মগের মুল্লুকের রাজ্যে পরিণত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।এখানে চুরি করা একটি শৈল্পিক পেশায় পরিণত হয়েছে এবং এই পেশা নিয়ে কোনও কথা বলা যাবেনা। আজ সিবিআই নিয়োগ দূর্নীতির চার্জশিট প্রদান করেছে,তাতে দূর্নীতির রথী মহারথীদের সাথে নাম এসেছে তৃণমূলের ‘সেনাপতি’ তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আর তাতেই বেজায় চটে গেছেন তথাকথিত বাংলার “যুবরাজ”।কেনো প্রকাশ্যে আসলো তার নাম? নামপ্রকাশের কিছুক্ষনের মধ্যেই নিজের আইনজীবিকে দিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
সিবিআই ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ ভাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে! প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলার অন্যতম অভিযুক্ত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র (‘কালীঘাটের কাকু’)-এর বিরুদ্ধে দেওয়া চার্জশিটে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সঙ্গে একটি অডিও ক্লিপের সূত্রে তাদের চার্জশিটে ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়’ নামটি উল্লেখ করারের পর এমনই বিবৃতি দিয়েছেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেকের আইনজীবী সঞ্জয় বসু।

সিবিআইয়ের ওই চার্জশিটের ভিত্তিতে সুজয়কৃষ্ণ-সহ কয়েকজন কথোপকথনের একটি অডিয়ো ক্লিপের কথা জানিয়ে সিবিআই বলেছে , ওই অডিয়োয় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের নামের উল্লেখ শোনা গিয়েছে। পাশাপাশিই চার্জশিটে সিবিআইয়ের দাবি, অডিয়োয় জনৈক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামও শোনা গিয়েছে। অডিয়ো ক্লিপটির ‘সত্যতা’ যাচাই করার জন্য সেটি সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্সেস ল্যাবরেটরিতে পাঠিয়েছে সিবিআই। পাশাপাশি, সুজয়কৃষ্ণ এবং মামলার অপর দুই অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষ এবং শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠস্বরের নমুনা দিল্লিতে পাঠানো হয়েছে পরীক্ষার জন্য। যদিও সাক্ষীদের মধ্যে কয়েকজন ওই অডিয়োর সত্যতার কথা স্বীকার করেছেন বলে সিবিআই সূত্রের খবর।
- আরও পড়ুন–‘কালীঘাটের কাকু’র অডিয়োতে পার্থ, অভিষেক ও মানিক! নিয়োগে ১৫ কোটি টাকা দাবি অভিষেক ব্যানার্জীর !
কথায় বলে যা রটে ,তা কিছুটা হলেও ঘটে। ঘটনাচক্রে, ওই খবর প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অভিষেকের আইনজীবী সঞ্জয় বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, সিবিআই তাঁর মক্কেলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চক্রান্ত করছে। যা থেকে এই সম্ভাবনার অবকাশ তৈরি হচ্ছে যে, চার্জশিটে যে জনৈক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুধু নামটুকু লেখা হয়েছে, তিনি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এবং তিন বারের লোকসভা সাংসদ।
অভিষেকের আইনজীবীর দাবি, তাঁর মক্কেল ইডি এবং সিবিআইকে তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন। দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী প্রতিষ্ঠান যখনই তাঁকে তলব করেছে, তখনই তিনি উপস্থিত হয়েছেন এবং প্রয়োজনীয় নথিপত্র সরবরাহ করেছেন। কিন্তু তার পরেও সিবিআই ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে। অভিষেকের আইনজীবীর বিবৃতি অনুযায়ী, মামলার তদন্তকারী সংস্থা ইডি আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে কোনও চার্জশিট দাখিল করেনি। তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অপরাধের উপাদানও পাওয়া যায়নি। তার পরেও তৃতীয় অতিরিক্ত চার্জশিট দাখিল করা আমার মক্কেলকে হয়রানি করার উদ্দেশ্য ছাড়া আর কিছু নয়।
গ্রেফতারের পূর্বে ‘কালীঘাটের কাকু’ সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র একটি সংবাদ মাধ্যমে দরাজ গলায় বলেছিলো,অভিষেক ব্যানার্জী আমার সাহেব,আর আমার সাহেবকে “টাচ” করার ক্ষমতা কারও নেই । এবার সিবিআই শুধু নামটা প্রকাশ করেছে,তাতেই ‘কালীঘাটের কাকু’ র সাহেবের থরহরি কম্পন শুরু হয়ে গিয়েছে,যার ফল স্বরূপ তড়িঘড়ি আইনজীবীকে দিয়ে সিবিআই এর বিরুদ্ধে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে।কিন্তু তাতে কতটুকু রক্ষা পাবে তা নির্ভর করছে সিবিআই-ইডির পরবর্তী পদক্ষেপের ওপর এবং বাংলার মানুষ আদালতের দিকে চেয়ে আছে নিয়োগ দুর্নীতির সঠিক বিচারের অপেক্ষায়।