্যাটে রান দেখা যাবে না, এমন খুব কমই হয়েছে। ফর্ম, অবসর, শেষ আইসিসি প্রতিযোগিতা ইত্যাদি যাবতীয় আলোচনা ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে বিরাট কোহলি আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন, তিনি ফুরিয়ে যাননি। তিনি আছেন। আর বিপক্ষের নাম পাকিস্তান হলে, আরও বেশি করে আছেন।
শুধু জেতালেন বললে ভুল বলা হবে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যে ভাবে কর্তৃত্ব নিয়ে তিনি খেলেছেন, তাতে পাকিস্তান মাথা তোলার কোনও সুযোগই পায়নি। এক দিনের ক্রিকেটে তাঁর ৫১টি শতরান হয়ে গেল। সব মিলিয়ে ৮২টি। সঙ্গে ১৪ হাজার রানে পৌঁছনোর বিশ্বরেকর্ড তো রয়েছেই।

একটি দিক থেকে অবশ্যই মিল রয়েছে শচিন ও কোহলির মধ্যে। শচিন পেশোয়ারে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৪ হাজার রান পূর্ণ করেছিলেন। কোহলিও সেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধেই এই কীর্তি অর্জন করলেন। বিশ্বের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ১৪ হাজার রান করলেন কোহলি। শচিন ও সাঙ্গাকারার পরে সেই মাইলফলকে পৌঁছলেন কোহলি।
কোহলির আলাদা করে প্রশংসা করলেও রোহিতের গলায় শোনা গিয়েছে দলগত জয়ের কথা। প্রথমে বল করে পাকিস্তানকে ২৪১ রানে আটকে রাখার জন্য দলের বোলারদের প্রশংসা করেছেন রোহিত। ভারত অধিনায়ক বলেন, “আমরা দুর্দান্ত বল করেছি জানতাম, উইকেট মন্থর। কিন্তু আমাদের ব্যাটিং আক্রমণের পক্ষে ২৪১ রান কঠিন ছিল না। তার জন্য কুলদীপ যাদব, অক্ষর পটেল ও রবীন্দ্র জাডেজার কৃতিত্ব অনেক বেশি। তবে মহম্ম শামি, হার্দিক পাণ্ড্য ও হর্ষিতাকে ভুললে চলবে না। এই জয় দলের সকলের জয়।”
কোহলি নিজে যে এসব পাত্তা দেন না, তা তিনি ম্যাচের পর পরিষ্কার করে দিয়েছেন। তার সাফ কথা, “আমি আমার খেলার ধরন জানি। তাই বাইরের কোনও আওাজ শুনি না। নিজের মতো থাকি, নিজের শক্তি এবং চিন্তার খেয়াল রাখি। প্রত্যাশার চাপে মাথা ঘুরে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক। তাই আমি বর্তমানে বাঁচতে ভালোবাসি এবং প্রতিটি সুযোগে দলের জন্য কিছু করতে চাই। প্রতিটি বলে ১০০ শতাংশয়ার আমার লক্ষ্য।”