‘তৃণমূলের বিশ্বাস অর্জনের জন্য’ নেতাকে ভোট দেওয়ার ভিডিও তৈরি করে দেখাতে হয়েছে! রায়গঞ্জে এমন ঘটনা অভূতপূর্ব।
লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের ৩৬ দিন পর রাজ্যের চারটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভোটগ্রহণ চলছে কলকাতার মানিকতলা, উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা, নদিয়ার রানাঘাট দক্ষিণ, এবং উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে। উপনির্বাচনের ফলে অশান্তি, হুমকি, শাসকদলের নেতাদের দাদাগিরির মতো নানা অভিযোগ উঠে আসছে। এই পরিস্থিতিতে, কাঞ্চনপল্লি জিএসপি স্কুলের ১৪৭ নম্বর বুথে এক অনন্য ঘটনা ঘটেছে।
নিজের ভোট নিজে দেওয়া এবং কাকে ভোট দেওয়া হচ্ছে তা গোপন রাখা একজন নাগরিকের অধিকার। কিন্তু সেই অধিকার কি আর মানা হচ্ছে? এক মহিলা বিধানসভার উপনির্বাচনে ‘শাসক দলের প্রতি আনুগত্য প্রমাণের’ জন্য ভোট দেওয়ার সময় ভিডিও করেন। ফলে, গোপন ভোট আর গোপন থাকেনি। নিয়ম ভেঙে তিনি নিজের ভোটের ভিডিও করেন এবং সেই ভিডিও নিয়ে সরাসরি তৃণমূল নেতার কাছে চলে যান। সাধারণত, ফোন নিয়ে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা থাকে, কিন্তু এখানে তিনি নিয়ম অমান্য করে ভোট দেওয়ার ভিডিও করেন। এই ঘটনা নিয়ম ভাঙার এক বড় উদাহরণ সৃষ্টি করে।
তিনি ভোট দেওয়ার ভিডিওটি শাসক দলের নেতাকে দেখান। বুঝিয়ে দেন যে তিনি তৃণমূল পার্টিকেই ভোট দিয়েছেন। শাসক শিবিরের বিশ্বাস অর্জনের জন্য তিনি এক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটান। রায়গঞ্জের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে এই ঘটনা সকলকে বিস্মিত করেছে।
ওই মহিলা কীভাবে এমন কাজ করলেন? স্থানীয় সূত্রের খবর অনুযায়ী, তিনি ভোটার এলাকায় বিজেপি কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সম্প্রতি তিনি তৃণমূলের সাথে যোগাযোগ শুরু করেন। কিন্তু দলের অন্দরে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে না পেরে, নিজেকে তৃণমূলের সৈনিক প্রমাণ করার জন্য তিনি নিজের ভোট প্রকাশ্যে আনেন। উত্তর দিনাজপুর জেলার তৃণমূলের সহ-সভাপতি অরিন্দম সরকারকে ভিডিও করে দেখানো হয়। এখন প্রশ্ন হল, তিনি কি তৃণমূলের বিশ্বাস অর্জন করতে পারবেন? এটা ঘাসফুল শিবিরই বলতে পারবে। তবে এই ঘটনা যে নিয়মের বিরুদ্ধে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
রায়গঞ্জ বিধানসভা আসনে ত্রিমুখী লড়াই চলছে। একদিকে রয়েছেন তৃণমূলের কৃষ্ণ কল্যাণী, অন্যদিকে বিজেপির মানসকুমার ঘোষ, এবং কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছেন মোহিত সেনগুপ্ত। লোকসভা ভোটের বিধানসভাভিত্তিক ফলাফল অনুযায়ী, রায়গঞ্জ আসনে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে।