যত দিন যাচ্ছে, ২১ জুলাই আসন্ন হচ্ছে, এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে আসার গুঞ্জন ততই বাড়ছে। এই গুঞ্জনকে আরও উস্কে দিয়েছেন তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী রত্না বন্দ্যোপাধ্যায়, যদিও তাঁরা বর্তমানে একসাথে বাস করেন না। আইনিভাবে তাঁরা এখনও স্বামী-স্ত্রী হলেও, তাঁদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলমান। দাম্পত্য জীবনের আইনি জটিলতা সত্ত্বেও, রত্না বন্দ্যোপাধ্যায় শোভনের দলে ফেরার বিষয়ে প্রকাশ্যে নেতিবাচক মনোভাব প্রদর্শন করেছেন।
রত্না বন্দ্যোপাধ্যায় বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের একজন বিধায়ক এবং কাউন্সিলর। অতীতে, শোভনের দলে ফেরার বিষয়ে তাঁর কণ্ঠে কিছুটা কটাক্ষের সুর থাকলেও, সেটি এখন আরও প্রকট।
একটি বেসরকারি সংবাদ মাধ্যমের সাক্ষাৎকারে রত্না চট্টোপাধ্যায় উল্লেখ করেছেন যে, তৃণমূল কংগ্রেস ত্যাগ করে অন্য কোনও দলে যোগ দিলে তাঁর পক্ষে মানিয়ে নেওয়া কঠিন হবে। শোভন সবসময় তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে ছিলেন, এবং তাঁর জন্য রাজনীতি ছাড়া অন্য কিছু নেই। রত্না আরও বলেছেন, তিনি শোভনের সঙ্গে ২২ বছর ধরে সংসার করেছেন এবং তাঁর সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত। তিনি মনে করেন, শোভনের পক্ষে রাজনীতি ছাড়া অন্য কোনও কাজ করা সম্ভব নয়। রত্না আরও জানান, যদি শোভনবাবু মনে করেন যে তাঁর রাজনীতি করা উচিৎ, বিশেষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে, তাহলে তাঁর সেই সিদ্ধান্ত ঠিক হবে। তিনি আরও বলেন, যদি শোভনবাবু ফিরে আসতে চান, তাহলে তাঁর ফিরে আসা উচিৎ। তবে রত্না মনে করেন, শোভন চট্টোপাধ্যায়ের উচিৎ মনোনিবেশ করে রাজনীতি করা।
কিছুদিন আগে রত্না চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য ছিল, ‘তিনি নিজের ইচ্ছায় দল ত্যাগ করেছিলেন। এখন চাইলে নিজেই ফিরে আসতে পারেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘কেউ তাঁকে রাজনীতি ছাড়তে বাধ্য করেনি। তিনি নিজের ইচ্ছায় গিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি সৎমা বলেছেন, এবং অভিষেককে সোনার গোপাল বলেছেন বিজেপিতে যাওয়ার পর। এখন যদি মনে হয় তৃণমূল তাঁর নিজের পরিবার, সৎমা আবার মা হয়ে গেছেন, এবং সোনার গোপাল অভিষেক এখন ম্যাচিওর হয়ে গেছেন, তাহলে তিনি ফিরে আসতে পারেন এবং রাজনীতি করতে পারেন।’
রত্না চট্টোপাধ্যায় এখানেই থামেননি। তিনি শোভন এবং বৈশাখীর পুরনো কথা তুলে ধরেন। বলেন, অনেক সময় ধরে তাঁরা বলেছিলেন যে রত্নার সঙ্গে একই মঞ্চে রাজনীতি করা সম্ভব নয়। এই প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘এখন যদি মনে হয় যে রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে এক মঞ্চ শেয়ার করা যায়, তাহলে আসুন। আমি রাজনীতি ছাড়ছি না। বৈশাখীদেবীকে নিয়ে বিজেপিতে গিয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কী হাল হয়েছিল, তিনি ভালো করেই জানেন।’ তিনি আরও বলেন, যদি শোভন একা তৃণমূলে ফিরে আসেন, তাহলে তিনি ভালো করে রাজনীতি করতে পারবেন। এই কথায় তিনি বৈশাখীকে নিশানা করেন এবং বলেন, ‘শোভন যেখানেই যান, বৈশাখীও পিছনে পিছনে যান। আমি তা মানব না, আমার পক্ষে মানা সম্ভব নয়। তিনি রাজনীতির র বুঝেন না, রাজনীতিতে তাঁর কোনও অবদান নেই।’