ভোটের আগে অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় সংসদে দাঁড়িয়ে ভোট অন অ্যাকাউন্ট বা অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন ।এটি পূর্ণাঙ্গ বাজেট নয়। ভোটের পর সরকার গঠিত হলে নবনির্বাচিত সরকার ২০২৪-২৫ সালের পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করবে। ভোটের বছরগুলিতে এইভাবেই বাজেট পেশের রীতি চলে আসছে।
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন ইঙ্গিত দিয়েছেন, ভোটের আগে এই বাজেট হয়ত বড় কোনও চমক থাকবে না। তবু তা সত্ত্বেও বাজেট ঘিরে প্রত্যাশার পারদ চড়েই থাকে।
অন্তর্বর্তী বাজেটে মাত্র ৫৮ মিনিট বক্তব্য রাখলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। এই যাবদকালে এটি তাঁর সবচেয়ে ছোট বাজেট বক্তৃতা। এর আগে অনেক দীর্ঘ বাজেট বক্তৃতা করার রেকর্ড রয়েছে নির্মলার।
এই অন্তর্বর্তী বাজেটে কি বললেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন।
মানুষের আশীর্বাদ এই সরকারকে
ভারতীয় অর্থনীতি গত দশ বছরে বিরাট পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে। অনেক নতুন উদ্যোগ শুরু হয়েছে। মানুষ এই সরকারকে আশীর্বাদ করেছেন। আমাদের লক্ষ্য সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে সুস্থ ও স্বচ্ছল ভারত তৈরি করা।
গরিব কল্যাণে জোর
আমরা সামাজিক ন্যায়ে জোর দিয়েছি। আমরা দুর্নীতি কমানোয় জোর দিয়েছি। আমরা সরকারি প্রকল্পগুলির মধ্য দিয়ে পরিষেবাকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি। গরিব কল্যাণ মানে দেশের কল্যাণ। আমরা গরিবের পকেটে টাকা দিতে চাই। দরিদ্রদের আর্থিক ক্ষমতা বাড়লে আদতে সার্বিক সমান উন্নয়ন সম্ভব।
সরকারের সবদিকে গুরুত্ব
সমাজের সমস্ত মানুষ যাতে উপকৃত হতে পারেন সেজন্য আমরা সচেষ্ট হয়েছি। আমরা খাদ্য-স্বাস্থ্যকে জোর দিয়েছি। আমরা দেশের যুব সমাজ ও দরিদ্রদের বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। ২০৪৭ সালের মধ্যে আমরা এমন ভারত চাই যেখানে সকলে সমান সুবিধা পাবেন। সামাজিক ন্যায় দিতে এই সরকার দায়বদ্ধ। আমরা সেই পদক্ষেপই করেছি।
বিদ্যুৎ সুবিধা ১ কোটি পরিবারকে
রুফটপ সোলারাইজেশনের মাধ্যমে ১ কোটি বাড়িতে ৩০০ ইউনিট ফ্রি বিদ্যুত প্রতি মাসে পৌঁছে দেওয়া হবে। বাজেটে এমনটাই ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন।
এফডিআই ইনফ্লো বেড়েছে
আর্তিক ঘাটতি জিডিপির ৫.১ শতাংশ। ২০১৪ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে এফডিআই ইনফ্লো ৫৯৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছে গিয়েছে। যা আগের দশ বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুন।
আয়করের হার অপরিবর্তিত
আয়করের সীমায় কোনও পরিবর্তন করল না কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার। নির্মলা সীতারমন বললেন, ‘আমি আয়করে কোনও পরিবর্তন করার প্রস্তাব করছি না। আমদানি শুল্ক সহ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ করের হারের জন্য একই করের হার বজায় রাখার প্রস্তাব করছি।’।
রেল-বিমানে জোর
৪০ হাজার রেলের বগিকে বন্দে ভারতে বদলে ফেলা হবে। বিমানবন্দর বাড়িয়ে ১৪৯-এ নিয়ে যাওয়া হবে। দেশীয় বিমান সংস্থাগুলি ১ হাজার নতুন বিমানের অর্ডার দিয়েছে।
পুরনো বাধা কাটিয়ে এগিয়েছে অর্থনীতি
২০১৪ সালের আগের সমস্ত বাধা আমরা সঠিক নীতি ও পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। জুলাইয়ে আমরা যখন নতুন বাজেট করব তখন সেখানে আরও বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হবে, বিনিয়োগ বাড়ানো হবে।
প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ছে
প্রতিরক্ষা খাতে অনেকটা বিনিয়োগ বাড়াতে চলেছে কেন্দ্র সরকার। নতুন বাজেটে প্রতিরক্ষা ব্যয় ১১.১% বাড়িয়ে ১১.১১ লক্ষ কোটি টাকা করা হবে। যা হবে জিডিপির ৩.৪%।
আয়ুষ্মান ভারতের গণ্ডী বাড়ল
আশাকর্মী ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের আয়ুষ্মান ভারতের সুবিধার আওতায় আনা হবে। বাজেটে এমন কথাই ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন।
মহিলাদের যোগদান বেড়েছে
গত দশ বছরে উচ্চশিক্ষায় মহিলাদের যোগদান ২৮ শতাংশ বেড়েছে। স্টেম কোর্সে ৪৩ শতাংশ যোগদান বেড়ছে যা সারা বিশ্বে সর্বোচ্চ। ফলে সার্বিকভাবে কর্মক্ষেত্রেও মহিলাদের যোগদান সর্বোচ্চ হারে বেড়েছে।
বাজেটে সবদিকে জোর সরকারের
এই সরকার জিডিপি, সরকার পরিচালনা, উন্নয়ন ও পারফরম্যান্সে জোর দিয়েছে। এশিয়ান গেমস ও প্যারা এশিয়ান গেমসে ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি পদক এসেছে যা একটা রেকর্ড।
যুব শক্তিতে জোর
স্কিল ইন্ডিয়া মিশনের মাধ্যমে ১.৪ কোটি যুবকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ৫৪ লক্ষ যুবকে নতুন ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। ৩ হাজার আইটিআই তৈরি হয়েছে। অনেকগুলি আইআইএম, আইআইটি আইআইআইটি তৈরি হয়েছে।
সচল ভারতীয় অর্থনীতি
গত দশ বছরে ২৫ কোটির বেশি ভারতীয়কে দারিদ্রতার হাত থেকে বের করে আনা গিয়েছে। করোনাকালেও ভারতের অর্থনীতি সচল থেকে। যদিও বিশ্ব অর্থনীতি সেই সময়ে টলমল অবস্থা ছিল। কিন্তু ভারত সফলভাবে এই কঠিন সময়েও নিজেদের সঠিক পথে রেখে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিয়েছে।
মানুষের জীবনযাত্রা সহজ
ভারতীয় অর্থনীতি সঠিক পথে রয়েছে। অর্থনীতি ভালো করছে। মানুষের হাতে টাকা আসছে। মানুষ নিজের মতো করে খরচ করতে পারছে। মানুষের জীবনযাত্রা অনেক সহজ হয়েছে।
কৃষককে সুবিধা
পিএম কিষাণ যোজনার মাধ্যমে ১১ কোটির বেশি কৃষককে সুবিধা। ফসল বিমার মাধ্যমে ৪ কোটির বেশি কৃষককে সুবিধা দিয়েছে মোদী সরকার। কৃষকই আমাদের অন্নদাতা। এই কথা আমাদের সরকার সবসময় মাথায় রেখে কাজ করেছে।