‘প্রমাণ লোপাট’: আর জি কর কাণ্ডে ধর্ষণ-খুন মামলাতে সিবিআই গ্রেফতার করলো অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও তালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে !
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের এক চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় সেই হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ গ্রেফতার হয়েছেন। এর আগে, দুর্নীতির একটি মামলায় সিবিআই তাকে গ্রেফতার করেছিল। এবার তাকে ধর্ষণ ও হত্যার মামলায়ও গ্রেফতার করা হয়েছে। একই সঙ্গে, টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলও গ্রেফতার হয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ নষ্ট এবং এফআইআর দেরিতে দায়ের করার অভিযোগ উঠেছে। সিবিআই জানিয়েছে, রবিবার সকালে অভিজিৎকে আদালতে হাজির করানো হবে এবং সন্দীপ ঘোষের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
একজন সিভিক ভলান্টিয়ার যিনি এক চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের মামলায় আগেই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন, বর্তমানে সিবিআই হেফাজতে আছেন। শনিবার এই মামলায় গ্রেফতারের সংখ্যা তিনে পৌঁছেছে। সল্টলেকের স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্নায় বসা চিকিৎসকরা প্রাক্তন অধ্যক্ষের গ্রেফতারের খবর শুনে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন এবং নানা রকম স্লোগান দেন। আরজি কর মামলার ৩৬ দিন পর প্রাক্তন অধ্যক্ষের গ্রেফতারের ঘটনায় পড়ুয়া ও জুনিয়র ডাক্তাররা মন্তব্য করেন, ‘‘এটি বিচারের দিকে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া। কিন্তু ঘটনার পর ৩৫ দিন কেন লাগল, সেটাও একটি প্রশ্ন।’’
উল্লেখ্য যে, আর্থিক দুর্নীতির মামলার তদন্তের জন্য ইডি শুক্রবার সন্দীপের পৈতৃক বাড়ি এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ ঔষধ ব্যবসায়ীদের অফিসে তল্লাশি চালিয়েছে। এই মামলায় সন্দীপকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখা হয়েছে এবং তিনি বর্তমানে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে আছেন।
৯ অগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চারতলার সেমিনার হল থেকে এক যুবতী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে এটিকে আত্মহত্যা বলা হলেও, পরবর্তীতে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ প্রকাশ পায়। এর মধ্যেই হাসপাতালের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপের একটি মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। বাস্তবে, চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর থেকে তৎকালীন অধ্যক্ষের ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে থাকে।
অন্যদিকে, টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ অসুস্থ বলে দাবি করে গত ৫ সেপ্টেম্বর কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। সিবিআই সূত্রের খবর অনুযায়ী, শনিবার দুপুরে তিনি সিজিও কমপ্লেক্সে যান এবং জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাঁর বক্তব্যে অনেক অসঙ্গতি ধরা পড়ে। এরপর তিনি গ্রেফতার হন। টালা থানার প্রাক্তন ওসির বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগ আছে। ঘটনার পর থেকে অভিযোগ দায়ের, ময়নাতদন্ত সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর গায়েব করার অভিযোগ তোলেন।