পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশ বোলান এলাকায় ট্রেনে হামলা চালিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ১৮২ জনকে জিম্মি করেছে। দাবি অনুযায়ী, জিম্মিদের মধ্যে সেনাসদস্যরাও রয়েছেন। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা এই অঞ্চল ছেড়ে না গেলে সব জিম্মিকে হত্যা হুমকি দিয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা।
সন্ত্রাসী হামলার শিকার ট্রেনটির নাম ‘জাফফার এক্সপ্রেস’। মঙ্গলবার, এটি বেলুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটা থেকে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের পেশওয়ার শহরে যাচ্ছিল। তখন ট্রেনটিতে হামলা চালানো হয়। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ট্রেনটিতে প্রায় ৫০০ যাত্রী ছিলেন এবং এটি এখন একটি সুড়ঙ্গের ভেতরে আটকে আছে। ট্রেনের চালক গুরুতর আহত হয়েছেন।
পাক রেল দফতরের আধিকারিক মহম্মদ কাশিফ জানিয়েছেন, নয়টি কোচবিশিষ্ট ট্রেনটিতে প্রায় ৫০০ যাত্রী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১০০ জনেরও বেশি পণবন্দি হয়েছেন। বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) র তরফেও ঘটনার দায় স্বীকার করে শতাধিক যাত্রীকে পণবন্দ করার কথা জানিয়ে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, ট্রেনের আরোহী অন্তত ছ’জন পাক সেনাকর্মী বালুচ বিদ্রোহীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন। গুলিতে জখম হয়েছেন ট্রেনের চালকও। ওই ট্রেনে বালুচিস্তানে কর্মরত সেনা এবং ফ্রন্টিয়ার কোর বাহিনীর সদস্যরা নিয়মিত যাতায়াত করেন। তাই সেটি বালুচ বিদ্রোহীদের নিশানা হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।

ট্রেনটিতে হামলা চালানো বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর নাম বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। বেলুচিস্তান প্রদেশ স্বাধীন চায় এবং এ নিয়ে দশকের পর দশক ধরে সরকারের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে আসছে। বিএলএর দাবি, সরকার বেলুচিস্তানের গ্যাস ও খনিজ সম্পদ অন্যায্যভাবে ভোগদখল করছে।
পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছেন, ট্রেন আটকে থাকা সুড়ঙ্গের কাছে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। সেখানে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে তাঁদের গুলি বিনিময় চলছে। ব্যাপক গোলাগুলির নিশ্চিত করেছেন বেলুচিস্তান সরকারের মুখপাত্র শহীদ রিন্দ। ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী দল পাঠানো হচ্ছে।

উদ্ধারকারী সেন আটকাতে রেললাইনের একাংশ উড়িয়ে দিয়েছেন বিদ্রোহী বালুচ যোদ্ধারা। বালুচিস্তান সরকারের মুখপাত্র শাহিদ রিন্দ বলেন, “কাচি বোলান জেলার পেহরো কুনরি এবং গাদালারের মাঝামাঝি স্থানে যাত্রিবাহী ট্রেনটি অপহরণ করা হয়।” এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে ছুড়তে সশস্ত্র বালুচ বিদ্রোহীরা ট্রেনের দখল নেন বলে তার অভিযোগ। ঝটিকা কমান্ডো হানা ঠেকাতে পাহাড়ঘেরা ওই রেলপথের ৮ নম্বর সুড়ঙ্গের ভিতরে অপহৃত ট্রেনটিকে নিয়ে যাওয়া। আশা করা হচ্ছে, ট্রেনে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বিস্ফোরকও বসিয়েছেন তারা। কাচ্চি বোলানের জেলার পুলিশসুপার ওই এলাকার অদূরে ৬৫ নম্বর জাতীয় সড়কেও বালুচ বিদ্রোহীরা হানা দিতে পারেন বলে আশঙ্কা রয়েছে। এলাকা ঘিরে রেখেছে নিরাপত্তাবাহিনী।