অনেক হয়েছে, আমি হতাশ ও ভীত…’, আরজি করের ঘটনায় কড়া বার্তা রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর !
প্রায় ২০ দিন পরে আরজি কর কাণ্ডে তাঁর মতামত প্রকাশ করলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। যখন একদিকে সারা রাজ্য উত্তাল হয়ে উঠেছে, প্রতিবাদে সরব হয়েছে সব মহল, বিভিন্ন হাসপাতালে আন্দোলন চলছে, এবং রাজ্যের মানুষ বিচারের দাবিতে পথে নেমেছে, এমনকি রাষ্ট্রপতিকে চিঠি পাঠিয়েছে আম জনতা, তখন কলকাতার তরুণী ডাক্তারের এই মর্মান্তিক ঘটনায় ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতি আরজি করের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় বলেন, ‘এমন ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। এটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। সমাজে এই ধরনের ঘটনা কীভাবে ঘটে?’ কোনও সভ্য সমাজে কন্যা ও বোনেরা এই ধরনের নৃশংসতার শিকার হওয়া উচিত নয়। এই ধরনের অপরাধ বন্ধ করা জরুরি।’ ডাক্তার, নাগরিক সমাজ, শিক্ষক সবাই প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন, কিন্তু অপরাধীরা এখনও ধরা পড়েনি, এই নিয়ে রাষ্ট্রপতি হতাশা প্রকাশ করেছেন।
রাষ্ট্রপতি মহিলাদের উপর অত্যাচারের ঘটনায় গভীরভাবে ক্ষুব্ধ। পিটিআই-এর সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘এটা যথেষ্ট, আর নয়।’ তিনি সাধারণ মানুষের বিবেক জাগ্রত করার পক্ষে মত দেন এবং বলেন, ‘সমাজের প্রয়োজন সৎ ও নিরপেক্ষ আত্মদর্শন। নিজেকে কঠিন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা শিখুন।’ নির্ভয়াকাণ্ডের ১২ বছর পরেও এই ধরনের ঘটনা ঘটার প্রশ্ন তুলে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘নির্ভয়া কাণ্ডের পরেও এমন ঘটনা ঘটছে। সমাজ কি সেই ভয়াবহ ঘটনা ভুলে গেছে? সবার স্মৃতিশক্তি যেন লোপ পেয়েছে। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। দুঃখজনক বিষয় হল, আজও মহিলাদের সাধারণ মানুষ কম শক্তিশালী, কম সক্ষম, কম বুদ্ধিমান হিসেবে দেখে।’
কলকাতার আরজি কর হাসপাতালের এক তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় দেশজুড়ে আন্দোলন চলছে। কলকাতা সহ বিভিন্ন জেলায় নাগরিক মঞ্চ বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। একাধিক রাজনৈতিক দল ময়দানে নেমেছে। ঘটনার পর ১৯ দিন কেটে গেলেও বিক্ষোভ-আন্দোলন অব্যাহত আছে। এর মধ্যেই রাষ্ট্রপতি তাঁর মতামত প্রকাশ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আরজি কর কাণ্ড নিয়ে ইতিমধ্যেই তাঁর মতামত প্রকাশ করেছেন। মহারাষ্ট্রের এক সম্মেলনে তিনি মহিলাদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে উদ্বেগ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘নারী নিরাপত্তা খুবই জরুরি। আমি প্রতিটি রাজ্যের সরকারকে বলতে চাই, মহিলাদের উপর অত্যাচারের ক্ষেত্রে অপরাধের কোনো ক্ষমা নেই। অপরাধী যে কেউ হোক না কেন, তাকে ছাড় দেওয়া উচিত নয়।’
স্বাধীনতা দিবসে তিনি আরজি করের নাম উল্লেখ না করেও মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘আমি মানুষের ক্ষোভ এবং অসন্তোষের কারণ অনুভব করতে পারি। আমরা মেয়েদের যথাযথ সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছি।’