উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কেন্দ্র যে পদক্ষেপই গ্রহণ করুক না কেন, তাতে বিরোধীদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। বৃহস্পতিবার সর্বদলীয় বৈঠক শেষে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী এ কথা জানান। সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’ সূত্রে জানা গেছে, রুদ্ধদ্বার বৈঠকে কেন্দ্র গোয়েন্দা ব্যর্থতার বিষয়টি স্বীকার করেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, “যদি কোনো ভুল না-ই হয়ে থাকে, তবে আমরা এখানে বসে আছি কেন? কোথাও না কোথাও ব্যর্থতা রয়েছে এবং সেটিই খুঁজে বের করতে হবে।”
কাশ্মীর উপত্যকায় হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে গোটা দেশ সরব হয়ে উঠেছে। কূটনৈতিক স্তরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। উভয় পক্ষই কূটনৈতিক ক্ষেত্রে একে অপরকে আঘাত’ ও ‘প্রত্যাঘাত’ করতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে, সন্ধ্যায় সংসদ ভবনে সর্বদলীয় বৈঠকে বসে নরেন্দ্র মোদী সরকার, যদিও প্রধানমন্ত্রী মোদী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হওয়া বৈঠক রাত ৮টার মধ্যে শেষ হয়। বৈঠকের শেষে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মোদী সরকারকে পূর্ণ সমর্থনের বার্তা দেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। তিনি শুক্রবার কাশ্মীরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বস্তুত, গত মঙ্গলবার নির্মমভাবে ২৬ জন নিরীহ মানুষকে হত্যার পর জঙ্গিরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। তাদের সন্ধানে পুরো কাশ্মীর জুড়ে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে বাহিনী। এখনও পর্যন্ত পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডে জড়িত কোনও জঙ্গি নিহত বা আটক হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। জঙ্গিদের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দিতে পারলে ২০ লক্ষ টাকার পুরস্কার করেছে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ।
এই পরিস্থিতিতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সভাপতিত্বে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ, সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা । লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী এবং রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গেও এই বৈঠকে অংশেন। সর্বদলীয় বৈঠক শেষে রাহুল বলেন, “প্রতিটি রাজনৈতিক দল সর্বসম্মতভাবে ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে। সরকার যা পদক্ষেপ নেবে, বিরোধী শিবির পূর্ণ সমর্থন দেবে।” কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে বলেন, “আমরা চাই যত দ্রুত সম্ভব জম্মু ও কাশ্মীরে শান্তি ফিরে আসুক, তৃনমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, বৈঠকে সুদীপ উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের পাশে থাকার বার্তা দেন। প্রধানমন্ত্রী যেন সব দলের নেতাদের নিয়ে একটি বৈঠকের আয়োজন করেন, সেই প্রস্তাবও তিনি দেন বলে জানা গেছে।
বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রিজিজু জানান, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রতিটি দলই কেন্দ্রকে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে। তিনি মনে করেন, জঙ্গি হামলার কারণে উপত্যকায় শান্তির পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। মীর বক্তব্য অনুযী, “গত কয়েক বছর ধরে কাশ্মীরে সবকিছু স্বাভাবিক ও শান্তিপূর্ণ ছিল। এই সন্ত্রাসী হামলা উপত্যকার পরিবেশকে বিঘ্নিত করেছে।”