চারিদিকে জল্পনা চলছিল,আর যেটা হবার ছিলো তাই হলো , ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে বিপ্লব দেবের পদত্যাগের খবর শিরোনামে উঠে আসে। আচমকা তাঁর এই পদত্যাগ ত্রিপুরাবাসী সহ সকল বিরোধী দলগুলিকেই হতবাক করে তোলে আর তার ঠিক পরমুহূর্তেই ত্রিপুরার নতুন মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করল বিজেপি । মুখ্যমন্ত্রীর মুখ হিসেবে উঠে এলেন ডাঃ মানিক সাহা। এবার আর একটি মাস্টারস্ট্রোক দিলেন অমিত শাহ। নতুন মুখ্যমন্ত্রীর পরিচয় কি?
উল্লেখ্য, বিপ্লব দেবের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ২০২০ সালে ত্রিপুরায় রাজ্য সভাপতির পদে নিযুক্ত হন এই মানিক সাহা। পেশায় দন্ত চিকিৎসক মানিক বাবু গত বছর রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হন। তবে তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ারের শুরু হয় কংগ্রেস দলে। ২০১৬ সালে পুরানো দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি।
বলে রাখা ভালো, রাজনীতিতে আসার আগে মানিক সাহা ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজে শিক্ষকতা করতেন। অতীতে তিনি ত্রিপুরা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পদেও নিযুক্ত হন আর এবার ত্রিপুরার মাটিতে এই জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তির হাতেই মুখ্যমন্ত্রীর পদ তুলে দিলো দল। সূত্রের খবর, খুব দ্রুত রাজ্যপালের কাছে দাবি পত্র পেশ করতে চলেছেন মানিকবাবু।
সামনেই ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনের ভোট আর তার কিছুদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বিপ্লব দেব। দীর্ঘ বেশ কয়েক বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী পদে বিরাজ করেন তিনি। বিপ্লব দেবের আচমকা এই ইস্তফার পিছনে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের তত্ত্বকেই তুলে ধরেছে বিরোধীরা। তাদের মতে, বিপ্লব দেবের বিরুদ্ধে দলের অন্দরেই বহু অভিযোগ ওঠে, যা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্তরেও তাঁর উপর থেকে বিশ্বাস ধীরে ধীরে উঠতে শুরু করে। এছাড়াও রাজ্যবাসীর মধ্যেও মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে ক্রমশ বিরোধ দেখা দিতে থাকে।
বিপ্লব দেব মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে অনেক বারই বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়েছেন তিনি । তাঁর নানা মন্তব্য নিয়ে বিভিন্ন সময় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। দলের অস্বস্তি বাড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদে তিনি থাকবেন কি না, তা ঠিক করতে গণভোট দরকার বলেও মন্তব্য করেছিলেন। এ কারণে বেজায় চটেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
প্রসঙ্গত রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আগামী বছর হতে চলা ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে বিপ্লব দেব কে মুখ করে লড়তে চাইছে না বিজেপি। সেই কারণেই সময় থাকতে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত। বিপ্লবের বিভিন্ন মন্তব্য রাজ্যে দলের সংগঠনেও প্রভাব ফেলছিল। মনে করা হচ্ছে, সেই সব কারণেই বিপ্লবকে সরিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নতুন কোনও ‘সর্বজনগ্রাহ্য’ মুখ নিয়ে আসতে চাইছে বিজেপি।