দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে সুপ্রিম কোর্টে উঠেছে মহার্ঘ ভাতা মামলা, যা রাজ্য সরকারের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারকে চার সপ্তাহের মধ্যে বকেয়া মহার্ঘ ভাতার ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এই আদেশে নিঃসন্দেহে রাজ্য সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে । এরই মধ্যে ডিএ ইস্যুতে রাজ্য সরকার তীব আক্রমণ করেছেন বিরোধী দলনেতা এবং বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দ অধিকারী !তিনি মমতা ব্যানার্জীকে অবিলম্বে পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন।

শুক্রবার নিজের এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) শুভেন্দু লিখেছেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কারোল এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহেতা রাজ্য সরকারকে যে নির্দেশ দিয়েছেন, সেই নির্দেশকে আমি স্বাগত জানাই। সুপ্রিম কোর্ট অবিলম্বে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে।’
শুভেন্দু লিখেছেন, ‘এটি রাজ্য সরকারি কর্মীদের একটি বড় জয়। তারা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছিলেন। বিজেপি অনুমোদিত কর্মচারী পরিষদও এই আইনি লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছে।’ ‘দমনমূলক মমতা সরকারের বিরুদ্ধে এই সাফল্যে’ তিনি সমস্ত সদস্য ও আধিকারিকদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শুভেন্দু লিখেছেন, ‘সিনিয়র অ্যাডভোকেট শ্রী পরমজিৎ সিং পাতওয়ালিয়া, আইনজীবী শ্রীমতি বাঁশুরি স্বরাজসহ অন্যান্য যাঁরা রাজ্য সরকারের কর্মীদের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’
এরপর মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি আক্রমণ করে বিজেপি নেতা লিখেছেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন ডিএ কোনও অধিকার নয়। আজ সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রমাণ করেছে যে ডিএ একটি অধিকার।’ শুভেন্দু আরও লিখেছেন, ‘আমি আশা করি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মীদের অধিকার ভঙ্গের দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করবেন।’ সরকারি কর্মীদের চাপের মধ্যে রেখেই বিরোধী দলনেতা রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করতে বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট করেননি।
- আরো পড়ুন — সুপ্রিমকোর্টে জোর থাপ্পড় খেলো রাজ্য সরকার! চার সপ্তাহের মধ্যে ২৫ শতাংশ ডিএ দেয়ার নির্দেশ !
শুক্রবার বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্র বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। শুনানির শুরুতেই বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘দীর্ঘ সময় ধরে বিষয়টি ঝুলে রয়েছে। এবার ৫০ শতাংশ ডিএ প্রদান করুন।’ আদালত পর্যবেক্ষণ করে বলেন যে, মামলার ভাগ্য পরবর্তীতে নির্ধারিত হবে।
যদিও তীব্র করে মমতা ব্যানার্জীর আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি করেন এটি একটি বিশাল অর্থের বিষয়। যদি এখনই বকেয়া মহার্ঘভাতার ৫০ শতাংশ প্রদান হয়, তবে তা রাজ্যের জন্য বিরাট সমস্যার সৃষ্টি করবে এবং রাজ্যের্থিক কাঠামো ভেঙেবে। সিংভি বলেন, মহার্ঘভাতা কোনও সাংবিধানিক অধিকার নয়। এই মুহূর্তে রাজ্যের পক্ষে বকেয়া মহার্ঘাতার ৫০ শতাংশ পরিশোধ করা কোনওভাবেই সম্ভব নয়।
রাজ্যের যুক্তির জবাবে আদালত বলে “ডিএ সরকারি কর্মীদের সাংবিধানিক অধিকার না হলেও দিনের পর দিন টাকা না দেওয়াটা যুক্তিযুক্ত নয়।” সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে, অবিলম্বে বকেয়ার ২৫ শতাংশ প্রদান করতে হবে। বিচারপতি কারোল রাজ্যকে বলেন এরা আপনাদের কর্মী, তাই কোনও অসুবিধার কারণ নেই। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ প্রদানে আদালত কঠোর নির্দেশ দিয়েছে।আগামী অগাস্ট মাসে এই মামলার চূড়ান্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।