SSKM হাসপাতাল থেকে জেলে ফেরানো হল জ্যোতিপ্রিয়কে! প্রেসিডেন্সি জেলে মন্ত্রী পেলো ছ’টি কম্বল!
SSKM হাসপাতাল থেকে কলকাতা প্রেসিডেন্সি জেলে ফেরানো হলো প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে । শনিবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ পাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তার পর কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় তাঁকে প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
রেশন দুর্নীতিতে ধৃত বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জেলে অসুস্থ হয়ে পড়ায় গত বছর নভেম্বর মাসে SSKM হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল । তার পর থেকে তিনি সেখানেই রাজার হালে ছিলেন। সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’র SSKM এ ভর্তি থাকা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয় রাজ্য রাজনীতিতে।SSKM হাসপাতালে ‘প্রভাবশালী’দের চিকিৎসার নাম করে আড়াল করে রাখা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল কলকাতা হাই কোর্টে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে রিপোর্টও তলব করেছিল হাইকোর্ট। এই আলোচনার মধ্যে জ্যোতিপ্রিয়কে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হলো।
প্রেসিডেন্সি জেল সুত্রের খবর, ১/২২ এর একটি সেলে রাখা হয়েছে জ্যোতিপ্রিয়কে । SSKM হাসপাতাল থেকে ফেরার পর আবার সেই সেলেই তাঁকে রাখা হয়েছে। নীচে পেতে শোওয়া আর গায়ে দেওয়ার জন্য সব মিলিয়ে ছ’টি কম্বল দেওয়া হয়েছে জ্যোতিপ্রিয়কে।
রেশন দুর্নীতিতে যুক্ত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক গত ২৬ অক্টোবর,২০২৩ এর মাঝরাতে ইডি(ED )র হাতে গ্রেফতার হন । ১৪ দিন ইডি(ED ) হেফাজতে থাকার পর প্রেসিডেন্সি জেলে পাঠানো হয়েছিল । তার আগে ইডি(ED ) হেফাজতে থাকাকালীনই স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের সামনে তিনি একাধিক বার নিজের অসুস্থতার ভান করেছিলো এই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ।
সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, তাঁর শরীরের বাঁ দিকের অংশ অবশ হয়ে পড়েছে। সে দিক তিনি নড়াচড়া করাতে অসুবিধা হচ্ছে । এর পর আদালতে একটি শুনানিতে বিচারককে নিজের অসুস্থতার কথা জানিয়ে জ্যোতিপ্রিয় বলেছিলেন, আমাকে বাঁচতে দিন। আমার ৩৫০ এর বেশি সুগার। হাত-পা ঠিকমতো কাজ করছে না। জ্যোতিপ্রিয়র কথা শোনার পর বিচারক পরামর্শ দিয়ে বলেন, আপনার অসুবিধা হলে সেলে চলে যেতে পারেন। এই শুনানির পরের দিনই প্রেসিডেন্সি জেলে অসুস্থ হয়ে পড়ার নাটক করেন জ্যোতিপ্রিয়। কাশি, শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।এরপর আদালতের নির্দেশে SSKM হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাকে। এর মধ্যে তার কেবিন থেকে সিসিটিভি খোলার নির্দেশ দেয় আদালত।এই সুযোগে জ্যোতিপ্রিয় একটি চিঠি লিখে তার মেয়ে প্রিয়দর্শিনী কাছে দেয়। কিন্তু কপালের ফেরে সেই চিঠি কেবিনের বাইরে পাহারারত CRPF এর হাতে এসে পড়ে।সেই চিঠিতে বনগাঁর শংকর আদ্দ্য ,সন্দেশখালির শেখ শাহজাহান সহ বিভিন্ন তৃণমূল নেতার নাম লিখে দেয় জ্যোতিপ্রিয় এবং তার মেয়েকে বলে এদের কাছ থেকে প্রয়োজন হলে টাকা নিতে।
সেই চিঠির তথ্য অনুযায়ী ইডি কেন্দ্রীয় বাহিনী যায় তল্লাশিতে বনগাঁর শংকরকে গ্রেফতার করতে পারলেও,সন্দেশখালির শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে গেলে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর মুখোমুখি হয়ে আহত হয় ED আধিকারিকরা।এর পর হাইকোর্ট SSKM হাসপাতালে ‘প্রভাবশালী’দের চিকিৎসার নাম করে আড়াল করে রাখা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।তার আবহেই জ্যোতিপ্রিয়কে আবার প্রেসিডেন্সি জেলে পাঠানো হলো।