CAA বিরোধী রাজ্যের ভূমিকা ন্যূনতম করতে অনলাইনেই নাগরিকত্বের আবেদন ও শংসাপত্র দেবে কেন্দ্র সরকার !
লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আসতেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর,চলতি লোকসভার শেষ অধিবেশন অর্থাৎ আসন্ন অন্তর্বর্তী বাজেট অধিবেশনেই ওই আইনের ধারায় যাতে সংসদীয় সিলমোহর পড়ে, তার জন্য তৎপরতা শুরু হয়েছে। সূত্রের মতে, সংসদীয় ছাড়পত্র পাওয়ার পরেই ওই আইনের ‘গেজেট নোটিফিকেশন’ জারি করবে কেন্দ্র। যাতে দ্রুত এই আইনের ধারায় নাগরিকত্ব দেওয়া সম্ভব হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, অন্তর্বর্তী বাজেট অধিবেশন ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। সেই সময়ের মধ্যে সিএএ আইনের ধারাগুলি প্রয়োজনীয় সংসদীয় ছাড়পত্র যাতে পায়, তা নিশ্চিত করাটাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের লক্ষ্য। পশ্চিমবঙ্গের মতো একাধিক বিরোধী শাসিত রাজ্য ওই প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রকে সাহায্য না করার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে। রাজ্যের ভূমিকা ন্যূনতম করতে অনলাইনে আবেদন করা ও সেই আবেদনের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সূত্র। সূত্রের মতে, নাগরিকত্ব দেওয়ার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ওয়েবসাইট ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে । কিছু নির্দিষ্ট বিষয় জানিয়ে সেখানে আবেদন করতে হবে। যেহেতু নাগরিকত্ব প্রদান কেন্দ্রের বিষয়, তাই সব তথ্য খতিয়ে দেখে যোগ্য ব্যক্তিকে অনলাইনেই নাগরিকত্ব শংসাপত্র অনুমোদন করবে কেন্দ্র সরকার ।
মূলত বাংলাদেশ থেকে আগত হিন্দু মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষকে গত লোকসভা নির্বাচনের সময়ে নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় ভাল ফল করে বিজেপি। আর ২০১৯ সালে ক্ষমতায় এসেই সিএএ পাশ করিয়ে নেয় নরেন্দ্র মোদী সরকার। ওই আইনানুযায়ী, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো মুসলিম ধর্মাবলম্বী প্রতিবেশী দেশ থেকে যদি সে দেশের কোনও ধর্মীয় সংখ্যালঘু (হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ, পার্সি ও খ্রিস্টান) ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে এ দেশে আশ্রয় নিতে চান, তাঁদের আশ্রয় দেবে ভারত। কেন ওই তালিকায় মুসলিমদের নাম নেই, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পথে নামে একাধিক সংখ্যালঘু সংগঠন ও বিরোধীরা।
এনিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন,সিএএ নিয়ে যা হচ্ছে, তা ভোটের রাজনীতি। যাঁরা রেশন পান কিংবা ভোট দেন— তাঁরা সকলেই এ দেশের নাগরিক। তাঁদের আলাদা করে সিএএ-র মাধ্যমে নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রয়োজন নেই।
এদিকে সিএএ প্রশ্নে সাম্প্রতিক বিতর্কের মূলে রয়েছেন কেন্দ্রীয় জাহাজ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক সভায় তিনি বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দেশে সিএএ কার্যকর হতে চলেছে। পশ্চিমবঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও বলেন, ‘‘ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে সিএএ চালু হয়ে যাবে। ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার সরাসরি নাম নথিভুক্তকরণের সুযোগ দেবে। সিএএ-র সঙ্গে এনআরসির সম্পর্ক নেই। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, এটা নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন, নাগরিকত্ব কাড়ার আইন নয়।’’