‘এক দেশ, এক নির্বাচন’? প্রক্রিয়া চালু করার তৎপরতার ইঙ্গিত কেন্দ্রের জোট সরকারের মধ্যে!
বিজেপি আর লোকসভায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখতে পারেনি। এখন এনডিএ জোটের গুরুত্ব বেশি। কেন্দ্রের জোট সরকার ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ প্রক্রিয়া চালু করার জন্য সক্রিয়। পিটিআই সংবাদ সংস্থা এক অজ্ঞাতনামা সূত্র অনুসারে জানিয়েছে, এনডিএ সরকার চলতি মেয়াদেই ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ প্রক্রিয়া কার্যকর করবে। ওই সূত্র বলেছে, “এই মেয়াদেই এটি বাস্তবায়িত হবে।” এই উদ্যোগে সব দলের সমর্থন পাওয়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
বিজেপি দীর্ঘদিন ধরে ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ প্রণালী চালু করার প্রতি আগ্রহী। গত মাসে লালকেল্লায় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী মোদী এই বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন। তাঁর মতে, পরপর নির্বাচনের ফলে দেশের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি হয়। তিনি দাবি করেছিলেন যে, সারা দেশ এই প্রক্রিয়াকে সমর্থন করছে এবং রাজনৈতিক দলগুলিকে এই পদ্ধতিকে সমর্থন করার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন।
বিজেপি বিরোধী দলগুলি শুরু থেকেই ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে আপত্তি তুলেছে। তাদের দাবি, মোদী সরকার এই নীতির মাধ্যমে পরোক্ষভাবে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ধরনের ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে, যা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং সংসদীয় গণতান্ত্রিক ধারণার বিরোধী। বিজেপি-বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলির মতে, ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি প্রযুক্ত হলে, লোকসভার প্রভাবে বিধানসভাগুলি অস্তিত্ব হারাবে। তারা আশঙ্কা করছে যে, সাংসদ এবং বিধায়ক নির্বাচনের বৈচিত্র্য বিজেপির জোরালো প্রচারের কারণে নষ্ট হবে, এমন অভিযোগ কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম সহ বিভিন্ন বিরোধী দল উত্থাপন করেছে।
অন্যদিকে, কেন্দ্র যুক্তি দিয়েছে যে এই পদ্ধতি চালু হলে, ভোট প্রক্রিয়ার জন্য যে বৃহৎ খরচ হয়, তা হ্রাস পাবে। ভোটের আদর্শ আচরণ বিধির কারণে সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ বারবার ব্যাহত হবে না, এবং সরকারি কর্মীদের উপর থেকে ভোটার তালিকা তৈরির চাপও কমে যাবে।
‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ প্রক্রিয়ার বাস্তবসম্মততা যাচাই করতে একটি কমিটি গঠিত হয়েছিল, যার নেতৃত্বে ছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। গত মার্চে, কমিটিটি রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে বর্তমান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে তাদের রিপোর্ট জমা দিয়েছে। সূত্র অনুযায়ী, কোবিন্দের নেতৃত্বে কমিটি এই প্রক্রিয়ার সমর্থনে মতামত প্রদান করেছে।