চাল থেকে আলাদা করা যায়নি কাঁকর। ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগের পুরো প্যানেল বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট । বলেছে, পুরো প্রক্রিয়ায় কারচুপি করা হয়েছে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ার কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। সেই সঙ্গে রাজ্যের ২৬ হাজার চাকরি বাতিল করে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জীব কুমারের বেঞ্চ জানিয়েছে, তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
আর তারপরই নেমে এসেছে হাহাকার। কেন মুষ্টিমেয় নজিরবিহীন দুর্নীতির ফল ভোগ করতে হবে হাজার হাজার মানুষ ও তাদের পরিবারকে? বাংলাজুড়ে এখন একটাই প্রশ্ন। এই ঘটনায় একযোগে বিজেপি ,সিপিএম এর সাথে মানুষ ছিঃ ছিঃ করছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীকে ।
২০২১ সালে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি মামলায় প্রথম সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। দায় ঠেলতে গিয়ে মমতা ব্যানার্জী নিশানা করেছেন প্রাক্তন বিচারপতি, অধুনা বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কেও। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘আরও একটি বিষয়, প্রথমে এই রায় দিয়েছিলেন একজন বিচারপতি। তিনি বিজেপির সাংসদ। সাম গাঙ্গুলি না ডাঙ্গুলি, আমি ঠিক জানি না আসল নামটা পরে জেনে নেব। আমি ওনাকে আক্রমণ করার জন্য বলছি না। আজ তারা কোন মুখে বড়বড় কথা বলে? তাদের দায়বদ্ধতা ছিল না। ‘ উত্তর দিতে দেরি করেননি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও। কড়া কথায় জবাব দিয়েছেন তাঁকে।, ‘এত বড় ধাক্কা তো উনি পাননি এর মধ্যে…ওই ভদ্রমহিলা আসলে চাকরি নিয়ে জোচ্চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে গেছেন।’
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন চাল থেকে কাঁকর এখনও আলাদা করা সম্ভব। তাঁর উপায় আছে। সেটা কী? প্রাক্তন বিচারতির কথায়, ‘সেগ্রিগেশন করা সম্ভব তো! আমি আজও এখানে দাঁড়িয়ে বলছি, সেগ্রিগেশন করা সম্ভব। আমরা ক্ষমতায় আসব, সেগ্রিগেশন করে দেখিয়ে দেব। উনি তো রেকর্ড লুকিয়ে ফেলতে পারবেন না। সে রেকর্ড হাইকোর্টের কাছে আছে। আমার বেঞ্চেই তো ছিল সেই রেকর্ডগুলো। আমার উপরে ওনার এত রাগ একটাই কারণে, ওনার জোচ্চুরি প্রথম ধরেছিলাম আমি।’ সুপ্রিম কোর্টের রায় সম্পর্কে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মত, ‘আমি আমার জয় হিসেবে দেখছি না। দুর্নীতির পরাজয় হিসেবে দেখছি। পশ্চিমবঙ্গে এবার দুর্নীতি করার আগে দুবার ভাববে।’
রাজনীতি চলছে। কিন্তু, এই মানুষগুলোর সংসার এখন কীভাবে চলবে? যারা যোগ্য, তাদের কী দোষ? হাহাকারের মধ্যে বারবার ফিরে আসছে সেই প্রশ্ন। তাঁদের উদ্দেশেই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানালেন, ‘দুশ্চিন্তা করবেন না। বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ করুন। বিজেপি আপনাদের জন্য নিশ্চয়ই কিছু একটা করবে।’