বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করে তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়লেন তাপস রায় !
লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha Election 2024) আগে উত্তর কলকাতার তৃণমূল নেতৃত্ব কয়েকদিন ধরেই আলোচনার কেন্দ্রে। বিবিধ বিষয়ে নেতাদের মধ্যে বিরোধ সামান্য হলেও প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু এ বার সে সবও ছাপিয়ে যেতে চলেছেন বরাহনগরের তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় (Tapas Roy)। কোনও কথাবার্তা, আলাপ-আলোচনায় কাজ হল না। দলের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ, অভিমান উসকে তৃণমূল (TMC) ত্যাগের সিদ্ধান্তের অনড় থেকে বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করলেন তাপস রায়।এদিন সকালেই তাঁকে বোঝাতে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও কুণাল ঘোষ তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও বরফ গলল না।
সোমবার ১২টা নাগাদ বাড়িতে সাংবাদিক সম্মেলনে দল নিয়ে নিজের অভিমানের কথা জানিয়ে সোজা বেরিয়ে যান বিধানসভার পথে। সেখানে স্পীকারের সামনে তিনি বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা (Resign) দিলেন বলে খবর। এর পর দলের সঙ্গেও সমস্ত সম্পর্ক ত্যাগ করবেন এই তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা ।
তাপসের ঘনিষ্ঠ সূত্রদের অনুযায়ী, এই প্রবীণ রাজনীতিবিদ বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন । কিছু লোক আরো একধাপ এগিয়ে বলছেন, তাপস উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন।উত্তর কলকাতার জন্য বিজেপির সজল ঘোষের নাম প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে, যদিও তাপস নিজে এর বিষয়ে কিছুই বলতে চাননি।
যখন সোমবার সকালে তাঁর কাছে প্রশ্ন করা হয়, তিনি উত্তর দেন, “আমি যা করার আছে, সেগুলো সর্বোচ্চ গুরুত্বে করব। সাংবাদিকদের সাথে বৈঠকে, আমি সবাইকে জানাব। এখন, আর কিছু বলার নেই।” তিনি আরো একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ’ কথা বলেন। তাপসের বক্তব্য , ‘‘আমি একজন বিধায়ক, যে বিধানসভায় ১৯৯৬ সাল থেকে আছি। আমি কিংবা আমার পরিবারের কেউ মেডিক্যাল বিলের জন্য একটি পয়সাও গ্রহন করিনি! তারপরেও আমার বাড়িতে ED-র অনুসন্ধান! এর কারন কি? এর আদেশ কে দিল?’’
শনিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে তাপস রায় দলের উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে তুলোধুনো করেন । তাঁর কথায়, “উত্তর কলকাতায় প্রার্থী হিসেবে আমি যাতে টিকিট না পাই, তাই আমার বাড়িতে ইডি ঢোকাচ্ছে। রাজ্যসভা,লোকসভা, রাজ্য মন্ত্রিসভার অন্তত ৪০ জন শুভানুধ্যায়ী আমাকে এই কথা বলেছে।তিনি আরও বলেন , আমার বাড়িতে যখন ইডি (ED) তল্লাশি চলছে তখন উত্তর কলকাতায় স্বামীজির বাড়িতে তৃণমূল নেতানেত্রীরা উল্লাস করছিলেন।
সূত্রের খবর,বরাহনগরের বিধায়ক তাপস রায় তৃণমূল যে আর করবেন না, সে বিষয়ে মোটামুটি মনস্থির করেই ফেলেছেন । শুভানুধ্যায়ী এবং অনুগামীদের সূত্র বলছে— সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বাড়িতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ED) হানা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে কটাক্ষ , এই দু’টি বিষয় নিয়ে তৃণমূলের সম্পর্কে ‘মোহভঙ্গ’ হয়েছে বিধায়কের ।
তাপস রায়ের মতো অভিজ্ঞ এবং পরিষদীয় রাজনীতিতে প্রবীণ রাজনীতিক লোকসভা ভোটের মুখে তৃণমূল ছেড়ে দিলে তার আঘাত যে নেহাত ফেলে দেওয়ার মতো হবে না, সে বিষয়ে দলের ছোটবড় মহল একমত।