‘খরচ কমাতে খুব দরকার ছাড়া কোনও নিয়োগ নয়’,অর্থ সংকটে সরকার চালাতে নাজেহাল মমতা ব্যানার্জী !
রাজ্যের ঋণের বোঝা আগে থেকেই পরিষ্কার, এবং বিরোধীরা এ নিয়ে কটাক্ষ করছেন অনেক। সম্প্রতি, খরচ হ্রাসের লক্ষ্যে নিয়োগে কাটছাঁটের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মন্তব্য অনুযায়ী, অত্যন্ত প্রয়োজন ছাড়া কোনও নিয়োগ না করার কথা বলা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পুরনো কর্মীদের ছাঁটাইয়ের প্রশ্নও উঠেছে।
বিভিন্ন দফতর থেকে রাজ্যের নিয়োগের প্রস্তাব এসেছিল। পুলিশ, শিক্ষা, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, শ্রম, কৃষি, পূর্ত সহ বিভিন্ন দফতরে শূন্যপদ পূরণের প্রস্তাব নবান্নে পাঠানো হয়েছিল। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্য সচিব ও অর্থ সচিব স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে এত বেশি লোক নিয়োগ সম্ভব নয়। সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ শূন্যপদ পূরণ করা যেতে পারে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে প্রয়োজনের বেশি নিয়োগ করা হবে না।
গত সোমবার নবান্নে মুখ্যসচিব ভগবতী প্রসাদ গোপালিকা এক বৈঠক আহ্বান করেন। সরকারের বিভিন্ন দফতরের সচিবরা সেই বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে মুখ্যসচিব স্পষ্ট করে বলেন যে, শূন্যপদ থাকলেও তাড়াহুড়ো করে নিয়োগ করা যাবে না, বরং বিবেচনাপূর্ণভাবে নিয়োগ করতে হবে। খরচ হ্রাসের জন্য কিছু উন্নয়ন পর্ষদ বন্ধ করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই এমন কঠোর পদক্ষেপের রূপরেখা তৈরি করেছেন। নবান্নের বৈঠকে তিনি উল্লেখ করেছেন যে, অনেক সরকারি দফতরে এমন কর্মী আছেন যারা কোনও কাজ না করেই মাসের পর মাস শুধু বেতন পাচ্ছেন। তাদের জন্য আলো এবং পাখা চলছে, কিন্তু কাজের কোনও ফলাফল হচ্ছে না। এই ধরনের অবস্থা আর বহাল থাকবে না।
মমতার মন্তব্যের পর, মুখ্যসচিব সোমবার একটি বৈঠক ডাকেন। ‘স্টেট লেভেল কমিটি অন রেশনালাইজেশন অ্যান্ড অপটিমাল ইউটিলাইজেশন অফ হিউম্যান রিসোর্সেস’ নামে একটি সরকারি কমিটি আছে। ওই বৈঠকে, অর্থ সচিব মনোজ পন্থ জানান, কোনও সরকারি দফতর নতুন নির্মাণের জন্য এখনই প্রস্তাব পাঠাবে না। নতুন নির্মাণের কোনও প্রস্তাব এখন অনুমোদন পাবে না। তবে, পুরনো কর্মীদের ছাঁটাই করা হবে না, প্রয়োজনে তাদের অন্য দফতরে স্থানান্তরিত করা হবে।
বিরোধী শিবির সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের প্রতি কটাক্ষ করা থেকে বিরত থাকেনি। বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল মন্তব্য করেন, “সরকারের চুরি রোধ করা উচিত ছিল, কিন্তু তা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এখন তারা নিয়োগ বন্ধ করে রাজ্যের নবীন প্রজন্মের সামনের পথ রুদ্ধ করছে, যা এক অন্যায়।”