‘জল ছাড়ার কথা রাজ্য আগে থেকেই জানত’, মমতাকে পাল্টা চিঠি কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী সিআর পাতিলের !
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি এবং ডিভিসির ভূমিকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একটি চিঠি লিখেছিলেন। চার পাতার ওই চিঠিতে তিনি বন্যা পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছিলেন। শুক্রবার বিকেলে কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী সিআর পাতিল মুখ্যমন্ত্রীর চিঠির জবাব দেন।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, মাইথন এবং পাঞ্চেত রিজার্ভারগুলির পরিচালনা দামোদর ভ্যালি রিজার্ভার রেগুলেশন কমিটি বা ডিভিআরআরসি করে থাকে। পশ্চিমবঙ্গের চিফ ইন্জিনিয়াররা এই কমিটির সদস্য হন। ১৪ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্যের অনুরোধে রিজার্ভার থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ ৫০% কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে ১৭ সেপ্টেম্বর সকালে বৃষ্টি বৃদ্ধি পেয়েছিল বলে বড় বিপর্যয় এড়াতে ডিভিআরআরসি বাঁধ থেকে জল ছাড়তে বাধ্য হয়। যদিও তখন ৪.২৩ লক্ষ কিউসেকের পরিবর্তে মাত্র ২.৫ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছিল।
মন্ত্রী জানিয়েছেন যে, জল না ছেড়ে দিলে দক্ষিণবঙ্গ সহ একটি বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বড় বিপর্যয় ঘটতে পারত। তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, রাজ্য সরকারকে জল ছাড়ার পূর্বে সমস্ত তথ্য প্রদান করা হয়েছিল। ডিভিসিতে রাজ্যের প্রতিনিধি থাকায়, তার মাধ্যমে সমস্ত তথ্য আগেই দেওয়া হয়েছিল। এরপর জল ছাড়া হয়েছে। বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হলে জল ছাড়া অপরিহার্য হয়ে পড়ে, যা রাজ্য সরকার জানত। তাই পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে না জানিয়ে জল ছাড়া হয়েছে বলে অভিযোগ অসত্য। মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন যে, দুটি রিজার্ভারের ডি-সাইটেশন অর্থনৈতিকভাবে সম্ভব নয়। তবে রিজার্ভার দুটির ইনফ্লো সঠিক রাখতে বড় এলাকা জুড়ে সেডিমেন্ট ম্যানেজমেন্ট করা হবে। কেন্দ্র বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বরাদ্দ অনুযায়ী অর্থ প্রদান এবং সহযোগিতা করবে বলে চিঠিতে জানানো হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর চিঠিতে উল্লেখ করেছেন যে, ডিভিসি এই পরিমাণ জল আগে কখনও ছাড়েনি। ২০০৯ সালের পর থেকে রাজ্য সবচেয়ে খারাপ বন্যা পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে। বন্যায় এক হাজার কিলোমিটার জমি জলমগ্ন হয়েছে এবং প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়েছে। তাদের বাড়িঘর, চাষের জমি, গবাদিপশু – সবকিছুই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি এই বন্যাকে ‘ম্যান মেড বন্যা’ বলে অভিহিত করেছেন এবং জানিয়েছেন যে, এই পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকার কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না।