কেনো নরেন্দ্র মোদীকে কাঁথি আসনটি উপহার দিতে চান শুভেন্দু অধিকারী !
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আসন্ন ২০২৪ এ লোকসভা ভোটে শুভেন্দু অধিকারীর বাবা তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারীর জেতা কাঁথি কেন্দ্রটি উপহার দিতে চান শুভেন্দু অধিকারী। কাঁথি থেকে ২০১৯ সালের নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে জিতেছিলেন শিশির অধিকারী ।
গত বিধানসভা ভোটের আগে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে অধিকারী পরিবারের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের দূরত্ব বাড়ে। এখন কাগজ কলমে দলের সাংসদ হলেও, TMC তে আছেন শিশির অধিকারী ।তবে মোদী, অমিত শাহের সভায় যাওয়া থেকে শুরু করে বিজেপি প্রার্থী প্রচারে, সবখানে তাঁকে দেখা যায়।তাই এ বারের ভোটে কাঁথি থেকে বিজেপির প্রার্থীই দিল্লি যাবেন বলে দাবী করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
শুক্রবার মন্দারমণিতে বিজেপির কর্মী সভা থেকে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে বার্তা দেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য এ বারের লোকসভা নির্বাচনে আমরা কাঁথির আসনটি উপহার দেব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে।তবে এর পাশাপাশি শুভেন্দু বলে দেন, কাঁথিতে বিজেপি না জিতলেও তৃতীয় বারের জন্য মোদীই প্রধানমন্ত্রী হবেন। কিন্তু এর পাশাপাশি লোকসভায় কাঁথিতে বিজেপির প্রার্থী জেতা কেনো জরুরি, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দু বলেন ,আমাদের লক্ষ্য রাজ্যে ডাবল ইঞ্জিন সরকার তৈরি করা,বাংলার মানুষকে চোর মমতার হাত থেকে রক্ষা করা। সেই লক্ষ্যেই কাঁথিতে বিরাট ব্যবধানে জিততে হবে। পদ্মফুলের প্রার্থীকে সাংসদ করে দিল্লি পাঠাতে হবে।
প্রসঙ্গত বিজেপি কোন সমীকরণে কাঁথিতে এগিয়ে রয়েছে, শুভেন্দু অধিকারী নিজেই তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন,২০২১ সালের বিধানসভায় কাঁথির অধিকাংশ আসনেই বিজেপি জিতেছে।কাঁথিতেই রাজ্যের যে লোকসভাগুলিতে বিধানসভার নিরিখে বিজেপি এগিয়ে।
উলেখ্য , গত লোকসভা নির্বাচনে কাঁথিতে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছিল ৫০ দশমিক ৩০ শতাংশ ভোট। আর বিজেপি পেয়েছিলো আসে ৪২ দশমিক ৪০ শতাংশ। শিশির অধিকারী জিতেছিলেন ১ লাখ ১১ হাজার ৬৬৮ ভোটে। কিন্তু অধিকারী পরিবারের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক এ চিড় ধরার পরেও ২০২১ এর বিধানসভা ভোটে কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বিধানসভাগুলিতে ভালো ফল করে বিজেপি। সাতটি আসনের মধ্যে চারটিতে জয় পেয়েছিল বিজেপি। বাকি তিনটিতে দ্বিতীয় স্থানে ছিলো,সেগুলি ছিলো সংখ্যালঘু অধ্যুষিত আসন। এর নিরিখে কাঁথি লোকসভা আসনে বিজেপি বেশ খানিকটা এগিয়েই রয়েছেন বলে মত শুভেন্দু অধিকারীর ।
অন্য দিকে, বিজেপির একটি অংশ অবশ্য মনে করছে, লোকসভাকে পাখির চোখ করে কাঁথিতে দলের প্রস্তুতি ততটাও সন্তোষজনক নয়। পুরভোটে কাঁথিতে খারাপ ফল করেছে বিজেপি। কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের পঞ্চায়েতগুলিতেও যে একচেটিয়া ভাল ফল হয়েছে, সেটিও বলা যাবে না।এর পরেও কাঁথি লোকসভার অন্তর্গত সাতটি বিধানসভায় ১,৬০০ র কাছাকাছি বুথের মধ্যে ৭০ থেকে ৭২টি বুথে এখনও পূর্ণাঙ্গ কমিটি তৈরি হয়নি।
মূলত সংখ্যালঘু এবং সন্ত্রাস কবলিত এলাকায় এই সমস্যা রয়েছে বলে দাবি বিজেপি সূত্রের। তবে বিজেপির স্থানীয় নেতা কর্মীদের দাবী ,কাঁথিতে দলের জেতার সব রকম সম্ভাবনা রয়েছে। কাঁথিতে বুথ স্তরে একটু নজর দিলেই যে জেতা সম্ভব, তা সকলেই বুঝতে পারছেন।তাই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও কাঁথি আসনটিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন।