সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানির ‘সরাসরি সম্প্রচার’ বন্ধের আর্জি জানিয়েছে রাজ্যের উকিল কপিল সিব্বল! উল্টে কড়া প্রতিক্রিয়া প্রধান বিচারপতির!
রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানির ‘সরাসরি সম্প্রচার’ বন্ধের আর্জি জানিয়েছে। প্রধান বিচারপতি ডি.ওয়াই. চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষে আইনজীবী কপিল সিব্বল আবেদন করেন যে শুনানির সরাসরি সম্প্রচার বন্ধ থাকুক। তবে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের আবেদন গ্রহণ করেনি। প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট করে দেন যে শুনানির সরাসরি সম্প্রচার বন্ধ করা হবে না।
মঙ্গলবারে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে আরজি কর মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শুরুর পূর্বে, রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেন, “আমরা মামলা শুরুর আগে ৫-১০ মিনিট কথা বলতে চাই।” এরপর তিনি শুনানির সরাসরি সম্প্রচার বন্ধের আর্জি জানান। কপিলের মতে, “বাইরে এই বিষয়টি ভিন্নভাবে উপস্থাপিত হচ্ছে। এই মামলায় জড়িত মহিলা আইনজীবীরা হুমকির মুখে পড়ছেন। আমাদের সম্মান আছে। বলা হচ্ছে যে আমরা নাকি আদালত কক্ষে হাসাহাসি করছি।” এই কারণ দেখিয়ে তিনি সরাসরি সম্প্রচার বন্ধের আবেদন করেন। কিন্তু প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট করে দেন, “সরাসরি সম্প্রচার বন্ধ করা সম্ভব নয়। এটি একটি জনস্বার্থ সংক্রান্ত মামলা।”
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কাণ্ডের শুনানিতে সিবিআই তাদের স্টেটাস রিপোর্ট পেশ করে। এই মামলা নিয়ে রাজ্য সহ সারা দেশের মানুষের নজর রয়েছে। প্রধান বিচারপতি ডি.ওয়াই. চন্দ্রচূড়ের এজলাসে এই মামলার শুনানি আরম্ভ হয়। সিবিআই-এর রিপোর্ট দেখে প্রধান বিচারপতি উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং রিপোর্ট পড়ে তিনি বিচলিত হন বলে জানান।
প্রধান বিচারপতি ডি.ওয়াই. চন্দ্রচূড় জানতে চেয়েছেন যে ময়নাতদন্তের চালান দেওয়া হয়েছিল কিনা, ময়নাতদন্তের পদ্ধতি মেনে চলা হয়েছে কিনা, এবং তথ্যপ্রমাণ নষ্ট হওয়াসহ পুরো বিষয়টি রিপোর্টে উল্লেখ আছে কিনা। তিনি বলেন, তদন্ত রিপোর্ট পড়ে দেখা গেছে যে উত্থাপিত প্রশ্নগুলি তদন্তে আলোচিত হয়েছে। রিপোর্ট পড়ে তাঁর মন্তব্য, সিবিআই তদন্তে সক্রিয় রয়েছে। তদন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে আছে। কিন্তু রিপোর্ট প্রকাশিত হলে তদন্তের প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে। প্রধান বিচারপতি সিবিআইকে জিজ্ঞাসা করেছেন, চার্জশিট দাখিল করতে কত সময় লাগবে।
জুনিয়র ডাক্তাররা পাঁচ দফা দাবি নিয়ে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্না দিচ্ছেন। তাঁরা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, তাঁদের দাবি পূরণ না হলে অবস্থান উঠবে না। গত কয়েক দিনে রাজ্য সরকার এবং আন্দোলনকারীদের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। জট কাটানোর জন্য শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী আন্দোলনকারীদের মঞ্চে পৌঁছেছিলেন এবং পরে তাঁদের কালীঘাটের বাড়িতে বৈঠকের জন্য ডাকা হয়। কিন্তু সরাসরি সম্প্রচারের দাবি না মানায় বৈঠক বাতিল হয়। সোমবার রাজ্যের শর্ত মেনে নিয়ে জুনিয়র ডাক্তাররা সরাসরি সম্প্রচারের দাবি থেকে সরে আসেন। এই বিষয়টি গত কয়েক দিন ধরে রাজ্য রাজনীতিতে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল। মঙ্গলবারের শুনানিতেও এই সরাসরি সম্প্রচারের প্রসঙ্গ ওঠে।