পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি ভারতের বিভিন্ন গোপন তথ্য ইসলামাবাদের কাছে পাচার করছিলেন। তাঁর আইএসআই এজেন্টের সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল বলে জানা গেছে। ইউটিউবারের ফোন থেকে ওই এজেন্টের নম্বরও উদ্ধার করা হয়েছে। জ্যোতির পাকিস্তানের সঙ্গে সংযোগের প্রমাণ তাঁর ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওগুলিতেও পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, গত বছর নয়াদিতে পাকিস্তান হাই কমিশনের ইফতার পার্টিতে আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন ইউটিউবার জ্যোতি। সেখানে তিনি যে ভিডিও করেছিলেন, তাতে তাকে পাকিস্তানে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ দেখা যায়। এমনকি যার সাথে কথা হচ্ছিল, তাকে পাকিস্তানের ভিসার ব্যবস্থা দেওয়ার কথা বলেছিলেন জ্যোতি ।ভিডিওতে তাকে দানিশ ও তার স্ত্রীর সঙ্গে এমনভাবে কথা বলতে দেখা গেছে, যা স্পষ্ট বোঝা যায় যে তাদের মধ্যে পূর্বপরিচয় ছিল। হরিয়ানার হিসারে নিজের বাড়িতেও দানিশ ও তার পরিবারকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন নীতি জ্যোতি ।
‘ট্রাভেল উইথ জো ’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করেন জোতি মালহোত্রা। সেখানে তিনি প্রধানত ভ্রমণের ভিডিও পোস্ট করে থাকেন। জ্যোতির ইন্সটাগ্রাম এবং ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও পর্যবেক্ষণ দেখা যায়, তিনি প্রায় দুই মাস আগে, অর্থাৎ পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর ঘটনার পূর্বে সফর করেছিলেন। অটারী-ওয়াঘা সীমান্ত অতিক্রম করে লাহোরের আনারকলি বাজার, পাক পাঞ্জাবের কটাস রাজ মন্দির পরিদর্শনের ভিডিওও রয়েছে। পাকিস্তানের খাবার এবং ভারত-পাকিস্তানের সংস্কৃতির তুলনা নিয়েও ভিডিও তৈরি করেছিলেন এই ইউটিউবার।
গত বছর পাকিস্তানি হাই কমিশনার এহসান-উর-রহমান ওরফে দানিশের সঙ্গে তাঁর পরিচয় ঘটে। দানিশের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জ্যোতি পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করত। জ্যোতি তিনবার পাকিস্তানে সফর করেছিল এবং ভারতে দানিশই স্পাই নেটওয়ার্কনা করত।
তদন্তকারীদের সূত্র অনুযায়ী, জ্যোতি প্রথমবার পাকিস্তানে যান ২০২৩ সালে। সেই সময়ে নয়াদিল্লিতে পাকিস্তান হাই কমিশনের আধিকারিক এহসান-উর-রহিম ওরফে দানিশের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে সম্প্রতি দানিশকে ভারতে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করা হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, দানিশের মাধ্যমেই জ্যোতির পাক গুপ্তচর সংস্থার একাধিক আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপিত হয়। দেশে ফিরে এসে তিনি হোয়াটস্যাপ, টেলিগ্রাম ও স্ন্যাপচ্যাট ব্যবহার করে পাকিস্তানি গুপ্তচরদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন।
পাক চরদের পরিচয় গোপন রাখতে মোবাইলে অন্য নামে নম্বরগুলি সেভ করতেন তিনি। এর মধ্যে একটি নম্বর ‘জাট রানধাওয়া’ নামে সেভ করা ছিল। তদন্তকারীদের সন্দেহ, ওই নম্বরটি আসলে পাকিস্তানি চর শাকির ওরফে রানা শাহবাজ়ের। এমনকি, তিনি শাকিরের সঙ্গে জ্যোতি ইন্দোনেশিয়াও ভ্রমণ করেছিলেন।