চাপে পড়ে ৫ দফার মধ্যে ৩ দফা মানলেন মমতা! নির্দেশ কার্যকর হলে তবেই উঠবে কর্মবিরতি,ঘোষণা জুনিয়র ডাক্তারদের !
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মেনে নিয়েছেন। কলকাতার নগরপাল বিনীত গোয়েল, স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা ডা. কৌস্তভ নায়েক, এবং স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. দেবাশিস হালদার পদত্যাগ করছেন। কলকাতা পুলিশের ডিসি নর্থ অভিষেক গুপ্তাও সরানো হচ্ছেন।
রাজ্য সরকারের ‘শেষ চেষ্টা’তে সাড়া দিয়ে সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে পৌঁছান আন্দোলনকারীরা। নিজেদের পাঁচ দফা দাবিতে অনড় থেকেই তারা বৈঠকে বসেন। পাঁচ দফার মধ্যে অন্যতম ছিল কলকাতার নগরপাল, স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা এবং স্বাস্থ্য অধিকর্তার অপসারণ। এছাড়াও হাসপাতালের নিরাপত্তা ও পরিকাঠামো উন্নয়নের দাবি ছিল। রাজ্য তাদের অধিকাংশ দাবি মেনে নেয়।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, “আমাদের বৈঠক ছয়টা থেকে চলেছে। প্রক্রিয়া চলেছে রাত ১১টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত। ৪২ জন সই করেছেন। আমাদের পক্ষ থেকে মুখ্যসচিব মিনিটসে সই করেছেন।” তিনি বলেন, “অভিনন্দন জানাই যে তারা এসেছেন এবং বসেছেন। আমরা দু’পক্ষই আলোচনায় খুশি। তাদের কথা শুনেছি, আমাদের কথাও বলেছি। তাদের বলার অধিকার দিয়েছি। বড়দের সম্মান দেখাতে হয়, তাই তাদের বলতে দিয়েছি। সিবিআই এই মামলাটি দেখছে। শ্রদ্ধা জানিয়ে শুরু হয়েছে।” “সন্দীপ ঘোষের বিষয়ে তাদের দাবি ছিল। সিবিআই তদন্ত করছে। স্বাস্থ্যসচিব, ডিএমই, ডিএইচএসের পদত্যাগের দাবি ছিল। কিন্তু সবাইকে সরিয়ে দিলে প্রশাসন চলবে কীভাবে? তবে স্বাস্থ্য অধিকর্তা ও স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তাকে আমরা সরিয়ে দিচ্ছি, কারণ তারা বলেছে তাদের উপর আস্থা নেই। তাই সরানো হচ্ছে। তবে তাদের দুজনকে আমরা অসম্মান করিনি। চারটি দাবির মধ্যে তিনটি মেনে নিয়েছি।” “আগামীকাল চারটের পর সিপি পরিবর্তন হবে। কলকাতা পুলিশের সিপি-সহ আরও পরিবর্তন হবে। কাল বিস্তারিত জানানো হবে। বিনীত যেখানে কাজ করতে চেয়েছেন, সেখানেই তাকে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সারাক্ষণ কাজ করে, তাদের দিকটাও দেখা উচিত।” “ওইদিন নর্থ ডিসি প্রথমে পৌঁছেছিলেন। তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে, তা জানানো হবে।” “মুখ্যসচিব নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিব থাকবেন। কার কী দাবি থাকবে, সেটা সেখানে জানানো হবে।”
স্বাস্থ্যভবনের সামনে আন্দোলন মঞ্চে দাঁড়িয়ে জুনিয়র ডাক্তাররা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী সিপিকে অপসারণের আশ্বাস দিয়েছেন, যা আমাদের প্রাথমিক দাবি ছিল। তিনি তাঁকে সরিয়ে দেবেন বলেছেন, এবং আজ তা হয়েছে। এটি আন্দোলনের এক বড় জয়।” “স্বাস্থ্যশিক্ষা ও স্বাস্থ্য অধিকর্তার অপসারণও একটি বড় জয়।” “ডিসি নর্থ অভয়ার বাবা-মা কী টাকা দিতে চেয়েছিলেন, তাঁকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।” “আমাদের আন্দোলনের চাপে রাজ্য প্রশাসন নতি স্বীকার করেছে।” “দুর্নীতি এবং তথ্য প্রমাণ লোপাটের দুষ্ট চক্র নিয়ে আলোচনা হয়েছে, এবং এর উপর আলোচনা আবার হবে। এর বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেব না।” “কাল শুনানি হবে, এরপর আমরা সিদ্ধান্ত নেব। তার আগে নয়।”