সারা দেশে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা কার্যকর হয়েছে। এর পরপরই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনে বলেন, ন্যায় সংহিতা চালু হওয়ার ফলে দেশের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা আসলে স্বাধীন হয়েছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার ৭৭ বছর পর, এখন বিচার ব্যবস্থা সম্পূর্ণ স্বদেশি হয়েছে।
সোমবার সংসদের লাইব্রেরি ভবনে সাংবাদিকদের সাথে মুখোমুখি হয়ে শাহ বলেন, “৭৭ বছর স্বাধীনতার পর, দেশের ফৌজদারি বিচারব্যবস্থা এখন স্বদেশি হয়েছে। এই ন্যায় সংহিতা সম্পূর্ণ ভারতীয় নীতির উপর নির্মিত। আজ নতুন এই নিয়ম কার্যকর হওয়ায়, ঔনিবেশিক আইন বাতিল হয়ে গেছে।” তিনি আরও বলেন, নতুন আইন শাস্তি নয়, বরং ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা করবে এবং এর ফলে বিচার ব্যবস্থা আরও গতিশীল হবে।
অমিত শাহ বলেন, নতুন আইনে মহিলা ও শিশুদের বিরুদ্ধে অন্যায়ের প্রতি সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি মনে করেন, এমন আইন আগেই হওয়া উচিত ছিল। শাহ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার কিছু অংশ উল্লেখ করেন, যেখানে গণধর্ষণের জন্য যাবজ্জীবন এবং নাবালিকা ধর্ষণের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। নতুন আইন কার্যকর হওয়ার পর প্রথম এফআইআর দিল্লির কমলা মার্কেট থানায় এক হকারের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে, যিনি নয়াদিল্লি রেলস্টেশনের ফুটব্রিজের সামনে জায়গা দখল করে বিক্রি করছিলেন।
উল্লেখ্য যে, ভারতে অপরাধ দমনের জন্য ঔপনিবেশিক আইনগুলি পরিবর্তন করে নতুন আইন চালু করার প্রক্রিয়া মোদি সরকার অনেক আগে থেকেই শুরু করেছে। গত বর্ষাকালীন অধিবেশনে, ভারতীয় দণ্ডবিধি (IPC) এর পরিবর্তে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (Bharatiya Nyaya Sanhita), কোড অফ ক্রিমিনাল প্রসিডিওর (CrPC) এর পরিবর্তে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (BNSS), এবং ভারতীয় সাক্ষ্য আইনের পরিবর্তে ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম (BSA) নামে তিনটি বিকল্প আইনের প্রস্তাব সংসদে পেশ করা হয়। পরবর্তী শীতকালীন অধিবেশনে, বিরোধীদের আপত্তি অগ্রাহ্য করে এই তিনটি নতুন আইন পাশ করা হয়। এর ফলে, চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের আগেই বোঝা যায় যে, অপরাধ দমনে ব্রিটিশ আমলের আইনগুলি বাতিল করা হবে। কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করেছে যে, ১ জুলাই থেকে নতুন নিয়মাবলী কার্যকর হবে।