কোলকাতার যোগেশ চন্দ্র চৌধুরি ল কলেজে সরস্বতী পুজো ঘিরে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। অভিযোগ উঠেছে যে, কলেজের সরস্বতী পুজোয় বাধা দেয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে চারু মার্কেট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। কলেজের ছাত্রছাত্রীদের সরস্বতী পুজো করতে বাধা দেওয়া এবং ধর্ষণ-খুনের হুমকি দেওয়ার ঘটনায় ইতি মধ্যেই জোর চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
অভিযোগকারী পড়ুয়া বলেন, “এই সাব্বির আলির বাইরের গ্রুপ। এরা তৃণমূলের তোলাবাজ। আমাদের সরস্বতী পুজো করা বন্ধ করতে চায় এবং আমাদের মারধর ও ধর্ষণের হুমকি দেয়। ” অভিযোগকারী আরও এক পড়ুয়া বলেন, “পুজো করার অধিকার সবার আছে। তাহলে আমাদের বাধা দেয় কেন? আমাদের বলা হচ্ছে সরস্বতী পুজো করলে আনোয়ার শাহ রোড দিয়ে গেলে মেরে ফেলে দেবে।”
এই সাব্বির আলির এর আগেও একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। আদালতের নির্দেশে ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। তারপরেও সাব্বির ও তার দলবল লাগাতার তাণ্ডব চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযুক্তের ভয়ে কলেজে যেতে সাহস পাচ্ছেন না অধ্যক্ষ।
সেই মামলার প্রেক্ষিতেই এদিন হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত নির্দেশ দেন, ‘কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদার আধিকারিকের তত্ত্বাবধানে যোগেশচন্দ্র কলেজে হবে সরস্বতী পুজো। যোগেশ চন্দ্র চৌধুরী ডে ও ল’ কলেজের সরস্বতী পুজো করতে কলকাতা পুলিশের এক যুগ্ম কমিশনারের তত্ত্বাবধানে। সংশ্লিষ্ট যুগ্ম কমিশনার কে হবেন তা নির্ধারণ করবেন স্বয়ং কলকাতার পুলিশ। পূজো এবং বিসর্জন ঘিরে যাতে কোনো সমস্যা না হয় তার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যায় সশস্ত্র পুলিশকর্মী নিয়োগ করতে হবে পুজোর ভিডিওগ্রাফি করতে হবে কলেজ কর্তৃপক্ষ’।
এদিন হাইকোর্টে কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয় যে, কলেজের ভেতরে বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে তারা অসমর্থ। এরপর হাইকোর্টের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয় যে, বর্তমানে কলেজের ভেতরে থাকা বিতর্কিত প্যান্ডেল ভেঙে ফেলতে হবে।
উল্লেখ্য, দুটি কলেজের ছাত্ররা প্রতিবছর পৃথক দুটি স্থানে আলাদা পুজোর আয়োজন করে। এবছর এমন একটি প্যান্ডেল নির্মাণ করা হয়েছে যাতে আইন কলেজের ছাত্ররা ক্লাসে যেতে পারছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। বহিরাগতরা পুজোয় বাধা দিচ্ছে এই অভিযোগে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এই নিয়ে নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে সুকান্ত মজুমদার লেখেন, ‘বাংলাদেশে এতদিন ধরে উগ্র ইসলামপন্থী মৌলবাদীদের কাছ থেকে যে ধরনের হুমকি শোনা যাচ্ছিল, তা এখন আমাদের বাড়ির চারপাশ শোনা যাচ্ছে। রাস্তার নাম ‘আনোয়ার শাহ’ হওয়ায় এলাকায় সরস্বতী পূজার কোনো আয়োজন করা যাচ্ছে না! একটি ইসলামি মৌলবাদী দল দক্ষিণ কলকাতার নামী যোগেশ চন্দ্র চৌধুরি ল কলেজে প্রবেশ করে ফতোয়া জারি করে চলে গেছে।’
3 Comments
Pingback: ফের বাংলাদেশে হামলার মুখে হিন্দু ধর্ম! পুজোর আগের দিনই সরস্বতী মূর্তি ভাঙচুর ফরিদপুরে ! - প্রথম খ
Pingback: যোগেশচন্দ্র কলেজে সরস্বতী পুজো বিতর্কে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে ব্রাত্যকে কলেজে পাঠালেন মমতা ! - প
Pingback: দিকে দিকে পুলিশ পাহারায় সরস্বতী পুজো!পশ্চিমবঙ্গ যেন হয়ে উঠেছে দ্বিতীয় বাংলাদেশ! - প্রথম খবর