হিন্দুত্বে আপস করে বালাসাহেবের ঐতিহ্য হারালেন উদ্ধব, শিব সেনার নেতৃত্বে এখন শিণ্ডেই !
মহারাষ্ট্রে মহাজুটির বিজয় উল্লেখযোগ্য। বিজেপি ও এনসিপির অজিত পাওয়ার শিবিরের সাথে সাথে, শিব সেনার একনাথ শিণ্ডে শিবিরও চমৎকার ফলাফল করেছে। ৮১টি আসনের মধ্যে ৫৫টিতে এগিয়ে আছে শিণ্ডে সেনা। এই ফলাফল দীর্ঘ লড়াইয়ের অবসান ঘোষণা করেছে। বালাসাহেবের আসল উত্তরসূরি কে, এই নিয়ে বিতর্কে একনাথ শিণ্ডে জল ঢেলেছেন এবং উদ্ধব ঠাকরেকে টেক্কা দিয়েছেন।
সাম্প্রতিক লোকসভা নির্বাচনে মহা বিকাশ আঘাড়ি মহাজুটিকে প্রবল প্রতিযোগিতা দিয়েছিল। উদ্ধব শিবির দাবি করেছিল যে তারাই ‘আসল’ সেনা, এবং এবার তা প্রমাণিত হয়েছে। যদি শুধু শিণ্ডে বনাম উদ্ধবের লড়াইয়ের দিকে নজর দেওয়া যায়, তাহলে পরিস্থিতি ভিন্ন মনে হবে। শিণ্ডে শিবির ১৫টি আসনে লড়ে ৭টিতে জয় লাভ করেছিল, অপরদিকে উদ্ধবের সেনা ২১ আসনে লড়ে মাত্র ৯টিতে জয়ী হয়েছিল। এই হিসেবে শিণ্ডের ‘স্ট্রাইক রেট’ বেশি ছিল। কিন্তু সামগ্রিক ফলাফলে মহা বিকাশ আঘাড়ি এগিয়ে থাকায় উদ্ধব শেষ হাসি হাসেন।
এবারের হিসেব ভিন্ন। মহাজুটি সামগ্রিকভাবে উদ্ধব-শরদ-হাত জুটিকে টেক্কা দিয়েছে। মহারাষ্ট্রে শিণ্ডে যেখানে ৮১টি আসনের মধ্যে ৫৫টিতে এগিয়ে আছে, সেখানে উদ্ধব ৯৫টি আসনে লড়াই করেও কেবল ২০টিতে এগিয়ে রয়েছে।
সূত্রধরদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে শিব সেনার নেতৃত্বের দায়িত্ব একনাথ শিণ্ডের হাতেই রয়ে গেছে। লোকসভা নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশন তাঁকেই শিব সেনার প্রতীক ও নামের উত্তরাধিকার দিয়েছিল। এখন জনাদেশও তাঁর পক্ষেই যাচ্ছে। মনে রাখা দরকার, বালাসাহেব ঠাকরে মারাঠি মানুষ এবং মারাঠা অস্মিতার জন্য লড়াই করে রাজনীতিতে প্রবেশ করেছিলেন। পরবর্তীতে, এই লড়াই মুম্বাই থেকে সমগ্র মহারাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়ে। বালাসাহেবের জনপ্রিয়তা মূলত এই কারণেই ছিল। নব্বইয়ের দশকের শুরুতে এর সাথে হিন্দুত্বের ধারণাও যুক্ত হয়। কিন্তু উদ্ধব ঠাকরে যখন মহা বিকাশ আঘাড়িতে যোগ দেন, তখন তিনি হিন্দুত্বের ধারণার সাথে আপস করেন। তবে ‘মারাঠি মানুষ’ এর ধারণা তাঁর সাথে থাকবে বলে মনে করা হচ্ছিল। গত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের পর এই ধারণা আরও দৃঢ় হয়েছিল। কিন্তু শনিবারের গণনা শুরু হতেই দেখা গেল, শিব সেনার সেনাপতি হিসেবে একনাথ শিণ্ডেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন, এবং এই বিতর্কের অবসান ঘটেছে।