আরজি কর (R G Kar)খুন ও ধর্ষণের মামলায় সঞ্জয় রায়ের ফাঁসি চেয়ে রাজ্যের আবেদন খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্টের দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ। তবে সিবিআইয়ের আবেদন গ্রহণ করেছে আদালত। সিবিআই ও রাজ্য সরকার একসঙ্গে আরজি করের ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত সঞ্জয় রায়ের ফির দাবিতে হাইকোর্টে আবেদন করেছিল। সেই মামলাতেই শুক্রবার রায় ঘোষণা করল আদালত।
আরজি কর-কাণ্ডে শিয়ালদহ আদালত সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। চার্জশিটে সিবিআই তাঁকেই একমাত্র অভিযুক্ত হিসাবে উল্লেখ করে । আদালত সিবিআই সঞ্জয়ের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু শিয়ালদহ আদালত জানায়, এই ঘটনা ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ নয়। তাই বিচারক অনির্বাণ দাস সঞ্জয়কে মৃত্যুদণ্ড দেননি তাঁকে আমৃত্যু কারাবাসের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার হাইকোর্টে গিয়েছিল। পরে সিবিআইও উচ্চ আদালতে আবেদন জানায়। কিন্তু পাশাপাশি তারা রাজ্যের আবেদনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
শুক্রবার ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, সিবিআই আরজি কর-কাণ্ডের তদন্ত করছে। তাই তাদের আবেদনই এ ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য। রাজ্য সরকার যে আবেদনটি করেছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়। উভয়ের আবেদন এক হলেও, তাই রাজ্যের মামলা খারিজ করে দেওয়া হল।
রাজ্যের আবেদনের বিরোধিতা করে সিবিআইয়ের বক্তব্য ছিল যে, তারাও সঞ্জয়ের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছে। কিন্তু নির্যাতিতার পরিবার, তদন্তকারী সংস্থা কিংবা দোষী নিজে হাই কোর্টের দ্বারস্থ না হলে, রাজ্য কীভাবে এই আবেদন করতে পারে? উদাহস্বরূপ লালুপ্রসাদ যাদবের মামলার প্রসঙ্গও টেনে এনেছিলেন ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল (সিবিআই আইনজীবী) রাজদীপ মজুমদার। তিনি জানিয়েছিলেন যে, লালু প্রসাদের মামলার ক্ষেত্রেও রাজ্যের আবেদন গ্রহণযোগ্য হয়নি।।
আদালতে রাজ্যের পক্ষ থেকে পাল্টা যুক্তি ছিল যে তদন্ত এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা রাজ্য সরকারের বিষয়। আরজি কর কাণ্ডের তদন্ত প্রথমে রাজ্যের পুলিশ শুরু করেছিল এবং পরে তা সিবিআইকে হস্তান্তর করা হয়। সুতরাং, রাজ্যের আবেদন গ্রহণযোগ্য হওয়া উচিত।
হাই কোর্টে সিবিআই এবং রাজ্যের এই মামলায় ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে নির্যাতিতার পরিবার। তারা জানিয়েছে, তারা এই মামলায় সঞ্জয়ের ফাঁসি চায় না। শুরু থেকেই নির্যাতিত পরিবার দাবি করে আসছে, সঞ্জয়ের একার পক্ষে এই ঘটনাানো সম্ভব নয়, আরও কেউ এর সঙ্গে জড়িত। দোষীদের সকলের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নির্যাতিতার বাবা-মা। তাঁদের বক্তব্য, সঞ্জয়কে ফাঁসির শাস্তি দেওয়া হলে তাঁর সঙ্গে সঙ্গে যাবতীয় প্রমাণও লোপাট হয়ে যাবে। সেই কারণে রাজ্য এবং সিবিআইয়ের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা সঞ্জয়ের ফসির বিরোধিতা করেছেন। সুপ্রিম কোর্টের দারস্থও হয়েছে নির্যাতিতার পরিবার। তারা জানিয়েছে, তারা সিবিআইয়ের তদন্তে সন্তুষ্ট নয় এবং বিষয়গুলি আরও বিশদে তদন্ত করে প্রয়োজন।
1 Comment
Pingback: উত্তাল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়! এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই(SFI)