যেসব লক্ষণে বুঝবেন আপনার স্বামী বা স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িয়েছে!
বিবাহের মতো চির বন্ধনের সম্পর্ক ইদানিং ঠুনকো হয়ে গিয়েছে। দু-একটি বিষয়ে মতের অমিল হলেই এখন বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলছেন অনেক দম্পতি। অধিকাংশ দম্পতি নিজের অবস্থান থেকে এক চুলও সরতে চান না। তাই বিবাহের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নির্দ্বিধায় চোখের পলকে ভেঙে দিচ্ছেন অনেকেই।
যারা বিবাহবিচ্ছেদে যেতে পারছেন না বা যেতে চাচ্ছেন না তাদের মধ্যে পরকীয়ার মত অবৈধ একটি সম্পর্কে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়।
কিন্তু কিভাবে বুঝবেন আপনার স্বামী বা স্ত্রী কোনো পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়েছেন কিনা? চলুন জেনে নেই কি কি লক্ষণে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার সঙ্গী তথা স্বামী বা স্ত্রী পরকীয়া করছেন কিনা।
১. ফোন বা ইন্টারনেটে অতিরিক্ত আসক্ত হয়ে পড়েন
আপনার সঙ্গী ফোনের পেছনে কতটা সময় ব্যয় করছেন সেদিকে নজর রাখুন। একসাথে থাকলে বা ঘুরতে গেলে যদি তিনি ফোন নিয়েই ব্যস্ত থাকেন তাহলে তা নিশ্চিতভাবে অন্য একটি সম্পর্কেরই ইঙ্গিত।
এছাড়া অনেকে বলতে পারেন কাজের প্রয়োজনে মানুষ ফোন বেশি ব্যবহার করতেই পারে,কিন্ত দিনের বেশিরভাগ সময়ে যদি তাকে ফোনালাপে ব্যস্ত পাওয়া যায় তাহলেও বিষয়টি সন্দেহজনক।
প্রসঙ্গত , কাজের প্রয়োজনে ফোনালাপ এবং কারোর সাথে প্রেমের ফোনালাপের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। এই পার্থক্য বোঝার মত ক্ষমতাও বিবাহিত প্রত্যেক মানুষের হওয়া উচিত। শুধুমাত্র ফোন নয়, যেকোনো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের প্রতি আসক্তির মাত্রার ওপরও নজর দেবেন।
২. যদি আপনার ও পরিবারকে আগের তুলনায় কম সময় দেন
আপনার সঙ্গী যদি আপনাকে আগের চেয়ে কম সময় দেওয়া শুরু করেন, তাহলে এটিও একটি লক্ষণ হিসেবে ধরে নেয়া যায়। খুব ভালো করে আপনার সঙ্গীর প্রতিদিনের কাজকর্ম লক্ষ্য করুন। যদি বুঝতে পারেন যে আগের চাইতে কম সময় দিচ্ছে ,তাহলে বোঝার চেষ্টা করুন সেই বাড়তি সময়টা তিনি কীভাবে ব্যয় করছেন। আপনি তাকে সময় চান দেখুন, তিনি যদি আপনাকে কোনো অজুহাত দেখিয়ে না বলে দেন তাহলে জানার চেষ্টা করুন অজুহাতটির সত্যতা কতোটুকু ।
সঙ্গী যদি পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে শুরু করে কোনো কারণ ছাড়াই , তাহলে ধরে নিতে পারেন তিনি পরকীয়ায় লিপ্ত। অবশ্য তিনি নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকলে সেটা আলাদা বিষয়। এই পার্থক্যটা আপনাকেই বুঝতে হবে। প্রয়োজনে একটু সময় নিয়ে পর্যবেক্ষণ করুন। এই স্পর্শকাতর বিষয়গুলিতে কোনো তাড়াহুড়ো করে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত নয় ।
৩.সঙ্গীটির মুখে নতুন কোন নাম
যদি নতুন কোন একটি নাম ঘন ঘন শুনতে পান, তবে এটাও পরকীয়ার একটা ইঙ্গিত। সঙ্গীর যে বন্ধুটির কথা আগে কখনো শোনেননি, এমন কারোর কথা ঘনঘন শুনলে তার মুখের ভাব লক্ষ্য করুন,জিজ্ঞেস করুন । যদি তিনি প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান, কিংবা তার মুখের অভিব্যক্তি বদলে যায় তবে বিষয়টি অবশ্যই চিন্তার।
৪.কোনো কারণ ছাড়াই রেগে যাওয়া
আরও একটি বিষয় আছে যা বিশেষ ভাবে লক্ষণীয়। তা হল আপনার সঙ্গীর রাগের মাত্রা । খেয়াল করে দেখুন, আগে যে সমস্ত বিষয়গুলো আপনার সঙ্গীর রাগের উদ্রেক করতো না সেসব বিষয়ে কি তিনি রেগে যাচ্ছেন কিনা ? অথবা কথায় কথায় আপনাদের দাম্পত্য জীবনকে অভিশাপ হিসেবে অভিহিত করছেন কিনা ? বিনা কারণে অযৌক্তিক রাগ করা, কিংবা সবসময় খিটখিটে মেজাজ পরকীয়ার অন্যতম লক্ষণ।
৫. যৌনসম্পর্কে উদাসীনতা
আপনার সঙ্গী যদি কোনো অসুস্থতা ব্যতীত আপনার সাথে যৌনসম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেন তাহলে আপনি এটি পরকীয়ার নিশ্চিত লক্ষন হিসেবে ধরতে পারেন। যিনি অন্যের সাথে সময় কাটিয়ে আপনার প্রতি উদাসীন, তার চালচলন মুখের অভিব্যক্তিই আপনাকে সব কথা জানিয়ে দেবে। আপনার সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপনে সঙ্গী যদি আগ্রহী না হন , অর্থাৎ তার চাহিদাটি পূরণ হচ্ছে অন্য কারোর মাধ্যমে। এছাড়াও অভ্যাসবশত যৌন সম্পর্ক করছেন কিনা,নাকি স্রেফ আপনাকে খুশি করতে, সেটিও লক্ষ্য করুন।
৬.প্রতিদিনের রুটিন খুঁটিয়ে জিজ্ঞেস করা
খেয়াল করে দেখুন আপনার সঙ্গীটি আপনার প্রতিদিনকার রুটিন সম্পর্কে হঠাৎ অতিরিক্ত নজর দিচ্ছেন কিনা। আপনি কটায় বাড়ি ফিরবেন কিংবা কোন কোন জায়গায় কখন যাবেন এই ধরনের প্রশ্ন করছেন কিনা। তাহলে নিশ্চিত থাকতে পারেন যে আপনার চোখ এড়িয়ে নিরাপদে পরকীয়া সম্পর্ক চালিয়ে যেতেই তার এত জিজ্ঞাসা।
৭. হঠাৎ নিজের সৌন্দর্য সম্পর্কে অতিরিক্ত সচেতন হয়ে ওঠা
আপনার সঙ্গী যদি হঠাৎ নিজের ত্বক, সাজগোজ, শারীরিক গঠন, পোশাক আশাকের দিকে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করতে শুরু করেন, তাহলে আপনি একে পরকীয়ার একটি লক্ষণ হিসেবে ধরে নিতে পারেন। তবে এখানে একটি বিষয়ে পরিষ্কার হওয়া দরকার যে,আপনার সঙ্গী আপনার জন্যই নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করছেন কিনা। কারন অনেক স্বামী বা স্ত্রীই আছেন যারা দাম্পত্য জীবনে পুনরায় রোমান্স ফিরিয়ে আনতে এই পন্থা বেছে নেন। কিন্তু আপনি এই দ্বিধাবোধের অবসান করতে পারেন কয়েকটি প্রশ্ন করে।
সেগুলো হলো , আপানার সঙ্গী কি আপনার পছন্দ অনুযায়ী নিজেকে উপস্থাপন করছেন? শুধুমাত্র আপনার জন্যই কি বিশেষ পোশাক ও সাজগোজ করেন? কেমন দেখাচ্ছে আমাকে,এই ধরনের প্রশ্ন আপনাকে করছে কিনা সেটাও লক্ষ্য করুন। এই প্রশ্নগুলোর উত্তর যদি ‘না’ হয়, সেক্ষেত্রে আপনি ধরে নিতে পারেন আপনার সঙ্গী পরকীয়ার সম্পর্কে প্রবল ভাবে জড়িত আছে।