সকাল-সকাল কোর্টে এসে আত্মসমর্পণ কয়লা পাচার মামলায় মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালা!
কয়লা পাচার মামলার প্রধান অভিযুক্ত অনুপ মাজি, ওরফে লালা, আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে সুপ্রিম কোর্টের সুরক্ষা অধীনে থাকা লালা কে গ্রেফতার করা যেত না। তবে এই মামলায় চার্জশিট দাখিল করে তদন্ত সমাপ্তির জন্য কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। সিবিআই আগামী ২১ মে মামলার চূড়ান্ত চার্জশিট পেশ করতে পারে, এরপর শুরু হবে বিচার প্রক্রিয়া।
এদিকে, সিবিআই লালাকে হেফাজতে না পেয়ে বা জিজ্ঞাসাবাদ না করে কীভাবে চূড়ান্ত চার্জশিট দেওয়া সম্ভব ছিল তা নিয়ে প্রশ্ন ছিল। বিচারকের কাছে সিবিআই এই প্রশ্ন তুলেছিল।
বিচারক জানিয়েছেন যে, লালা যদি গ্রেফতারির ক্ষেত্রে রক্ষাকবচ পান, তবুও সিবিআই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পর সিবিআই লালার খোঁজে অভিযান শুরু করেছে, কিন্তু তাঁর বাড়িতে গিয়ে তাঁকে খুঁজে পায়নি।
কাকতালীয়ভাবে, সোমবারেই আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। পরদিন, সেখানকার বিশেষ সিবিআই আদালতে লালা আত্মসমর্পণ করেন। আত্মসমর্পণের পর, লালার আইনি প্রতিনিধিত্বের জন্য একজন কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী আসানসোলে আগমন করেছেন।
উল্লেখ্য, সিবিআইয়ের সাথে সাথে কয়লা পাচার মামলার তদন্ত করছে ইডি। ইডির মামলায় লালার কোনও রক্ষাকবচ নেই। এই কারণে, অন্য তদন্তকারী সংস্থা লালাকে গ্রেফতার করার পথে হাঁটবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন জাগছে।
২০২০ সালে, সিবিআই কয়লা পাচার মামলার তদন্ত আরম্ভ করে। রাজ্যের রেলের বিভিন্ন সাইডিং এলাকা থেকে কয়লা চুরির ঘটনা সামনে আসার পর, প্রথমে আয়কর দফতর এবং পরে সিবিআই এই কাণ্ডের তদন্তে নামে। লালার বাড়ি এবং অফিসে তল্লাশি চালিয়ে, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়। লালার সহযোগী গুরুপদ মাজি সহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। যদিও তিনজন জামিন পেয়েছেন, গুরুপদ এখনও দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি রয়েছেন।
সিবিআই সূত্রে প্রকাশ, লালা এবং গরু পাচারে অভিযুক্ত এনামুল হকের মধ্যে বোঝাপড়া ছিল। কয়লা পাচারে এনামুলের ‘সিন্ডিকেট’ থেকে সাহায্য নিত লালা। উত্তরবঙ্গ এবং প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতে পাচার কার্যক্রম চালানো হত। সিবিআই দাবি করেছে, রাজনৈতিক মদতের সাথে সাথে লালার পুলিশ-প্রশাসন, ইস্টার্ন কোল্ডফিল্ড এবং রেলকর্তাদের একাংশের সাথেও যোগাযোগ ছিল।