২৭ বছর পর দেশের রাজধানীতে প্রত্যাবর্তনের পথে বিজেপি। দিল্লির আকাশে বাতাসে এখন হিন্দুত্বের জয়জয়কার। উন্নয়নবিরোধী, পাকিস্তানপন্থী, মুসলিমদের তোষণকারী আপ সরকারের পতন ঘটিয়ে বিপুল জয় বিজেপির। ১৯৯৮ সালে শেষবার দিল্লির মসনদে ছিল। শেষ মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন সুষমা স্বরাজ। তারপর কংগ্রেস দিল্লির ক্ষমতা দখল করে। ২০১৩ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় আসে আপ ।
২০১৪ নরেন্দ্র মোীর নেতৃত্বে কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসে বিজেপি। ২০২৪ সালে এক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও, জোট সরকার গঠন করে তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হন নরেন্দ্র মোদী। গত ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিজেপি একের পর এক রাজ্য দখল আসছে। বিরোধী শিবিরের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে একাধিক রাজ্যের ক্ষমতা। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হতে চলেছে দিল্লির নামও।
গত কয়েক বছর ধরেই দিল্লির আশেপাশের রাজ্যগুলি বিজেপির দখলে আসছিল। ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশের ক্ষমতা দখল করে বিজেপি। ২০২৪ সালে হরিয়ানাও গেরয়া শিবির হাতে যায়,২০২৩ মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানও দখল করে বিজেপি। শনিবার দিল্লি ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই রাজধানীর রাজনৈতিক ক্ষমতা বদলের ইঙ্গিত মিল।
এই রিপোর্টটি লেখা পর্যন্ত প্রায় ৫০টি আসনে এগিয়ে বিজেপি। এই প্রবণতা কয়েক ঘণ্টা থাকলেই দিল্লিতে ১৯৯৮ সালের পর ক্ষমতায় আসবে বিজেপি। দেশের প্রায় ২০টি রাজ্য এবং একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ক্ষমতায় থাকলেও দিল্লির ভোটে লজ্জাজনক ফল করেছিল বিজেপি। ২০১৫ ও ২০২০ সালের ভোটে দিল্লিতে মাত্র তিনটি এবং আটটি আসনে জয় পেয়েছিল বিজেপি। অন্যদিকে আপ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসে। এবার পালাবদল সময়ের অপেক্ষা।
দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি জনতা দল ইউনাইটেড এবং লোক জনশক্তি পার্টির সঙ্গে জোট বেঁধে লড়াই করেছে। এই দুটি দলকে বুরারি ও দেওলি আসন ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। এবার ক্ষমতা দখল করতে প্রথম থেকেই সক্রিয় ছিল বিজেপি। ১০ বছরের বেশি সময়তায় থাকার পরে আদমি পার্টি সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া উঠেছে। দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে আম আদমি পার্টির সুপ্রিমো অরিন্দ কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে। লিকার দুরীতির জন্য কেজরিওয়ালকে ৫ মাস জেলে কাটাতে হয়। বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগ তোলে আপ। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর সাথে হাত করে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা মুসলিম দিল্লিতে ঢুকিয়ে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ ছিলো।এই পরিস্থিতিতে দিল্লির ভোটারদের মনোভাব পরিবর্তনের আভাস পাও যাচ্ছিল এক্সিট পোল থেকেই। ভোটের মেশিনে সেই ইঙ্গিতই প্রতিফলিত হচ্ছে।
দিল্লি দখল করতে পারলে বিজেপির একটি বিরাট জয় হবে কারণ রাজধানীতেও ডাবল ইঞ্জিন সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে, সেইসঙ্গে ভারতের মানচিত্রে আরও একটি রাজ্যের রঙ গেরুয়া হবে। এই ভোটে কেজরি সরকারের দুর্নীতিকেই শুধু হাতিয়ার করেনি বিজেপি, একইসঙ্গে কেজরিওয়ালের শীষমহলে থাকাকেও প্রচারে ব্যবহার করেছে। এই ভোটে মোদীকে মুখ করে বিজেপি,এর পাশাপাশি দরিদ্র পরিবারের মহিলাদের মাসে ২৫০০ টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি, যা তাদের ভোট টানতে সাহায্য করেছে।
3 Comments
Pingback: অনুব্রত মন্ডলের ৩৬ টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ২৬ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করলো ইডি (ED) - প্রথম খবর
Pingback: দিল্লি বিজেপি জিততেই বিশাল ঘোষণা শুভেন্দু অধিকারীর,বাংলায় ক্ষমতায় আসার আগেই আবাস যোজনায় বড
Pingback: সোমে ফ্রান্স,বুধবার আমেরিকায়! বন্ধু ট্রাম্পের সাথে প্রতিবেশী বাংলাদেশকে নিয়ে বৈঠকে বসতে চলে