যেমন কথা তেমন কাজ। ভারত-পাকিস্তানের সিন্ধু জল বন্টন চুক্তি স্থগিত হয়ে গেল। জম্মু ও কাশ্মীরে পহেলগাঁওতে পর্যটকদের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে দিল্লি আগেই জানিয়েছিল ১৯৬০ সালের সিন্ধু জল বন্টন চুক্তি স্থগিত রাখা হবে।সে অনুযায়ী, রামবানের চেনাব নদীর উপর অবস্থিত বাগলিহার হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার প্রজেক্ট বাঁধ থেকে জল ছাড়া বন্ধ হয়ে গেল। সেই ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে।
প্রসঙ্গত, এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের উপস্থিতিতে নিরাপত্তা সম্পর্কিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। উল্লেখ্য, এর আগে চারবার ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময়েও এই চুক্তির ওপর কোনও প্রভাব পড়েনি। ৬০ সালের পর এই প্রথমবার সেই চুক্তিতে ব্যাঘাত ঘটল।
পহেলগাঁওতে হামলার প্রতিক্রিয়ায়, ভারত বুধবার কূটনৈতিক উদ্যোগের মাধ্যমে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ ছিল ১৯৬০ সাল থেকে কার্যকর সিন্ধু জল বন্টন চুক্তি স্থগিত করা। এর আগে, ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলা এবং ২০১৬ সালের উরি হামলার পরেও ভারত এই চুক্তির ওপর কোনও বিধিনিষেধ আরোপ করেনি। তবে, ২০১৬ সালের উরি হামলার পর সিন্ধু জল চুক্তি নিয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছিলেন যে জল ও রক্ত একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না।
সিন্ধু জল বণ্টন চুক্তিতে ভারতের নিষাজ্ঞার কারণে পাকিস্তান তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এই পদক্ষেপকে যুদ্ধের কাজ হিসেবেও গণ্য করা হবে বলে জানিয়েছেন। পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা বিষয়ক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানান, “এটি অত্যন্ত অনুচিত, কারণ পাকিস্তানের ২৪ কোটি মানুষ এই জলের উপর নির্ভরশীল।” তবে তাঁর বক্তব্য থেকেই পাকিস্তানের দ্বিচারিতা স্পষ্ট হয়েছে। যেখানে পাক প্রধানমন্ত্রী এই ঘটনাকে আক্রমণের বিরুদ্ধে বলে মন্তব্য করেন, সেখানেই ইশাক দার পহেলগাঁওয়ের হামলাকারী জঙ্গিদের ‘স্বাধীনতা সংগ্রামী’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
- আরও পড়ুন —রাজ্যে যত পাকিস্তানি রয়েছে, ২ দিনের মধ্যে পাকিস্তানে ফেরত পাঠান !রাজ্যকে কড়া নির্দেশ অমিত শাহের !
পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, মধ্যে রয়েছে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য নিষিদ্ধকরণ, পাকিস্তানি আকাশসীমা ব্যবহার থেকে ভারতীয় বিমান নিষিদ্ধকরণ,ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করার মতো সিদ্ধান্ত। তবে এর আগে ভারত পাকিস্তানের জন্য তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে ছিল এবং আটারি-ওয়াঘাান্তও বন্ধ করে দেয়। পাশাপাশি, ভারতে থাকা পাকিস্তানি কূটনৈতিক ও নাগরিকদের দেশে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।