‘দুষ্কৃতী হামলা’ জলপাইগুড়ি রামকৃষ্ণ মিশনে!সরাসরি মমতাকে নিশানা নরেন্দ্র মোদীর !
রামকৃষ্ণ মিশন এবং ভারত সেবাশ্রম জাতীয় প্রতিষ্ঠানের সাধু-সন্তদের ভূমিকা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শনিবারের মন্তব্য রাজ্য রাজনীতিতে ঝড় তুলেছে। এই বিতর্কের মধ্যেই জলপাইগুড়ির রামকৃষ্ণ মিশনে হামলার অভিযোগ উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যকে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে ব্যবহার করেছেন এবং মমতাকে লাগাতার আক্রমণ করছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও পাল্টা জবাব দিচ্ছেন। এবার মোদী রামকৃষ্ণ মিশনে হামলার অভিযোগকে ভোটের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছেন, তাঁর দাবি মুখ্যমন্ত্রীর হুমকির ফলেই তৃণমূলের গুন্ডারা সাহস পেয়েছে।
ঝাড়গ্রামের সভা থেকে মোদী বলেন, “রামকৃষ্ণ মিশন, ইস্কন, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ হল বাংলার আধ্যাত্মিক পরিচয়। বর্তমানে এখানকার মুখ্যমন্ত্রী নিজেই হিন্দু সন্তদের হুমকি দিচ্ছেন, যার ফলে তৃণমূলের গুন্ডারা আরও সাহসী হয়ে উঠেছে। গত রাতে জলপাইগুড়ির রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমে হামলা হয়েছে, কর্মীদের মারধর করা এবং হুমকি দেওয়া হয়েছে। দেশবাসী কখনও ভাবেনি যে বাংলায় রামকৃষ্ণ মিশনকে হুমকি দেওয়া হবে।” তৃণমূলও মোদীর বক্তব্যের প্রতিউত্তর দিয়েছে। তাদের দাবি, রামমন্দির উদ্বোধনে মোদীকে রামের চেয়ে বড় করে দেখানো হয়েছে, যা হিন্দু ধর্মের প্রতি বিজেপির চেয়ে বড় অপমান নয়।
জলপাইগুড়ির রামকৃষ্ণ মিশন শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। মিশনের দাবি, ‘সেবক হাউস’ নামে পরিচিত শিলিগুড়ির একটি বাড়িতে তাদের কয়েকজন সন্ন্যাসী বাস করেন। গত শনিবার রাতে প্রায় ৩০-৩৫ জন দুষ্কৃতী আগ্নেয়াস্ত্র সহ বাড়িতে প্রবেশ করে সন্ন্যাসীদের উপর আক্রমণ করে এবং তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেয়। পাঁচ সন্ন্যাসী এবং বাড়ির নিরাপত্তারক্ষীদের নিউ জলপাইগুড়ি রেলস্টেশনের কাছে এলাকায় নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। স্বামী শিবপ্রেমানন্দ মহারাজ জানান, সেবক রোডের চার মাইলে অবস্থিত প্রায় দুই একর জমি সহ দোতলা বাড়িটি সুনীলকুমার রায় দান করেছিলেন। পরবর্তীতে জমির মালিকানা নিয়ে মামলা হলেও আদালতের রায় মিশনের পক্ষে যায়। মিশন কর্তৃপক্ষ সেখানে স্কুল তৈরির পরিকল্পনা করেছেন। অভিযোগ উঠেছে, জমি মাফিয়ারা সেখানে হামলা চালিয়েছে। স্বামী শিবপ্রেমানন্দ মহারাজ বলেন, “শনিবার গভীর রাতে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ জন লোক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এখানে ঢুকে পড়েন। নিরাপত্তারক্ষী সহ অন্যান্য কর্মীদের হাত বেঁধে এনজেপি সংলগ্ন এলাকায় নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দেন। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।”
শিলিগুড়ির ডিসিপি (সদর) তন্ময় সরকার জানিয়েছেন, ‘‘রামকৃষ্ণ মিশনের পক্ষ থেকে অভিযোগ আসার পর পুলিশ জমির উপর দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে তদন্ত চলমান।’’