অপারেশন সিঁদুরের পর এবং বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই প্রথমবার পশ্চিমবঙ্গে এলেন নরেন্দ্র মোদি। আলিপুরদুয়ারের জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তৃণমূল সরকারের দুর্নীতি এবং মালদা-মুর্শিদাবাদ সংক্রান্ত ইস্যুগুলি নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন। পাশাপাশি অপারেশন সিঁদুর নিয়ে গর্ব প্রকাশ করতে শোনা যায় প্রধানমন্ত্রীকে।দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন , অপারেশন সিঁদুর এখনও শেষ হয়নি।
এদিনের জনসভা থেকে ‘অপারেশন সিঁদুর ’ এর প্রসঙ্গ ওঠায় রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোচনা শুরু হয়েছে। আলিপুরদুয়ারে প্রধানমন্ত্রীর সভা থেকে উঠে এসেছে অপারেশন বেঙ্গল-এর আহ্বান। এ প্রসঙ্গে এবার মমতা কঠোর ভঙ্গিতে মোদিকে আক্রমণ করে তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
- আরও পড়ুন — ২২ এপ্রিলের পেঁহেলগামের হত্যার জবাব পাকিস্তানকে ২২ মিনিটে দিয়েছে ভারত, ২২ মে-তে বললেন নরেন্দ্র মোদী!
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, প্রত্যেক মহিলার নিজস্ব সম্মান রয়েছে। তাঁরা স্বামীর কাছ থেকে সিঁদুর গ্রহণ করেন কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এমনভাবে কথা বলছেন যেন তিনি সকলের স্বামী! তাহলে সবার আগে নিজের স্ত্রীকে সিঁদুর দিচ্ছেন না কেন? তিনি আরও বলেন, যখন সব রাজনৈতিক দল এবং বিজেপি বিরোধী শিবিরের প্রতিনিধিরা দেশের স্বার্থে বিদেশে গলা ফাটাচ্ছে , তখন প্রধানমন্ত্রী মোদি নির্বাচনী রাজনীতিতে ব্যস্ত।” এই ভাষাতেই মমতা মোদিকে আক্রমণ করেন।

যেভাবে মমতা এদিন প্রধানমন্ত্রীকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রধানমন্ত্রীকে এভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করার বিষয়টি নিয়ে এখন তুমুল আলোচনা চলছে।
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর এমন প্রতিক্রিয়ায় বিজেপি তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, মুখ্যমন্ত্রী যদি এই নিম্ন স্তরে আক্রমণ করেন, তাহলে দীপক ঘোষের বইটি ছাপিয়ে বিতরণ করা হবে। আমি ওনাকে সতর্ক করছি।
এই পরিস্থিতিতে বিজেপি নেতা কৌস্তুভ বাগচীর একটি ফেসবুক পোস্ট আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে। যেখানে তিনি তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক দীপক কুমার ঘোষের লেখা বই “The Goddesses That Failed”-এর সপ্তম অধ্যায় থেকে একটি চিঠির ছবি শেয়ার করে ক্যাপশনে লিখেছেন, প্রত্যেকটি ক্রিয়ার সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া রয়েছে। ওই গোপন চিঠিতে মমতা ব্যানার্জির প্রতি দীপক কুমার ঘোষের করা কিছু প্রশ্ন তুলে ধরা হয়েছে।
মূলত, ৩০ এপ্রিল ২০১২ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে প্রেরিত চিঠিতে দীপক কুমার ঘোষ তাঁর বৈবাহিক জীবন সম্পর্কে জানতে চান। একইসঙ্গে, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আলিপুর পুলিশ কোর্টের আইনজীবী রণজিৎ ঘোষের সঙ্গে বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন কিনা সেই প্রশ্ন করেন দীপক ঘোষ ।

রণজিৎ ঘোষ ও মমতা ব্যানার্জির বৈবাহিক জীবন সম্পর্কিত বিষয়ে দীপক কুমার ঘোষ ওই চিঠির মাধ্যমে আরও কিছু ব্যক্তিগত প্রশ্ন উত্থাপন করেন। চিঠিতে তিনি মমতার প্রতি সরাসরি জানতে চান, বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হওয়ার পর মমতা কখনও সন্তানসম্ভবা হয়েছিলেন কিনা। এমনকি, বন্ধু ও চিকিৎসকদের সাহায্যে কোনও ব্যক্তিগত ক্লিনিকে গর্ভপাত করিয়েছিলেন কিনা, সেই বিষয়েও প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে।
এদিকে, ওই চিঠির শেষ অংশে এই সংক্রান্ত সমস্ত বিতর্ক দূর করার লক্ষ্যে দীপক কুমার ঘোষ মমতার উদ্দেশ্যে দিল্লির AIIMS-এ “ভার্জিনিটি টেস্ট” করানোর দাবি জানান। এছাড়াও, ওই চিঠির শেষ অনুচ্ছেদে দীপক কুমার ঘোষ মমতার উদ্দেশ্যে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এই চিঠি প্রাপ্তির ১০ দিনের মধ্যে এই সংক্রান্ত প্রশ্নগুলির তিনি যেন দেন, যাতে এই চিঠি যদি কোনও দিন প্রকাশিত হয়, সেক্ষেত্রে মমতা ভিন্ন দাবি না করতে পারেন।