ইডি-সিবিআইয়ের ব্যর্থতায় ছাড়া পেতে শুরু করলো অভিযুক্তরা !অনুব্রত মন্ডলের মেয়ের পর জামিন পেলেন মানিক ভট্টাচার্য !
তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের জামিনের পর এবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মানিক ভট্টাচার্য কলকাতা হাই কোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন। বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ বৃহস্পতিবার তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন। জামিন পাওয়া সত্ত্বেও, মানিককে চারটি নির্দিষ্ট শর্ত মেনে চলতে হবে।
হাই কোর্ট পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিককে নির্দেশ দিয়েছে যে, তাঁকে তদন্তকারী অফিসারের কাছে তাঁর মোবাইল নম্বর প্রদান করতে হবে এবং নিম্ন আদালতে তাঁর পাসপোর্ট জমা দিতে হবে। তিনি কোনও সাক্ষীর সাথে যোগাযোগ করা বা তাদের উপর প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করতে পারবেন না, এবং তদন্তকারী অফিসারের অনুমতি ছাড়া তিনি বাইরে কোথাও যেতে পারবেন না।
ইডির সাথে সাথে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত করেছে সিবিআইও, কিন্তু মানিককে গ্রেফতার করেনি। মানিক আগেই সুপ্রিম কোর্ট থেকে রক্ষাকবচ পেয়েছিলেন, তাই বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের জামিন প্রদানের ফলে তাঁর জেল থেকে মুক্তির পথে কোনও বাধা ছিল না। ২৯ অগস্ট হাই কোর্টে মানিকের জামিন মামলার শুনানি সমাপ্ত হয়েছিল, কিন্তু বিচারপতি ঘোষ সেদিন রায় দান স্থগিত রেখেছিলেন।
প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়, ২০২২ সালের ১১ অক্টোবর মানিককে গ্রেফতার করা হয় ইডির দ্বারা। ইডির হেফাজতে থাকার পর, তিনি প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি ছিলেন। ২৩ মাস গ্রেফতার থাকার পর, মানিক জামিন পান। জামিনের মামলায়, তিনি জেল থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে নিজের পক্ষে সওয়াল করেন।
মানিক আগে জামিনের জন্য হাই কোর্টে আবেদন করেছিলেন। শুনানির সময় উচ্চ আদালতে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। ইডি আদালতকে জানায়, মানিকের ছোট ভাইয়ের বয়ান অনুযায়ী তারা জামিনের বিরোধিতা করছে। এই বক্তব্য শুনে মানিক কেঁদে ফেলেন। তিনি বলেন, গ্রেফতারের সময় তার ভাই যা বলেছেন, তা জামিনের বিষয়ে বিবেচনা করা উচিত নয়। সেদিন জেল থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সে শুনানিতে মানিক অংশ নিয়েছিলেন।
প্রাথমিক নিয়োগের মামলায় ইডির তদন্তে অসন্তোষের কথা প্রকাশ পেরেছে মানিকের বক্তব্যে, যেখানে তিনি বলেছেন, “তৈলাক্ত বাঁশ বেয়ে আমি দুই ফুট উঠছি এবং এক ফুট নামছি।” তাঁর অভিযোগ ছিল যে, ইডি প্রতিবার চার্জশিট গঠনের সময় দাবি করে যে তদন্ত চলমান আছে, যা জামিন পাওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। মানিক ইডির তদন্তে হতাশ বোধ করছেন এবং তিনি দাবি করেছেন যে ইডির কাছে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ নেই।
মানিক জামিনের জন্য আগে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন, কিন্তু শীর্ষ আদালত তা মঞ্জুর করেনি। তাকে বলা হয়েছিল যে জামিনের মামলার ত্রুটিগুলি সংশোধন করে হাই কোর্টে পুনরায় আবেদন করতে হবে। এরপর তিনি হাই কোর্টে জামিনের জন্য মামলা করেন। উল্লেখ্য, নিয়োগ মামলায় মানিকের সাথে তাঁর স্ত্রী ও পুত্রকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরবর্তীতে, হাই কোর্ট তাঁর স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্যকে জামিন দেয় এবং তাঁর পুত্র শৌভিক সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পান, কিন্তু মানিকের জামিন হয়নি।
প্রায় ১৫ মাস পর, তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা সুকন্যা মণ্ডল জামিন পেয়েছেন। দিল্লি হাই কোর্ট বুধবার তাঁর জামিন অনুমোদন করেছে। তিনি ১০ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন লাভ করেন। বিচারপতি নীনা বনশল কৃষ্ণা শর্তসাপেক্ষে তাঁকে জামিন দিয়েছেন।