পহেলগাঁওয়ের হত্যাকাণ্ডে জড়িত চার জঙ্গিকে শনাক্ত করেছে ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলি। ইতিমধ্যেই চার জনের ছবি প্রকাশ করে তাঁদের পরিচয় জানানো হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, চার জঙ্গি হলেন— আদিল, আসিফ ফুজি, সুলেমান শাহ এবং আবু তালহা।
মঙ্গলবার দুপুরে জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় সন্ত্রাস নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রের মতে, হামলাকারীদের সংখ্যা ছিল পাঁচ থেকে ছয় জন। সকলের মুখে ছিল মাস্ক এবং হাতে একে-৪৭ রাইফেল । তারা আচমকাই পর্যটকদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে। পহেলগাঁওয়ে এই হামলার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আরও কয়েক জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে তিন জন পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা।
পহেলগাঁও হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)। ২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে এই সন্ত্রাসী সংগঠনের জন্ম। এটি পাক জঙ্গি সংগঠন লশকর-ই-তৈয়বার একটি ‘ছায়া সংগঠন’ হিসেবে পরিচিত। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, হামলায় জড়িত তিনজনই টিআরএফের সদস্য। হামলার মূল পরিকল্পনাকারী সইফুল্লা খালিদ ওরফে সইফুল্লা কাসুরি, যিনি লশকরের অন্যতম শীর্ষ নেতা। এছাড়াও, তিনি এই জঙ্গি সংগঠনের অন্যতম প্রধান এবং ভারতের ‘ওয়ান্টেড’ তালিকাভুক্ত হাফিজ সইদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবেও পরিচিত।
এদিকে আগের মতোই পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার ঘটনায় তাদের কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছে জঙ্গিদের মদতদাতা পাকিস্তান। অন্তত ২৬ জন পর্যকের মৃত্যুর ঘটনার পর পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ এই বক্তব্য দিয়েছেন। একই সঙ্গে ইসলামাবাদকে মঙ্গলবারের রক্তপাতের ঘটনা থেকে দূরে সরিয়ে রেখে তিনি এই হামলাকে ভারতের বিরুদ্ধে ‘বৃহত্তর বিদ্রোহের’ অংশ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
পাকিস্তানের এক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষকারে খোয়াজা উল্লেখ করেন, ‘‘পহেলগাঁওয়ের হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের কোনও সম্পর্ক নেই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘নাগাল্যান্ড থেকে কাশ্মীর, ছত্তীসগঢ়, মণিপুর এবং দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলিতে বিদ্রোহের পরিবেশ বিরাজ করছে। মনে হচ্ছে, এই হামলায় বিদেশি কোনও হস্তক্ষেপ নেই, বরং এটি স্থানীয় বিদ্রোহের ফল হতে পারে।’’