ট্রাম্প অবৈধদের ফেরত পাঠাতে পারলে মোদী কেনো পারছেন না ! বাংলাদেশি অবৈধ অভিবাসী নিয়ে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের!

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি ভারতীয় অবৈধ বাসিন্দাদের প্লেনে তুলে নিজেদের দেশে ফেরত পাঠাতে পারেন, তাহলে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের একই পদক্ষেপ নিতে অসুবিধা কোথায়? অসম ট্রানজিট ক্যাম্পে আটক ৬৩ জন বাংলাদেশি নাগরিকের প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে শুক্রবার এই প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট।

বিচারপতি এ এস ওকা এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভূঞার বেঞ্চ কেন্দ্র এবং অসম সরকারকে দু’সপ্তাহের মধ্যে আটক বাংলাদেশিদের দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদের নির্দেশ দিয়েছে। বেঞ্চের প্রশ্ন ছিল, ‘‘ট্রাম্প যদি বেআইনি অভাসীদের ক্ষেত্রে এমন দ্রুত পদক্ষেপ করতে পারেন, তা হলে মোদী সরকারের অসুবিধা কোথায়?’’

২০০৯-এর নভেম্বরে জারি হওয়া কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞপ্তির অনুচ্ছেদ ২ (৫) ধারায় স্পষ্ট বলা ছিল, পরিচয় যাচাই এবং প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়া ৩০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। কিন্তু তা সত্ত্বেও কয়েক বছর ধরে ওই ৬৩ জন বাংলাদেশি নাগরিককে অসমের ট্রানজিট ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়েছে বলে আবেদনকারী পক্ষের তরফে শীর্ষ আদালতে অভিযোগ করা হয়েছিল। বিনা বিচারে অনির্দিষ্ট কাল ধরে আটকে রাখার ঘটনা যে ভারতীয় সংবিধানের ২১ নম্বর ধারার (মৌলিক অধ সংক্রান্ত) পরিপন্থী, সে কথা কেন্দ্র এবং অসম সরকারকে মনে করিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

• আরও পড়ুন– ‘শুধু ভারতীয়দের ক্ষেত্রেই তো হচ্ছে না’! শিকল বেঁধে অবৈধ অভিবাসী প্রত্যর্পণের কি ব্যাখ্যা বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করের !

বন্দিশিবিরে আটক ৬৩ জনকে কেন্দ্র ‘বাংলাদেশি’ বলে চিহ্নিত করলেও তাঁরা আদতে কোন দেশের, তা  নির্ধারণ করতে পারেনি সরকার। যাঁদের ‘বাংলাদেশি’ বলা হয়েছে, বাংলাদেশ  তাঁদের নিজের নাগরিক বলে মানতে বা ফেরাতে নারাজ। আটকদের ঠিকানাও জানা হয়নি । শীর্ষ আদালত এ প্রসঙ্গে বলেছে, কাউকে ‘বিদেশি’ বলে চিহ্নিত  করলে অবিলম্বে তাঁকে নিজের দেশে ফেরানোর দায়িত্ব সরকারের। ঠিকানা না জানাটা অজুহাত পারে না। আটক অবৈধ অভিবাসী যে দেশের নাগরিক, সেখানকার রাজধানীতে ফেরত পাঠাতে হবে।

প্রসঙ্গ, বুধবার দুপুরে অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের নিয়ে অমৃতসরের শ্রী গুরু রামদাসজি বিমানবন্দরে অবতরণ করে মার্কিন সেনাবাহিনীর সি-১৭ বিমান। বিমানটি মঙ্গলবার টেক্সাস থেকে রওনা দিয়েছিল। এই অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে ২৫ জন মহিলা এবং ১২ জন নাবালকও রয়েছেন। তাদের মধ্যে কনিষ্ঠতম সদস্যের বয়স চার বছর। তাঁদের অনেককে হাতকড়া-শিকল পরিয়ে বিমানে তোলা হয়েছিল বলে অভিযোগ। সুপ্রিম কোর্ট  বাংলাদেশি অবৈধ অভিবাসী মামলার শুনানিতে  ট্রাম্প সরকারের সেই পদক্ষেপ থেকে  শিক্ষা নিয়ে কেন্দ্র ও অসম সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেয়।