‘সংখ্যালঘু অনুপ্রবেশের ফলে জনবিন্যাস পরিবর্তিত হচ্ছে’, এর দায় কার? বিশ্বশর্মার মন্তব্যে শোনা যাচ্ছে শুভেন্দুর প্রতিধ্বনি?
বঙ্গ বিজেপি বারবার অনুপ্রবেশের প্রশ্নে রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করেছে। লোকসভা নির্বাচনে এই ইস্যুতে তৃণমূলকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করেছে পদ্মশিবির। সংখ্যালঘু প্রসঙ্গ এবং অনুপ্রবেশ নিয়ে রাজ্যের জনবিন্যাস পরিবর্তনের আশঙ্কা তুলে ধরে কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব আক্রমণ করেছে। শুভেন্দু অধিকারী যেদিন সংখ্যালঘু মোর্চা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করেন, এবং হিন্দুদের নিয়ে চলার ইঙ্গিত দেন, সেই দিনই অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা সংখ্যালঘু অনুপ্রবেশ নিয়ে কঠোর অবস্থান নেন। এরপর বঙ্গ বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য সংখ্যালঘু অনুপ্রবেশ নিয়ে তাদের কঠোর অবস্থান স্পষ্ট করেন।
বুধবার অসমের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ‘সংখ্যালঘু অনুপ্রবেশের ফলে জনবিন্যাস পরিবর্তন হচ্ছে, যা একটি বড় সমস্যা। এটি আমার কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। বর্তমানে অসমে মুসলিম জনসংখ্যা ৪০ শতাংশ, যা ১৯৫১ সালে ১২ শতাংশ ছিল। এটি আমার জন্য কেবল রাজনীতির প্রশ্ন নয়, বরং জীবন-মরণের প্রশ্ন।’
বিজেপির অনুপ্রবেশ সম্পর্কিত আক্রমণের জবাবে, তৃণমূল বারংবার বিএসএফের প্রতি অভিযোগ তুলেছে। সীমান্ত সুরক্ষার দায়িত্ব বিএসএফের হওয়ায়, তাদের উপস্থিতিতে অনুপ্রবেশ ঘটার বিষয়টি তৃণমূল তুলে ধরেছে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী অনুপ্রবেশের বিষয়ে দায় রাজ্যের উপর চাপিয়েছেন, বলেছেন, ‘অনুপ্রবেশকারীরা প্রথমে অসম ও পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করে, এরপর ঝাড়খণ্ড ও বিহারে যায়। আন্তর্জাতিক সীমান্তে অনুপ্রবেশ রোধের দায়িত্ব বিএসএফের। কিন্তু সীমান্ত পেরিয়ে একবার ভিতরে ঢুকে পড়লে, দায়িত্ব রাজ্যের। সেক্ষেত্রে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা এবং আটকানোর দায়িত্ব রাজ্যের।’
শুভেন্দু বিজেপির রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠকে এক বিস্ফোরক বক্তব্য দেন। তিনি ‘সব কা সাথ, সব কা বিকাশ’ স্লোগানকে বাতিল করার আহ্বান জানান এবং দলের সংখ্যালঘু মোর্চা না রাখার পক্ষে সওয়াল করেন। তাঁর মতে, বিজেপি সংখ্যালঘুদের ভোট পায় না, কিন্তু সনাতনী হিন্দুদের ভোট পায়, তাই বিজেপি তাদের পাশে থাকবে যারা দলের পাশে আছেন। পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা এই দাবি করেন। সাংবাদিক বৈঠকে শমীক ভট্টাচার্য শুধুমাত্র রাষ্ট্রবাদী মুসলমানদের প্রসঙ্গ তুলে বলেন যে বিজেপি ওই মুসলমানদের পাশে আছে। তিনি অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে বিজেপির লড়াইয়ের প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন এবং বলেন, ‘যারা চুপিসারে অনুপ্রবেশের মাধ্যমে ভারত দখলের ছক করছেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে।’ এটা আমাদের ঘোষিত নীতি।’ হিমন্ত বিশ্বশর্মা এই সুরেই তাঁর তোপ দাগেন।
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার উল্লেখ করেন, ‘এই সমস্যা কেবল অসমের নয়, পশ্চিমবঙ্গেও প্রচলিত। যারা বিশ্বাস করতে অনিচ্ছুক, তাদের উচিত ১৯৪৭ সালের জনবিন্যাস এবং বর্তমান জনবিন্যাসের তুলনা করে দেখা।’দেখুন কি বলেছেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা !