নোংরা বক্তব্যের দায়ে মমতা ব্যানার্জীকে আইনি নোটিশ ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কার্তিক মহারাজের!
বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে কার্তিক মহারাজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন। তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেছেন যে, মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে তাঁর মানহানি হয়েছে। কার্তিক মহারাজের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য সারবত্তাহীন এবং তিনি অসত্য এবং বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করেছেন। আইনি চিঠিতে চার দিনের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জবাব চাওয়া হয়েছে, নতুবা কার্তিক মহারাজ আইনি পদক্ষেপ নেবেন। অন্যদিকে, শাসকদল বলছে, দেশে সকলেরই আইনি পদক্ষেপ করার অধিকার আছে এবং ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রতি তাদের আস্থা আছে। তবে তারা অভিযোগ করেছে যে, বিজেপি ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের মতো সামাজিক সংগঠনগুলিকে রাজনীতিতে জড়াচ্ছে।
মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের মহারাজ দাবি করেছেন যে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা সন্ন্যাসীদের বিষয়ে ‘ন্যূনতম জ্ঞান’ রাখেন না। তিনি বলেছেন যে, এই অজ্ঞানতার কারণেই মুখ্যমন্ত্রী ওই মন্তব্য করেছেন। মহারাজ আরও দাবি করেছেন যে, মুখ্যমন্ত্রীর তাঁর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ সম্পূর্ণ ‘মিথ্যা’। কার্তিক মহারাজ আইনি চিঠিতে জানিয়েছেন যে, মুখ্যমন্ত্রীর কথায় তিনি ‘ব্যথিত’ হয়েছেন এবং মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য তাঁর অনুগামীদের ভাবাবেগে আঘাত করেছে। মহারাজের আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য এই আইনি চিঠিটি মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠিয়েছেন।
উল্লেখ্য, এই বিতর্কের উৎপত্তি শনিবার থেকে। শনিবার হুগলির গোঘাটে এক নির্বাচনী জনসভায় অংশ নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সেখানে তিনি বলেন, “সব সাধু এক নয়। সব স্বজন এক নয়। আমাদের মধ্যে কি আমরা সবাই সমান? বহরমপুরের এক জন মহারাজ আছেন, কার্তিক মহারাজ। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রতি আমার অনেক শ্রদ্ধা ছিল। তারা আমার শ্রদ্ধার্ঘ্যের তালিকায় দীর্ঘদিন ধরে আছে। কিন্তু যে ব্যক্তি বলেন, তৃণমূলের এজেন্ট বসতে দেব না, তাকে আমি সাধু মনে করি না। কারণ সে সরাসরি রাজনীতি করে দেশের ক্ষতি করছে।”
রবিবার রাজ্যের ভোট প্রচারে এসে মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পুরুলিয়া ও বিষ্ণুপুরের জনসভা থেকে তিনি তৃণমূল সরকারের উপর সাধুসন্তদের অপমানের অভিযোগ আনেন। বিষ্ণুপুরের সভায় মোদী বলেন, ‘‘তৃণমূল সাধুসন্তদের অপমান করছে। ইসকন, রামকৃষ্ণ মিশন এবং ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ বিপদে মানুষের পাশে থেকেছে এবং বাংলার গৌরব বৃদ্ধি করেছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, এই সাধুরা ও সংগঠনগুলি দেশের ক্ষতি করছে। আমার অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মুসলিম কট্টরপন্থীদের চাপে ভোটের জন্য সাধুদের ও মহান সংগঠনগুলিকে অপমান করছেন এবং বদনাম করছেন। হিন্দুদের ভাগীরথীতে ডুবিয়ে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। এই কথা ভেবেচিন্তে বলা হয়েছে এবং ভোটব্যাঙ্কের জন্য সাধুদের অপমান করা হচ্ছে।’’