‘আধার কার্ড নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়’, বাতিলও হতে পারে কলকাতা হাইকোর্টকে জানাল UIDAI!
আধার কার্ড কি নাগরিকত্ব বা বাসস্থানের প্রমাণ হিসেবে গণ্য হয়? এ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে নানা প্রশ্ন ওঠেছে এবং কিছু বিভ্রান্তিও রয়েছে। তবে সম্প্রতি ইউনিক আইডেনটিফিকেশন অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (UIDAI) এ বিষয়ে সকল প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেছে।
আধার নম্বর নাগরিকত্ব বা বাসস্থানের প্রমাণ নয়। গত বৃহস্পতিবার, ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (UIDAI) কলকাতা হাইকোর্টে জানিয়েছে যে, আধার নথিভুক্তি ও আপডেট আইনের অনুযায়ী, একটি আধার নম্বর কোনো ব্যক্তির নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে গণ্য হয় না। সম্প্রতি এক শুনানিতে UIDAI এই বিষয়টি স্পষ্ট করেছে।
তাদের তরফে কলকাতা হাইকোর্টে বৃহস্পতিবার জানানো হয়েছে যে আধার নম্বর নাগরিকত্ব বা বাসস্থানের প্রমাণপত্র নয়। ইউআইডিএআইয়ের তরফে আইনজীবী কলকাতা হাইকোর্ট একথা জানিয়ে দিয়েছেন।
আইনজীবী লক্ষ্মী গুপ্তা উল্লেখ করেছেন যে আধার কার্ড সেই সব নাগরিকদের প্রদান করা হয় যারা ভারতে অন্তত ১৮২ দিন অবিচ্ছিন্নভাবে বসবাস করেছেন, যাতে তারা সরকারি সুবিধা পেতে পারেন। জয়েন্ট ফোরাম এনআরসির বিরুদ্ধে একটি পিটিশন দায়ের করেছিল, যেখানে আধার আইন ২০২৩-এর ধারা ২৮ বাতিলের দাবি করা হয়েছিল। তবে আইনজীবী বলেছেন, UIDAI এমন কোনও বিদেশির আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় করতে পারে যিনি ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও ভারতে অবৈধভাবে বসবাস করছেন।
প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে জয়েন্ট ফোরাম একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিল। আধার কার্ড বাতিলের ঘটনায় বাংলায় যে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, তা নিয়ে জয়েন্ট ফোরাম তথ্য চেয়েছিল। ফোরামের আইনজীবী ঝুমা সেন উল্লেখ করেছিলেন যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের বক্তব্যে অনেক সময় বিভ্রান্তি এবং বৈপরীত্য সৃষ্টি হয়। সিএমও থেকে এই বিষয়ে একটি চিঠি পিএমওতে পাঠানো হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে, UIDAI জানিয়েছিল যে এটি একটি কারিগরি ত্রুটি।
আধার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, এই পিটিশনের উপর শুনানি অনুচিত কারণ এতে উল্লিখিত ব্যক্তিরা ভারতীয় নাগরিক নন। পাসপোর্ট কর্তৃপক্ষ অথবা বিদেশি আইন অনুযায়ী কাজ করা সংস্থাগুলি থেকে আধার কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে পারে।
ফোরামের পক্ষ থেকে আইনজীবী বলেছেন, এটি পেছনের দরজা দিয়ে NRC প্রয়োগের প্রচেষ্টা। তিনি আরও জানান, কলকাতা হাইকোর্টের একক বেঞ্চ এই ধরনের আধার বাতিলের বিষয়ে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। অন্যদিকে, এএসজি অশোক কুমার চক্রবর্তী বলেছেন যে এই জনস্বার্থ মামলাটি চালিয়ে নেওয়া যায় না কারণ পিটিশনে আধার আইনের ৫৪ ধারা চ্যালেঞ্জ করা হয়নি। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কোনও দেশের সার্বভৌমত্ব কি চ্যালেঞ্জ করা সম্ভব?