রাজ্য বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘভাতা ৪ শতাংশ বৃদ্ধির ঘোষণা করা হয়েছে। গ্রামোন্নয়নের জন্যও প্রচুর বরাদ্দ করা। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃতীয় দফার সরকারের শেষ পূর্ণ বাজেটে কোনও দিশা দেখতে পাচ্ছেন না বিরোধী নেতারা। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কথায়, এটি একটি ‘দিশাহীন বাজেট’। এটিকে ‘ভোটমুখী বাজেট’ হিসেবেই ব্যাখ্যা করছেন।
বুধবার রাজ্যের পেশ করা বাজেটে নারী সুরক্ষার বিষয়ে কিছুই উল্লেখ নেই বলে জানান শুভেন্দু। পাশাপাশি এও মনে করিয়ে দেন, মহিলাদের জন্য সামাজিক প্রকল্প লক্ষ্মীর ভান্ডারের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়নি বাজেটে।মমতা ব্যানার্জী ভোটের আগে তুরুপের তাস খেলতে রেখে দিয়েছে। তুলনা টানতে ওড়িশা, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানার মতো বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলির কথা তুলে আনেন তিনি। এমনকি দিল্লিতেও বিজেপি মহিলাদের জন্য মাসে ২৫০০ টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা-ও স্মরণ করিয়ে দেন বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দুর দাবি, ২০২৬ সালে রাজ্যের পূর্ণাঙ্গ বাজেট বিজেপি সরকারই পেশ করবে।
রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের জন্য ৪ শতাংশ মহার্ঘভাতা বৃদ্ধির ঘোষণাকেও ‘বড় করে’ দেখতে চান না শুভেন্দু। বিজেপিার বক্তব্য, “কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের ডিএ-র বড় ব্যবধান। রাজ্য মাত্র৪ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধি করছে। কেন্দ্র জানুয়ারি মাসেই ৪ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধি করেছিল।” পাশাপাশি রাজ্যের বাজেটে নতুন বেতন কমিশন কোনও প্রস্তাব না থাকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। তাঁর কথায়, “দুর্মূল্যের বাজারে সরকারি কর্মচারীদের সাথে কার্যত প্রতারণা এবং বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। রাজ্যের ২ কোটি ১৫ লক্ষ বেকার শিক্ষিত যুবক-যতীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে বাজেটে। এই বাজেটের ছত্রে ছত্রে প্রমাণ মিলেছে মুখ্যমন্ত্রী বা সরকার অর্থনৈতিক পঙ্গু হয়ে গিয়েছে।”
বিজেপি বিধায়ক তথা অর্থনীতিবিদ ড: অশোক লাহিড়িও এই বাজেটকে একটি ‘ঘোষণার বাজেট’ বলে ব্যাখ্যা করছেন। তাঁর কথায়, “এই বাজেট মাকাল ফলও না। মাকাল ফল দেখতে ভাল হয়, ভিতরে ভাল হয় না। এই বাজেট দেখতেও ভাল না, ভিতরেও ভাল না। এই বাজেট আবার বুঝিয়ে দিল, তৃণমূল ঘোষণার সরকার।” তাঁর ব্যাখ্যায়, রাজ্য সরকার অনুদানের জন্য টাকা খরচ করছে। এর ফলে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে না।