রাজভবন চত্বরে ছদ্মবেশী পুলিশ ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করে শ্লীলতাহানি-অভিযোগ নিয়ে মুখ খুললেন রাজ্যপাল !
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস রাজভবন চত্বরে পুলিশের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করেছেন। একইভাবে, রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকেও ‘নিষিদ্ধ’ করা হয়েছে। রাজভবন থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজভবন চত্বরে পুলিশ এবং মন্ত্রী চন্দ্রিমার প্রবেশ নিষিদ্ধ। যদি চন্দ্রিমা কোনও অনুষ্ঠানে থাকেন, তবে রাজ্যপাল সেখানে যাবেন না। অন্যদিকে, চন্দ্রিমা জানিয়েছেন যে, তৃণমূলের মহিলা মোর্চা শুক্রবার বিকেলে মৌলালি থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত রাজ্যপালের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিল করবে।
মন্ত্রী চন্দ্রিমা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ নিয়ে সরব হন। তিনি সংবাদমাধ্যমে একটি বিবৃতি প্রদান করেন। এর প্রেক্ষিতে, রাজভবন থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘রাজ্যপালের সম্মানহানি এবং তাঁর বিরুদ্ধে অসাংবিধানিক বিবৃতি প্রদানের জন্য চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তিনি কলকাতা, দার্জিলিং এবং ব্যারাকপুরের রাজভবনে প্রবেশ করতে পারবেন না।’’ এছাড়াও, চন্দ্রিমা যে কোনও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলে রাজ্যপাল সেখানে যাবেন না। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘‘চন্দ্রিমার বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে, তা জানার জন্য রাজ্যপাল দেশের অ্যাটর্নি জেনারেলের পরামর্শ চেয়েছেন।’’
সংবাদমাধ্যমে এক বিবৃতিতে চন্দ্রিমা বলেন, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। ‘‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাজ্যে আসছেন এবং রাজভবনে রাত্রিবাস করবেন। তার আগে এক মহিলা রাজ্যপালের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জমা দিয়েছেন। নারী নির্যাতনের অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। এমন ঘটনা কেন ঘটছে! রাজ্যপাল বলেছেন, তিনি ‘পিসরুম’ খুলে সকলের অভিযোগ শুনবেন এবং নিষ্পত্তি করবেন। কিন্তু সেই ‘পিসরুম’ কি নারী সম্মানের ‘পিস হাভেন’ হয়ে উঠেছে? প্রধানমন্ত্রী যখন নারীশক্তির কথা বলছেন, তখন রাজ্যপাল নারীর অপমান করছেন। এটা বাংলার মাটিতে কেন ঘটছে, যে মাটি সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক ভাবে ঐতিহ্যবাহী।’’ চন্দ্রিমার এই মন্তব্যের পরে রাজ্যপাল তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং মন্তব্যকে অসাংবিধানিক বলে মন্তব্য করেছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে একটি শ্লীলতাহানির অভিযোগ প্রকাশ পেয়েছে। অভিযোগকারিণী বলেছেন, তিনি রাজভবনের একজন অস্থায়ী কর্মী। তিনি হেয়ার স্ট্রিট থানায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি না কেবল একবার, বরং দুইবার রাজ্যপালের শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন। রাজ্যপাল এই অভিযোগ নাকচ করেছেন এবং দাবি করেছেন যে, এটি ভোটের সুবিধা নেওয়ার জন্য একটি ষড়যন্ত্র।
রাজভবন থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে এবং অনুমোদনহীন তদন্ত চালানোর জন্য ছদ্মবেশী পুলিশদের রাজভবন প্রাঙ্গণে প্রবেশ নিষেধ করেছেন রাজ্যপাল।”
বৃহস্পতিবার রাতে প্রাক্তন টুইটার হ্যান্ডলে রাজ্যপাল একটি পোস্ট দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “সত্যের জয় অবশ্যম্ভাবী। আমি কৌশলগত কোনও গল্পের সামনে মাথা নোয়াতে রাজি নই। যদি কেউ আমার বদনাম করে নির্বাচনে লাভ করতে চায়, ভগবান তাদের ভালো করুন। কিন্তু তারা আমার বাংলার দুর্নীতি ও হিংসা বিরোধী লড়াই থামাতে পারবে না।”
“Truth shall triumph. I refuse to be cowed down by engineered narratives. If anybody wants some election benefits by maligning me, God Bless them. But they cannot stop my fight against corruption and violence in Bengal.”
— Raj Bhavan Kolkata (@BengalGovernor) May 2, 2024
1 Comment
পুরোটাই একটা ষড়যন্ত্র। নিজেদের দুর্নীতির থেকে দৃষ্টি ঘোরানোর জন্য একটা অত্যন্ত নোংরা ষড়যন্ত্র করছে এই সরকার।