চাকরি বাতিল মামলায় যোগ্য-অযোগ্য বাছাই না হলে পুরো প্যানেল বাতিল হবে, জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট!
একাধিকবার পিছিয়ে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার চাকরী বাতিল মামলার শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টে। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে হওয়া এই শুনানিতে শীর্ষ আদালতের এক প্রশ্নের মুখেে রাজ্য, এসএসসি। ১০টা ৩৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চে শুরু হয় শুনানি প্রথম দফায় শুনির পর মাঝে বিরতি হয়। দ্বিতীয় দফায় ফের শুরু হয় শুনানি। সেই শুনানি চলছে। কলকাতা হাইোর্টের রায় বহাল ৬ সালের পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াই বাতিল করা হবে, না কি যোগ্য অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের আলাদা করার নির্দেশ দেবে শীর্ষ আদালত, তা জানতে উদ্গ্রীব সকলেই।
বৃহস্পতিবারের শুনান শীর্ষ আদালত মূলত যোগ্য এবং অযোগ্য
বৃহস্পতিবারের শুনান শীর্ষ আদালত মূলত যোগ্য এবং অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের বাছাই করার জোর দিয়েছে। সম্ভাব্য কোন উপায় তা করা যায়, সেই ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে। তবে যোগ্য-অযোগ্য বাছাই করা না গেলে পুরো প্যানেল বাতিল করতে হবে বলে জানিয়েছে বিচারপতির বেঞ্চ।
শুনানির শুরুতেই প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না বলেন, নম্বর কারচুপি হয়েছে এবং লিখিত পরীক্ষার নম্বর বৃদ্ধি করা হয়েছে। এরপর তিনি রাজ্যের আইনজীবীর কাছে জানতে চান, যোগ্য এবং অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের বাছাই করতে রাজ্যের সম্মতি রয়েছে কি না। রাজ্যের আইনজীবী জানান, যোগ্য এবং অযোগ্য বাছাইয়ে তাঁদের সমর্থন রয়েছে। নিজেদের সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি সংযোজন করেন যে, তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এই বিষয়ে আলাদা আলাদা তথ্য দিয়েছে।
এসএসসির আইনজীবী আদালতে জানান, নিয়োগ তালিকায় থাকা যোগ্য এবং অযোগ্য চাকরিপ্রাপকদের বাছাই করা সম্ভব। তার পরেই এসএসসির উদ্দেশে প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, “আমাকে বোঝান,কেন হাই কোর্ট বলল (যোগ্য-অযোগ্য) আলাদা করা সম্ভব নয়?”
বৃহস্পতিবারের শুনানিতে ‘সুপারনিউমেরারি’ পোস্ট নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য। প্রধান বিচারপতি রাজ্যের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বলেন, “অযোগ্যদের খুঁজে বের না করে সুপারনিউমেরারি পোস্ট তৈরি করেছেন। ওই সময় কেন এটা করলেন? আপনারা নিশ্চিত করতে চেছিলেন অদের দেওয়া হবে না।” রাজ্যের আইনজীবী বলেন, “ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও কোনও নিয়োগ করা হয়নি। হাইকোর্টের অনুমতি ছাড়া নিয়োগ করা যেত না।” প্রসঙ্গত, এসএসসিতে নিয়োগ করতে অনেক অতিরিক্ত পদ (সুপারনিউমেরারি পদ) তৈরি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। রাজ্য সরকারই সেই অনুমোদন দিয়েছিল। অভিযোগ, ওই সমস্ত শূন্যপদে অযোগ্যদের নিয়োগ করা হয়েছিল।
ওএমআর শিট সংরক্ষণ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। প্রধান বিচারপতি জানতে চান, ওএমআর শিট কি নষ্ট করা হয়েছিল? যদি নষ্ট করা হয়, তা কত দিনের মধ্যে? রাজ্যের উত্তর, এক বছর পরে ওএআর শিট নষ্ট করা হয়। তবে ‘মিরর ইমেজ’ সংরক্ষণ করে রেখেছে এসএসসি। প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, “সাধারণভাবে এটা ঠিক নয়। কেউ ওএমআর শিটের ইমেজ সংরক্ষণ করেনি এসএসসি। তারা দায়িত্ব দিয়েছিল নাইসাকে। তারাও করেনি। নাইসা আবার স্ক্যানটেককে তথ্য দেয়। তারাও সংরক্ষণ করেনি। স্কটেক স্ক্যান করেই ছেড়ে দিয়েছিল।” এই বাদানুবাদের মাঝেএসসিকে দোষ রাজ্যের আইনজীবী।, “কোনও টেন্ডার ছাড়াই নাইসাকে দিত্ব দিয়েছিল এসএসসি। তারা কেন এমন করল স্পষ্ট নয়।” প্রধান বিচারপতি বলেন, “অনেক কিছু গোপন করা হয়েছে। একটা জিনিস পরিষ্কার, আসল এবং স্ক্যান ওএমআর শিট একই নয়।” যোগ্য এবং অযোগ্য চাকরিপ্রাপকদের বাছাই করতে মেটা ডেটা খুঁজে বের করতে হবে বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। তা না হলে সুপ্রিম কোর্ট যোগ্য এবং অযোগ্য তালিকা বাছাই করতে পারবে না আদালত।