চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি চলাকালীন পাকিস্তানে বিদেশি অতিথিদের অপহরণের পরিকল্পনা করেছে জঙ্গিরা। সূত্রের খবর অনুযায়ী, পাক গোয়েন্দাদের কাছে এমন তথ্য পৌঁছেছে। ২৯ বছর পর পাকিস্তানে কোনো আইসিসি প্রতিযোগিতা হচ্ছে। ভারত ছাড়া বাকি ছয়টি দেশ সেখানে খেলতে গিয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। নিজের খেলা দেখতে গিয়েছেন অনেক বিদেশি সমর্থক। তাদের অপহরণের পরিকল্পনা করেছে পাকিস্তানের জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট খোরাসান প্রভিন্স (আইএসকেপি)। পাকিস্তানের সরকারকে এমনটাই জানিয়েছে সে দেশের গোয়েন্দা বিভাগ। ফলে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে গোটা দেশে।
গোয়েন্দা বিভাগের রিপোর্টে জানানো হয়েছে যে পাকিস্তানের যে তিন শহরে খেলা হচ্ছে, সেই লাহোর, করাচি ও রাওয়ালপিন্ডি থেকে কিছুটা দূরে বাড়ি ভাড়া করেছে জঙ্গিরা। সেই সব এলাকায় সিসি ক্যামেরা বিশেষ নেই। অপহরণ করে যাতে সেখানে লুকিয়ে রাখা যায়, সেই উদ্দেশ্যেই এই সিদ্ধান্ত। সেই সব এলাকায় মোটরবাইক বা রিকশা ছাড়া যাতায়াতের কোনও মাধ্যমও নেই। ফলে সেখানে লুকিয়ে রাখতে সুবিধা হবে বলে মনে করছেন পাক গোয়েন্দারা।
শহরের বাইরের দিকে বাড়ি ভাড়া নেওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে, পুলিশ ও নিরাপত্তারক্ষীদের থেকে দূরে থাকা। তারা বিদেশি নাগরিকদের অপহরণ করে মুক্তিপণ চাওয়ার পরিকল্পনা করেছে। এই খবর পাওয়ার পরেই নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে। শুধু স্টেডিয়াম ও ক্রিকেটারদের হোটেল নয়, যেসব হোটেলে বিদেশি নাগরিকরা রয়েছেন সেখানেও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। খেলা দেখতে যাওয়া ও হোটেলে ফেরার সময় দর্শকদের নিরাপত্তা দেয়া হবে। এমনকি, খেলা যখন হবে না, তখনও নিরাপত্তা কড়াকড়িভাবে বজায় থাকবে। হোটেল থেকে বিদেশি নাগরিকদের দরকার ছাড়া বাইরে যাওয়া নিষেধ করা হয়েছে।
শুধু পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থাই নয়, অপহরণের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে আফগানিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থাও। তারা সমস্ত তথ্য পাকিস্তান সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি চলালীন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।
পাকিস্তানে বিদেশি নাগরিক ও ক্রিকেটারদের উপর জঙ্গি হামলার ইতিহাস দীর্ঘদিনের। ২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কার টিম বাসে জঙ্গি হামলা হয়েছিল, যেখানে কয়েকজন ক্রিকেটার আহত এবং কিছু নিরাপত্তারী নিহত হয়েছিলেন। এই ঘটনার পর বহু বছর পাকিস্তানে খেলতে যায়নি কোনও বিদেশি দল। ধীরে ধীরে সেখানে ক্রিকেট ফিরেছে, এবং পাক সরকার আর হামলার ঘটনা চায় না।