প্রায় ৪ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার বিশিষ্ট ‘ট্রাভেল উইথ জো’-র জ্যোতি মালহোত্রাকে পাকিস্তানি গুপ্তচর সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে সন্দেহভাজন থেকে নতুন তথ্য পাওয়া গেছে। পাকিস্তানের সঙ্গে সংযোগ নিয়ে জ্যোতিকে NIA এবং IB জিজ্ঞাসাবাদ করছে। প্রথম কয়েকদিন তদন্তে অসহযোগিতা করছিলেন জ্যোতি, মুখ খুলছিলেন না। কিন্তু NIA এবং IB-এর ক্রমাগত প্রশ্নের চাপে তাকে একেবারে নতি স্বীকার করতে বাধ্য করা হয়েছে। শেষপর্যন্ত তিনি স্বীকার করেছেন যে, পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা ISI-এর অফিসার আলি হাসানের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল। তিনি আরও স্বীকার করেছেন যে আলি হাসানই পাকিস্তানে তার থাকার এবং ভ্রমণের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, জ্যোতি জানিয়েছেন যে ২০২৩ সালে পাকিস্তানে যাওয়ার ভিসার জন্য দিল্লিতে পাক হাই কমিশনারের কর্মকর্তা এহসান-ইররহিম ওরফে দানিশের সাথে তার সঙ্গে আলাপ হয়। পাক হাই কমিশনের কর্মী দানিশের মাধ্যমেই তার সঙ্গে আলি হাসান এর যোগাযোগ স্থাপন হয়। জ্যোতি দু’বার পাকিস্তানে যান এবং আলিই তার থাকা ও ঘোরার ব্যবস্থা করেন। সন্দেহভাজন পাক গুপ্তচর জ্যোতির জীবনযাত্রা ছিল অত্যন্ত বিলাসবহুল। একের পর এক দেশে ভ্রমণ, পাঁচতারা হোটেলে থাকা—এসব খরচা কি শুধুমাত্র জ্যোতি নিজেই বহন করতেন না ,এগুলো ISI এর পক্ষ থেকে দেয়া হতো।
ISI এজেন্টের সঙ্গে জ্যোতির পরিচয় কীভাবে ?
জ্যোতির সঙ্গে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর কর্তা ও ইতালীয় আধিকারিকদের পরিচয় করিয়ে দেয় আলি। সেখানে রানা শাহবাজ ও শাকির নামে দুই আইএসআই এজেন্টের সঙ্গে পরিচিত হয় জ্যোতি। সন্দেহ এড়াতে শাকিরের নম্বর নিজের মোবাইল ফোনে জাট রনধাওয়া নামে সেভ করেছিল সে।
এরপর হোয়াটসঅ্যাপ,স্ন্যাপচ্যাট , টেলিগ্রামের মতো যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা এবং তথ্য আদান-প্রদান শুরু করে, যা জেরায় স্বীকার করেছে জ্যোতি। অভিযোগ, পাকিস্তান থেকে দেশে ফেরার পরও পাক দূতাবাসের আধিকারিক দানিশনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রেখেছিল জ্যোতি।
জ্যোতির মোবাইল ফোনে স্পর্শকাতর এলাকার ভিডিও!
তদন্তকারী সংস্থার দাবি অনুযায়ী, জ্যোতির মোবাইল ফোনে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখের সীমান্তবর্তী এলাকার অনেক ভিডিও পাওয়া গেছে। সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর কার্যকলাপ, রাডারের অবস্থান এবং উচ্চ নিরাপত্তা অঞ্চলের ছবি রয়েছে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, জ্যোতির মোবাইল ফোনের ক্লাউড স্টোরেজ থেকে রাজস্থানে ভারত-পাক সীমান্তের বিভিন্ন স্পর্শকাতর এলাকার ভিডিওও পাওয়া গেছে। যেগুলি সে ISI এর গুপ্তচরদের সরবরাহ করেছিলো।
NIA এবং IB-এর ক্রমাগত প্রশ্নবাণে আরও অনেক গোপন তথ্য জানিয়েছে গুপ্তচর জ্যোতি মালহোত্রা ,যেগুলি অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয় বলে জানিয়েছে সূত্রের খবর।